January 20, 2025, 1:35 pm
নোটিশঃ
আপনার আশেপাশের ঘটে যাওয়া খবর এবং আপনার ব্যবসার বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য যোগাযোগ করুন মানবাধিকার খবরে।

মিল্কভিটার গোচারণভূমি এখন খিড়া চাষীদের দখলে: সমবায়ীদের মাথা বেচে পকেট ভরছে অসাধু চক্র

Reporter Name

মোঃ সবুজ হোসেন রাজা সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়িতে ‘বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারি সমবায় ইউনিয়ন লিঃ(মিল্কভিটা)’র অনুকূলে থাকা গোচারণভূমি আবারও বেহাত হতে শুরু করেছে। অতি মুনাফালোভী ভূমিদস্যু একটি চক্র মিল্কভিটার অসাধু কর্মকর্তা দের ম্যানেজ করে গোচারণভূমি শশা চাষীদের কাছে উচ্চ মূল্যে ইজারা দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। চলতি বছরে বৃ-আঙ্গারু এলাকায় অন্তত দেড়শত বিঘা জমি শশা চাষীদের ইজারা দেওয়া হয়েছে।

এসমস্ত জমি সমবায়ীদের মধ্যে বন্টন করে কাঁচা ঘাস উৎপাদনের কথা থাকলেও প্রতি বিঘা জমি ১২ থেকে ১৬ হাজার টাকায় ইজারা দিয়ে দিগন্ত জুড়ে চাষ হচ্ছে শশা। মিল্কভিটার নিয়ম ভঙ্গ করে শশা আবাদ করে চাষীরা লাভবান হলেও গোচারণভূমি কমে যাওয়ায় ক্ষতির সম্মুখীন হবে ক্ষুদ্র খামারীরা।

সরেজমিনে বৃ-আঙ্গারু এলাকার গোচারণভূমিতে গেলে দেখা যায় দিগন্ত জুড়ে আবাদ হচ্ছে শশা। মাঠের পর মাঠ থেকে শতশত মানুষ একযোগে গাছ থেকে শশা তুলে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করছেন। জানতে চাইলে শশা চাষী পাবনা জেলার ফরিদপুর উপজেলার নতুনগ্রামের আব্দুল জলিল,

জাবেদ সরকার জানান, তারা বৃ-আঙ্গারু গ্রামের স্থানীয় একটি প্রাথমিক সমবায় সমিতির সভাপতি হাজি আব্দুল লতিফ এবং একটি সমিতির ম্যানেজার তাহেজের মাধ্যমে ১২-১৬ হাজার টাকার বিনিময়ে বাৎসরিক ইজারা নিয়ে শশা চাষ করছেন। জমির শ্রেণী পরিবর্তন করে মিল্কভিটার বিস্তীর্ণ এই গোচারণভূমিতে শশা চাষের নিয়ম আছে কিনা জিজ্ঞেস করলে তারা জানান, তারা টাকার বিনিময়ে ইজারা নিয়ে শশা চাষ করছেন। এছাড়া শশা চাষের ফলে জমির আগাছা পরিষ্কার হবে বলেও জানান।

আরেক শশা চাষী জাহাঙ্গীর আলম জানান, মিল্কভিটার আওতাধীন এখানকার অন্তত দেড়শত বিঘা জমিতে শশা চাষ হচ্ছে। সবাই মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ইজারা নিয়েই চাষ করছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত দক্ষিণ বাঙ্গালপাড়া প্রাথমিক দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি হাজি মোঃ লতিফের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, কোন শশা চাষীকে ইজারা দেওয়া হয়নি। আর ওখানে কোন প্রকার শশার চাষ হচ্ছে না।

এ বিষয়ে বৃ-আঙ্গারু সরকার পাড়া প্রাথমিক দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতি লিঃ এর ম্যানেজার তাহেজ মুঠোফোনে জানান, তার সমিতি মিল্কভিটা থেকে সামান্য পরিমাণ জমি পেলেও কারা শশা চাষীদের ইজারা দিয়েছেন তিনি তা জানেন না। তবে তিনি শুনেছেন সমিতির সভাপতি ৮-১০ হাজার টাকা বিঘাপ্রতি ইজারা দিয়েছেন।

জানতে চেয়ে বাঘাবাড়ি মিল্ক ভিটার উপ-মহাব্যবস্থাপক ডাঃ মোঃ ছাইদুল ইসলামের মুঠোফোনে (01321143677) যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যাস্ত থাকায় কথা বলতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন।

উল্লেখ্য, তৎকালিন পাবনা জেলার শাহজাদপুর উপজেলাধীন বুড়ি পোতাজিয়া, দখলবাড়ী, রামকান্তপুর, হাড়নি, রাউতবাড়ী, পশ্চিম খারুয়া, নাগডেমরা, বিলচান্দ, বৃ-আঙ্গারু ও রতনপুর এই মৌজাগুলোর আওতায় বিল এলাকার ১১৭৯দশমিক ৮৩ একর সি এস খতিয়ানভুক্ত খাসজমি রয়েছে।তৎকালিন জমিদার গগেন্দ্রনাথ ঠাকুর, সমেরেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও অবেন্দনাথ ঠাকুর এই জমিগুলোর দখলদার ছিলেন। জমিদার প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পর তৎকালিন পূর্ব পাকিস্তান সরকারের নামে এস এ খাস খতিয়ানে রেকর্ড হয়।

১৯৮২ সালে ওই জমির মধ্যে ১০৩০ একর খাস ভূমি গেজেট ভুক্ত করে গোচারণ ভূমি হিসেবে ব্যবহার করার জন্য মিল্কভি টার অনুকুলে সরকার নির্ধারিত মূল্যে ইজারা প্রদান করে। সমবায় মন্ত্রনালয়, উপজেলা প্রশাসন ও মিল্কভিটার প্রতিনিধি নিয়ে গঠিত কমিটি গোচরণ ভূমিগুলো মিল্কভিটার তালিকাভুক্ত প্রাথমিক দুগ্ধ উৎপাদনকারি সমবায় সমিতির নামে বরাদ্দ দেয়। এই গোচরণ ভূমিতে গবাদীপশু লালন পালন করে দুধের উৎপাদন বৃদ্ধি করে প্রতিষ্ঠানটি সমবায় ভিত্তিতে পরিচালিত হয়ে আসছে।#

তারিখ : ১৮.১২.২০২৪ খ্রি.



Our Like Page
Developed by: BD IT HOST