গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় পাকুড়িয়া শরীফ দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ নিয়ে চলছে তেলেস মাতি কারবার।তেলেসমাতির যাদুকর প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক শরীর চর্চা বিভাগের বোরহান উদ্দিন। অত্র প্রতিষ্ঠা নে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার পর তিনিও উক্ত আবেদন করেছেন তবে উক্ত পদে আবেদন করার যোগ্যতা তার নেই বলে জানান প্রতিষ্ঠান টির ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও শিক্ষকেরা।
তারা বলেন,যোগ্যতা না থাকার পরও তিনি আবেদন করে ছেন তবুও তার আবেদন বাতিল করা হয়নি।পাকুড়িয়া শরীফ দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয়ে বোরহান উদ্দিন নিয়োগ প্রাপ্ত হয় ২০১১ সালে তবে তিনি টাইম স্কেল নেয়ার জন্য ২০০৩ সালের ভূয়া নিয়োগ তৈরি করে আবেদন করেন। শুধু তাই নয় ২০১১ সালের আগ পর্যন্ত তিনি নোহালী কুতুবিয়া দাখিল মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলো আর সেখান থেকে এমপিও তুলতো।
একই সাথে দুই প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা উত্তোলন করতেন তিনি। যার কারণে উপ-পরিচালকের কার্যালয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অফিস,রংপুর থেকে গত ১৮ আগষ্ট ২০২১ ইং অনিয়মের মাধ্যমে উত্তোলিত অর্থ ফেরত প্রদান প্রসঙ্গে নোটিশ প্রেরণ করা হয়। তা থেকে জানা যায় ২০ এপ্রিল ২০০৩ থেকে এপ্রিল ২০১১ পর্যন্ত দুই প্রতিষ্ঠান হতে অবৈধ বেতন গ্রহণ করেছেন। পাকুড়িয়া শরীফ দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক,সহকারী শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যের সাথে কথা বলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। কমিটির সদস্য মাকছুদার রহমান বলেন,আমাদের প্রতিষ্ঠানে সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের সার্কুলার দেয়া হয়। আমরা চেয়েছিলাম সরকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেবো বাহির থেকে যাতে করে স্কুলের মান ভালো করা যায়।কিন্তু বোরহান উদ্দিন চায় নিজে নিয়োগ পেতে আর তাই তিনি করছে এসব কাজ বোরহান উদ্দিন স্যারের সাথে সাক্ষাতে যোগাযোগ করতে চাইলে তিনি আসেন না।
পরবর্তীতে তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হলে তিনি নিয়োগের বিষয়ে বলেন,আমি ২০০৩ এ নিয়োগ পেয়েছি শারীর চর্চা শিক্ষক হিসেবে। ২০০৩ এ নিয়োগ পেয়ে পুন রায় ২০১১ সালে আবেদন করে নিয়োগ পাওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন,২০১১ সালের নিয়োগ আটকানোর জন্য আবেদন করেছি।
তবে অবাক করা বিষয় হলো তিনি দাবি করেন শরীর চর্চা শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ২০০৩ সালে কিন্তু ২০১১ সালে তার নিজের হাতে লেখা আবেদনে তিনি বিপিএড সার্টিফিকেট জমা করেন ২০০৯ সালের এবং সে সময় তার এনটিআরসিএ কর্তৃক নিবন্ধন ও ছিলো না। কথা বলা হয় ২০০৩ সালে দায়িত্বে থাকা প্রধান শিক্ষক আফতা ব উদ্দিনের সাথে। তিনি বলেন,২০০৫ সাল পর্যন্ত আমি প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে ছিলাম। বোরহান উদ্দিন নামে কাউকে আমি নিয়োগ দেইনি আর চিনিও না। ২০০৩ সালে বোরহান উদ্দিনের নিয়োগ পত্রে তার সীল-স্বাক্ষর থাকার কথা জানালে তিনি বলেন,আমার সীল-স্বাক্ষর তো দূরে থাক, আমি নিয়োগই দেই নাই। হয়তো আমার স্বাক্ষর নকল করেছে। এ বিষয়ে কথা বলা হয় ২০১১ সালে তাকে নিয়োগ দেয়া ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরুন্নবী আনসারীর সাথে তিনি বলেন,আমি ২০১১ সালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সহ তিন জনকে নিয়োগ দেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছু ক এক শিক্ষক বলেন,নিয়োগ পাওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন মারফতে টাইম স্কেল পাওয়ার জন্য বোরহান উদ্দিন সীল-স্বাক্ষর নকল করে ২০০৩ সালে নিয়োগ দেখিয়েছেন হয়তো।
২০০৩ সালে বোরহান উদ্দিনের নিয়োগ নিয়ে আরো ভালো করে বিষয়টি জানার জন্য কথা বলা হয় বোরহান উদ্দিনের পূর্বে কর্মরত প্রতিষ্ঠান নোহালী কুতুবিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার আব্দুর রউফ এর সাথে। তিনি বলেন, বোরহান উদ্দিন সম্ভবত ২০-০৪-১৯৯৪ সালে যোগদান করেন ও ০১-০৬- ১৯৯৫ থেকে তার এমপিও হয়। তখন থেকে তিনি ২০১০ পর্যন্ত তিনি কর্মরত ছিলো। পরবর্তীতে ২০১১ সালের দিকে পাকুরিয়া শরীফ দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয়ে যোগদান করেন।
এ বিষয়ে কথা বলা হয় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহনাজ পারভীন এর সাথে তিনি বলেন,বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ তামা ন্নার বলেন,আমি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি বিষয়টি খতিয়ে দেখবো সত্যতা পাওয়া গেলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কে জানিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।