প্রথম বাংলা – ২০০৩ সালে সহকারী প্রকৌশলী হিসাবে বিআইডব্লিউটিএ যোগদান করেন মো: ছাইদুর রহমান। মাত্র ১২ বছর চাকুরীকালে নির্বাহী প্রকৌশলী থেকে তত্ত্বাব ধায়ক প্রকৌশলী এরপর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী পদে পদন্নোতি পান। বর্তমানে পরিচালক আইটি সেল অতি: দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি ধারাবাহিক ভাবে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার ৪ টি ড্রেজিং প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক তিনি। ২৪ টি নৌপথ ড্রেজিং কাজে প্রায় ৭ শত কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগে উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
প্রকৌশলী মোঃ ছাইদুর রহমান কুড়িগ্রাম জেলার ত্রিমোহনী থানার মুক্তারামপুর (ত্রিমোহনী) গ্রামের মৃত আনিসুর রহমানের পুত্র। ছাত্র জীবনে অন্যের বাড়িতে লজিং মাষ্টার থেকে যিনি লেখাপড়া করেছেন। চাকুরী জীবনের মাত্র কয়েক বছরে সেই হতদরিদ্র মো: ছাইদুর রহমানের আলা দিনের চেরাগ পাওয়ার মত ঘটনা ঘটেছে।দুদক সুত্রে জানাগেছে,অতি: প্রধান প্রকৌশলী ড্রেজিং মো: ছাইদুর রহমান, মোঃ দিদার এ আলম, নির্বাহী প্রকৌশলী ড্রেজিং, মোঃ মাহফুজুর রহমান,সহকারী প্রকৌশলী,ড্রেজিং,মোঃ নজরুল ইসলাম,উপ সহকারী প্রকৌশলী,ড্রেজিং গনের নামে ময়মনসিংহ জেলা সমন্বিত দুর্নীতি দমন কার্যালয়ে উপ পরিচালক মোঃ আবুল হোসেন এর অধীনে দুর্নীতি অনুসন্ধান ও তদন্ত চলছে।
একাধিক বিশ্বসস্থ সূত্রে জানা যায়, বিপুল অংকের টাকা লেনদেনের মাধ্যমে প্রকৌশলী মো: ছাইদুর রহমান এই অভিযোগ হতে অব্যাহতি পাওয়ার জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে ন। বিএনপি-জামায়াত ঘরাণার এই সকল কর্মকর্তা বিআই ডব্লিউটিএর ড্রেজিং বিভাগের বিভিন্ন প্রকল্প হতে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করে আওয়ামীলীগ সরকারের ভাব মুর্তি চরমভাবে ক্ষুন্ন করছেন।
এ প্রকল্প ছাড়াও প্রকৌশলী মো: ছাইদুর রহমানের নামে মাদারীপুর- চরমুগুরিয়া-টেকেরহাট-গোপালগঞ্জ নৌপথ খনন শীর্ষক ড্রেজিং প্রকল্প, নাটোরের আত্রাই ড্রেজিং প্রকল্প, এবং অভ্যান্তরীন নৌপথের ৫৩ টি রুটে ক্যাপিটাল ড্রেজিং (১ম পর্য্যায়ঃ ২৪ টি নৌ পথ) ২য় সংশোধিতশীর্ষক প্রকল্প, এবং ১২টি নৌ পথ খনন প্রকল্পের টাকা আত্বসাত সহ অবৈধ সম্পদ অর্জনের জন্য স্ত্রী শামীমা আক্তার সহ তার নামে তদন্ত চলছে। প্রতিটি তদন্তেই এই মহা দুর্নীতিবা জ প্রকৌশলী মো:ছাইদুর রহমান অদৃশ্য ক্ষমতা এবং অবৈধ টাকার জোরে পার পেয়ে যাচ্ছেন।
যে পরিমাণ সম্পদ আছে তার:দুর্নীতির এই টাকা দিয়ে প্রকৌশলী মো: ছাইদুর রহমান ঢাকায় বনশ্রী,রামপুরা, সিদ্ধেশ^রী,শান্তি নগর,বসুন্ধরা,মালিবাগ এলাকায় বিলাস বহুল ফ্লাট ও প্লট ক্রয় করেছেন। তার স্ত্রী ও নিজ নামে, মানামা এমডব্লিউ হাইটস ২৫/২ খিলগাও,ঢাকা ঠিকানায় মানামা ডেভেলপার কোম্পানি হতে ক্রয়কৃত ৬ হাজার বর্গফুটের বিলাস বহুল ফ্ল্যাট রয়েছে। মৌজা বরপা রুপ গঞ্জ ঢাকা এলাকায় ক্রয়কৃত জমি ৪৫ শতাংশ। নামে বেনা মে ব্যাংক,বীমা,লীজিং কোম্পানিতে রয়েছে শতকোটি টাকা। এছাড়াও কুড়িগ্রাম, রাজিবপুর এলাকায় নামে বেনামে ক্রয় করেছেন শতশত একর জমি। মোঃ সিরাজুল ইসলাম ভূইয়া উপ পরাচালক প্রশাসন বিআইডব্লিউটিএর এর সাথে রয়েছে প্রকৌশলী মো: ছাইদুর রহমানের রিয়েল এষ্টেটের শতকোটি টাকার ব্যবসা।
