নূর মোহাম্মদঃ
লক্ষ্মীপুরে চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগ নেতা এম সজিব হত্যা মামলার প্রধান আসামি কাজী মামুনুর রশিদ বাবলুর বিরুদ্ধে বাদীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে উঠেছে। এঘটনায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।
রোববার (২৩ জুন) দুপুরে উপজেলায় লক্ষ্মীপুর-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কে ছাত্রলীগের ব্যানারে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করা হয়। এতে নিহত সজিবের পরিবারের সদস্যসহ দুই শতাধিক দলীয় নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহত সজিবের মা ও মামলার বাদী বুলি বেগম। একপর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন।
বাদীকে হুমকির ঘটনায় বাবলুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ও হত্যা মামলার সব আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন নেতাকর্মীরা।
চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এম মাসুদুর রহমান মাসুদের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য দেন- চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন, চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগে সহ-সভাপতি ছাবির আহমেদ, চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন লিটন, সাধারণ সম্পাদক কাজী সোলায়মান, চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক সাহাব উদ্দিন, যুগ্ম-আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক রিংকু ও চন্দ্রগঞ্জ থানা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
মামলার বাদী বুলি বেগম বলেন, বাবলু আমাকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন। তিনি আমাকে মারধর ও আমার ঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। টাকার লোভও দেখিয়েছেন। কিন্তু আমি হত্যাকারীদের সঙ্গে কোনো আপস করবো না। বাবলুসহ হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।
চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছাবির আহমেদ বলেন, মামলার প্রধান আসামি বাবলু একজন ডাকাত। জামিনে এসে তিনি আমাদের কয়েকজনকে হুমকি দিয়েছেন। আমরা তার হুমকিকে ভয় পাই না। আমরা সজিব হত্যার বিচার চাই। হত্যা মামলার সব আসামিকে গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে মামলায় প্রধান অভিযুক্ত কাজী মামুনুর রশিদ বাবলু তার ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, আমি হাইকোর্ট থেকে অন্তবর্তীকালীন জামিন পেয়েছি। এখনও চন্দ্রগঞ্জে যাইনি। কিন্তু কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্র এখনও থামেনি। সজিব হত্যা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য সজিবের মাকে হুমকি দেওয়ার কথা বলে আমাকে উদ্দেশ্য করে মানববন্ধন করেছে। হুমকি দেওয়ার বিষয়টি মিথ্যা ও প্রপাগান্ডা
প্রসঙ্গত, গত ১২ এপ্রিল রাতে চন্দ্রগঞ্জ থানাধীন পাঁচপাড়া গ্রামের যৈদের পুকুরপাড় এলাকায় ছাত্রলীগ কর্মী সজিব, সাইফুল পাটোয়ারী, মো. রাফি ও সাইফুল ইসলাম জয়ের ওপর অতর্কিত হামলা ও গুলি চালানো হয়। পরে ১৫ এপ্রিল রাতে সজিবের মা বুলি বেগম বাদী হয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কাজী মামুনুর রশিদ বাবলু ও সদস্য সচিব তাজুল ইসলাম তাজু ভুঁইয়াসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছে। এতে ২০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। ১৬ এপ্রিল রাতে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সজিব মারা যান। হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে কাজী বাবলু ও তাজুল ইসলামকে স্বেচ্ছাসেবক লীগের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।