তখন ক্লাস ফাইভে পড়ি।পান্ডুলের আক্তারুল করিম হারুন ভাইয়ের নৌকা, মরহুম আঃরব সরদারের সাইকেল মার্কার উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচনে টিনের মাইকে স্লোগান দিতাম।যখন ৬ষ্ট শ্রেণীতে উলিপুর মহারাণী স্বর্ণময়ী স্কুলে পড়ি ছাত্রনেতা মোশাররফ হোসেন, মোখলেছুর রহমান ও মরহুম আব্দুল আজিজ ভাইদের স্নেহ -ভালোবাসায় সব সময় মিছিল মিটিংয়ে সম্পৃক্ত ছিলাম।
স্লোগান মাষ্টার নওশের আলম মঞ্জু ভাই আমাকেও স্লোগান দেয়া শিখিয়েছে।তখন মাঝে মধ্যে স্লোগানও দিতাম।এরশাদ বিরোধী দীর্ঘ আন্দোলন, লড়াই,সংগ্রামে ত্যাগী নেতাদের সাথে -পাশে ছিলাম।১৯৯২ সালে এসএসসি পাশের পর সুভাষ সাহা ভজন দাদা এসএসসি সংবর্ধনার আয়োজন করেন।সংবর্ধিতদের পক্ষে বক্তব্য রেখে তাক লাগিয়ে দেই।সেই বছর ছাত্রলীগের কমিটি হয়।
জামিনুর রশিদ স্বপন ভাই সভাপতি ও মরহুম সোহরাব আলী মোল্লা ভাই সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।সেই কমিটির আমি ১ নং সহঃ সম্পাদক নির্বাচিত হই।উলিপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজ শাখায় আব্দুল হাই ভাই আহবায়ক, আমি যুগ্ম আহবায়ক নির্বাচিত হই।তখন আমার স্লোগান মাষ্টার ও গুরু হিসেবে বড়ভাইয়ের দায়িত্ব পালন করেন বর্তমানে মালেয়েশিয়া প্রবাসী মন্জু সরদার ভাই।আমার আর কখনও বিশ্রাম নেয়া হয়নি।পরবর্তীতে ১৯৯৩ সালের ৩১ জানুয়ারী ত্রিমুখী রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয় কলেজে।
ছাত্রলীগ,ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্রদলের সংঘর্ষের এক পর্যায়ে ছাত্র ইউনিয়নের হাতে আমি কাচারি পাড়ায় মারাত্মক নির্যাতনের শিকার হয়ে মৃত্যুর মুখে পড়ি।২ ফেব্রুয়ারী ছাত্র ইউনিয়নের গোবিন্দ সাহা মারাত্মক নির্যাতনের শিকার হন।দুজনেই গুরুতর অসুস্থ হলে একই দিনে আমাদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।দুর্ভাগ্য ৬ ফেব্রুয়ারী গোবিন্দ সাহা মারা যান।
ছাত্রলীগের অসংখ্য ত্যাগী নেতা কর্মী উলিপুর ছাড়া হয়।দূর্দিনে ছাএলীগের হাল ধরে ছাএলীগ কে সু সংগঠিত করেন মিজানুর রহমান লিটন।ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে কাউন্সিলও করে দেন তিনি । হত্যা মামলার আসামি হন মরহুম সোহরাব আলী মোল্লা ভাই, এনামুল হক এনাম ভাই, এসআই বুলবুল ভাই,আহসান হাবিব মিন্টু ভাই,মিজানুর রহমান লিটন ভাই ও আব্দুল আলীম ভাই।
বড় ভাইদের ঋণ কখনো শোধ করতে পারবোনা আমার চিকিৎসা হয় ঢাকার হোসেন শহিদ সোহরোওয়ার্দী হাসপাতালে,পঙ্গু হাসপাতালে ও পিজি হাসপাতালে। সুস্থ হয়ে এলাকায় এসে রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হই।১৯৯৪ সালে ছাত্রলীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয় জননেতা আমাজাদ হোসেন তালুকদার মামার বাড়িতে।
সেই কাউন্সিলে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিজানুর রহমান লিটন ভাই,সাধারণ সম্পাদক সোহরাব আলী মোল্লা ভাই সহ সকল নেতৃবৃন্দ আমাকে সভাপতি পদে, বন্ধুবর মরহুম খোরশেদ আলম সাজুকে সাধারণ সম্পাদক ও বন্ধুবর মোতাহার হোসেন বাবলুকে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচিত করে।