মো: সবুজ হোসেন রাজা, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় চলতি সরিষার মৌসুমে মধু সংগ্রহের কাজ পুরোদমে চলছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জেরিন আহমেদ জানিয়েছেন, এ বছর উপজেলায় ৯ জন মৌ-খামারী সরিষার ক্ষেতে পোষা মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহ করছেন। ৯টি মৌ-খামারে স্থাপন করা ৭৭৫টি মৌ-বাক্স থেকে এ পর্যন্ত ৩ হাজার কেজি মধু উৎপাদিত হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ মৌসুমে মধু উৎপাদন ২১ মেট্রিক টনে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, শাহজাদপুরের সরিষার মাঠগুলো যেন হলুদ ফুলের সমারোহে সাজানো। এই মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে পেশাদার মৌ-খামারীরা তাদের বাক্স থেকে পোষা মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত। সরিষার জমির পাশে মৌ-বাক্স রাখার ফলে মৌমাছিরা পরাগায়ন প্রক্রিয়ায় সহায়তা করছে, যা সরিষার ফলন বাড়াতে ভূমিকা রাখছে।
এ বছর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। এসব জমিতে সরিষার ফুল ফুটেছে প্রায় তিন সপ্তাহ আগে। সেই ফুল থেকেই মৌমাছিরা মধু সংগ্রহ করছে। মৌমাছিরা ফুল থেকে মুখভর্তি মধু সংগ্রহ করে বাক্সে ফেরত যায় এবং সেখানে জমা করে আবার নতুন করে সংগ্রহ শুরু করে। এ প্রক্রিয়া সরিষার জমিতে পরাগায়ন বাড়িয়ে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা তৈরি করছে।
দিনাজপুর ও রংপুর থেকে আসা মৌ-খামারী শাহ আলম ও ইঞ্জিনিয়ার হাবিবুল্লাহ জানান, তারা প্রতি বছরের মতো এবারও শাহজাদপুরে সরিষার মধু সংগ্রহ করতে এসেছেন। তাদের ৭০টি মৌ-বাক্স থেকে প্রতি সপ্তাহে গড়ে ২০০ থেকে ২৫০ কেজি মধু সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে। তারা এ কাজে লাভবান হচ্ছেন বলে জানান।
পাবনার সাঁথিয়া থেকে আসা মধু ব্যবসায়ী কবিরাজ আব্দুল মমিন জানান, শাহজাদপুর অঞ্চলে মৌ-বাক্সে উৎপাদিত মধুর গুণগত মান প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া মধুর সমান। তবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য মৌ-বাক্সে সংগৃহীত মধুই উত্তম। এর মান ভালো হওয়ায় সারাদেশে এর চাহিদা রয়েছে।
কৃষি কর্মকর্তার মতে, মৌমাছি দিয়ে মধু উৎপাদন যেমন লাভজ নক,তেমনি সরিষার পরাগায়ন বাড়িয়ে কৃষকদের জন্যও অতি রিক্ত আয় নিশ্চিত করছে। শাহজাদপুরের সরিষা ক্ষেত তাই শুধু মধু উৎপাদনের ক্ষেত্র নয়, কৃষি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য এক উজ্জ্বল উদাহরণ।