——————————————–
সৈয়দ মইনুল হোসেন:
আজ ঐতিহাসিক ৩রা নভেম্বর, জাতীয় জেল হত্যা দিবস। জাতির ললাটের এক কলংকময় দিন। এই দিনে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর,যাদেরকে বাংলাদেশের চার স্তম্ভ হিসাবে বিবেচনা করা হয়,তাদেরকে জেলখানার ভিতর নির্মমভাবে হত্যা করে কিছু ক্ষমতালোভী মানুষরূপী শয়তান। এই বীর জাতীয় চার নেতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির ললাটে এঁকে দিয়েছে এমন এক স্মৃতিচিহ্ন যার বিষে নীল হয়ে আজো অঝোরে কাঁদে বাঙালি জাতি। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন ঘটনা বিরল।রাষ্ট্রীয় হেফাজতে এই চার নেতাকে হত্যা করা হয় আজ থেকে ৪৮ বছর আগে ১৯৭৫ সালের এই দিনে। এমন মর্মান্তিক, হৃদয়বিদারক ঘটনায় আজো তাদের পরিবার শিহরিত হয়ে উঠে।
জাতীয় বেইমান হিসাবে পরিচিত খন্দকার মোশতাক তার ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক জিঘাংসা পূরণের উদ্দেশ্যে এই জঘন্যতম হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। মৃত্যু পর্যন্ত এই বেইমান জাতির কাছে তার কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চায়নি। ফলে বংশপরম্পরায় এই পরিবারের কোন সদস্য জাতির সামনে মাথা উঁচু করে কথা বলার সাহস হারিয়ে ফেলেছে। শহীদ জাতীয় চার নেতার একজন, বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ,বাংলার বুলবুল খ্যাত শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম।বলা যায় তাঁর নেতৃত্বেই বাংলাদেশের ভাগ্যাকাশে প্রথম স্বাধীনতার সূর্য উদিত হয়েছিল। কিশোরগঞ্জের কৃতি সন্তান এই মহান ব্যাক্তিত্ব যিনি তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় স্বাধীনতার সূর্যকে ছিনিয়ে আনার জন্য জীবন বাজি রেখে বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছিলে ন।কিশোরগঞ্জবাসির গর্বের ধন এই বুলবুলসহ জাতীয় চার নেতাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে বাংলাদেশ।
বিভিন্ন আলোচনা অনুষ্ঠান ও দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে কিশোরগঞ্জবাসি তাদের ঘরের সোনার ছেলেকে আজ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে।তাঁর এক সুযোগ্য সন্তান বাংলাদে শ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম মৃত্যুর আগে পর্যন্ত জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে বাবার আদর্শকে বুকে ধারণ করে জাতিকে নিয়ে গেছেন এক অনন্য উচ্চতায়। তারই ধারাবাহিকতায় শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের আরেক কৃতি সন্তান ডাক্তার সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি ( এমপি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত সহযোগী হয়ে তারই নির্দেশে কিশোরগঞ্জবাসির উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, কিছু বেইমান,কুলাঙ্গারের কারণে দেশ যেমন হারিয়েছে এক মহান নেতাকে, আমি হারিয়েছি আমার মা থার তাজ,আমার স্নেহপরায়ন বাবাকে। কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এডঃ জিল্লুর রহমান ঢাকার ডাককে জানান, আগামী একশ বছরে এই জাতি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের মত আর কোন নেতা পাবে না। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে লালন করা চির অম্লান এই অকুতোভয় নেতা মৃত্যুর মধ্য দিয়ে প্রমাণ করে গেছেন যে তিনি চিরস্মরনীয়।তার জন্মভূমি কিশোরগঞ্জের যশোদলের সাধারণ মানুষ মনে করেন, জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচার মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকাকালে না হওয়া খুবই লজ্জাজনক।এই কলঙ্কের কিছুটা ঋণ শোধ করতে তার পৈত্রিক বাড়িটিকে জাতীয় জাদুঘরের তত্ত্বাবধানে নিয়ে ঐতিহাসিক মূল দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।