১৯৯৮ সালে আবারও আমি ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হই। সাধারণ সম্পাদক আসাদুল হক ভাই এবং পরবর্তীতে আহসান হাবিব মিন্টু ভাই সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ছাত্রলীগের সভাপতি পদে থাকাবস্থায় উলিপুর পৌর সভার ৪ নং ওয়ার্ডের কমিশনার নির্বাচিত হই এবং প্যানেল চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করি।তখন আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে জননেতা আলহাজ্ব আমজাদ হোসেন তালুকদার মামা,মরহুম সামসুল হক গাটু চাচা,মরহুম অধ্যক্ষ নাসিমা বানু আপা,সাবেক এমপি শাহানাজ সরদার ভাবী,সরকার মোহাম্মদ আলী ভাই সহ নাম জানা -অজানা অসংখ্য নেতৃবৃন্দের কাছে আমি চির কৃতজ্ঞ।
২০০০ সালের দিকে ছাত্রলীগ থেকে বিদায় নিয়ে আওয়ামী যুবলীগের সদস্য পদে অধিষ্ঠিত হই।সে সময়ে সভাপতি দুলাল মজুমদার দাদা ও সাধারণ সম্পাদক পদে রিয়াজুল ইসলাম সুজা ভাই আওয়ামী যুবলীগের দায়িত্ব পালন করেন।২০০১ সালে আমার অফিসে ভাংচুর করে লুটপাট চালায় বিএনপি সন্ত্রাসী বাহিনী।
২০০২ সালে উলিপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়ে কর্মকাণ্ড আজ অবদি পালন করছি।আজ পর্যন্ত দলীয় সুযোগ -সুবিধা পাইনি বরং ২০০৬ সালে দলীয় কার্যালয়ে অগ্নি সংযোগ করে তান্ডব চালার সময়ে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অগ্নি সংযোগ সহ লুটপাট করে সন্ত্রাসী বাহিনী।হামলা-মামলার শিকার অসংখ্য বার হয়েছি।এর কোন দিন প্রতিকার পাবো না।
আশাও করিনা।দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এটাই আমার তৃপ্তির প্রত্যাশা। ত্যাগী নেতা কর্মী ও জনগণের ভালোবাসা আমার প্রতি অবিরাম অটুট আছে,এই বিশ্বাস নিয়ে বেঁচে আছি। দলমত নির্বিশেষে বিপুল ভোটে আমাকে ২০১৯ সালের ১০ মার্চ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হই।সর্ব সাধারণ, দলীয় নেতা-কর্মীদের ভালোবাসা ও বিশ্বাসের কারণে উলিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের আগামী ২২ অক্টোবরের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিলে
আমি সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদক পদ প্রার্থী।প্রয়োজনে সংখ্যা গরিষ্ঠ কমেন্টস বিবেচনা করেই যে কোন একটি পদে প্রার্থী হবো,ইনশাআল্লাহ।জয়-পরাজয়ের ভয় করিনা।মেনে নেয়ার মানসিকতা আছেই।এ-তো আমার দলীয় নেতা-কর্মীর সাথে জয়-পরাজয়।তৃণমুলের ৫১৮ জন সম্মানিত কাউন্সিলর সিদ্ধান্ত নেবেন এবং বাছাই করবেন আগামীর নেতৃত্ব।আমি আপনাদের সুপরামর্শ, সমর্থন, ভালোবাসা ও দোয়া-আশির্বাদ কামনা করছি।
স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন,”জীবনে ঝুঁকি নাও,জিতলে তুমি নেতৃত্ব দেবে,আর না জিতলে তুমি পরবর্তী কাউকে পথ দেখাবে”।
জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে রাজনীতি শুরু করেছি।মৃত্যুর পুর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত জয় বাংলা স্লোগান দিয়েই যাবো।
এটাই আমার জীবনের সংক্ষিপ্ত বাস্তব চিত্র,কিছু কথা বাদ পড়তে পারে সংশ্লিষ্টদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।প্রয়োজনে সংশোধন করে নেবো।উলিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল ২০২২ সফল হউক।জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, জয়তু শেখ হাসিনা।
মোঃ আবু সাঈদ সরকার
সাধারণ সম্পাদক
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
উলিপুর পৌর শাখা।
সুনির্দিষ্ট পদের কথা উল্লেখ করে পরামর্শ দিন, আমি চিরকৃতজ্ঞ থাকবো।