এ শতশত কোটি টাকার উৎস কোথায়? আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী কর্মকান্ডে প্রকৌশলী মো: ছাইদুর রহমান বিএনপি -জামায়াত সংগঠনকে বিপুল পরিমান টাকা যোগা ন দিচ্ছেন মর্মে গুঞ্জন আছে। তার চাকুরী জীবনের স্বল্প সময়ে তিনি একের পর একটা বড় বড় ড্রেজিং প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হয়েছেন। বর্তমানেও তা অব্যাহত রয়ে ছে। তিনি দুর্নীতিতে বিশেষভাবে পারদর্শী,তাই নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের একটি সংঘবদ্ধ চক্র অসৎ উদ্দেশ্য প্রকৌশলী মো: ছাইদুর রহমানকে প্রকল্প পরিচালক পদে নিয়োগ দেন। প্রকৌশলী মো: ছাইদুর রহমান নিজ হাতে ২০১৬ সালে বলাকা জুয়েলার্স ১৩/৪ চাঁদনী চক মার্কেট ঢাকা ভাউচার নং ০১৪,তারিখঃ ৭/৫/২০১৬, টাকা=১২,৩ ৮,৫ ৬৬/ বলাকা জুয়েলার্স, ১৩/৪,চাঁদনী চক মার্কেট ঢাকা, ভাউচার নং ০২৫ তারিখঃ ২৫/৫/২০১৬ টাকা= ১৪,৮৭,৭ ০৪/এবং বলাকা জুয়েলার্স,১৩/৪, চাঁদনী চক ঢাকা ,ভাউচা র নং ০৩৪,তারিখঃ ১৫/৬/২০১৬ টাকা= ৯,৭৭,৫৯৫/ স্বর্ণ বিক্রয়ের ভূয়া বিল ভাউচার তৈয়ারী করে ২০১৬-২ ০১৭ কর বর্ষে টিন নং-৬১৯৪৬১৫৭১২৬৩ (বৈতনিক) কর অঞ্চল-০২ ঢাকা নথিতে প্রায় এক কোটি টাকা দেখিয়ে দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত কালো টাকা সাদা করেছেন। অথচ ভূয়া ভাউচারের এই স্বর্র্ণের দোকানের কোন সন্ধান এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। (তদন্ত ও প্রমা নের জন্য অভিযোগপত্র এবং স্বর্ণ বিক্রয়ের ভূয়া বিল ভাউ চারের কিছু কপি আমাদের সংগ্রহে রয়েছে)।এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে স্বারক
নং-০০.০১.০০০০.৫০১.০১.০৪০.২০/১৯২৮১/১(২) তারিখঃ ১৬/০৯/২০২০ ইং উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন আহমেদ অনুসন্ধানকারী তদন্ত কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশন,প্রধান কর্যালয়-১নং সেগুন বাগিচা ঢাকায় তদন্ত চলছে প্রায় তিন বছর যাবত। মাদারীপুর -চরমুগুরিয়া -টেকেরহাট -গোপালগঞ্জ প্রকল্পে টাকা আত্বসাতের জন্য ২০১০-২০১১ হতে ২০১৩-২০১৪ অর্থ বছরে ড্রেজিং কাজে অনিয়মের জন্য স্বারক নং দুদক/অনুঃ ও তদন্ত-১/অনুঃ ২৩৮/ঢাকা/২১৪/২২৬৪৩/১(৭) দীর্ঘদিন যাবত অনুসন্ধান চলছে।
এছাড়াও ফরিদপুর জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনে তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। সীমাহীন দুর্নীতি এবং অভিনব কায়দায় বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য তার বিরুদ্ধে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের স্বারক নং -১৮.০১৪ .০২৭.০০.০০.০০২.২০১০.৭৭৫ তারিখঃ ২৪/১১/২০১৫ এবং নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের টিএ শাখার স্বারক নং-১৮. ০১৪.০২৭.০০০০.০০২.২০১০/৪২৭ তারিখ ৭/৬ /২০১৬ অভিযোগ গৃহিত হয়।নিয়মকে অনিয়মে পরিনত করা তার প্রধান কাজ। পিপিআর বিধি লংঘন করে ঙঞগ পদ্ধতিকে উচগ পদ্ধতিতে রুপান্তর করে প্রতিটি ড্রেজিং কাজ তার পছন্দের নিদিষ্ট ঠিকাদারকে পাইয়ে দেয়ার জন্য প্রকৌশলী মো: ছাইদুর রহমানকে দিতে হয় ১০℅ টাকা। এছাড়াও প্রতিটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বিল নিতে তার চাহিদা অনুযায়ী ৫℅ টাকা দিতে হয়। না দিলে ঠিকাদারকে নানা ভাবে হয়রানি করেন। ইজিপি টেন্ডারের নামে তিনি দর এবং আইটেমে টেম্পারিং করার পাশাপাশি তার পছন্দের বিএনপি জামায়াত পন্থি ড্রেজিং প্রতিষ্ঠান যেমন, ওটিবিএ ল ড্রেজিং প্রতিষ্ঠান,নবারুণ ড্রেজিং প্রতিষ্ঠান,এশিয়ান ড্রেজিং প্রতিষ্ঠানকে পূর্বেই টেন্ডারের রেট জানিয়ে তাদের কাজ পাইয়ে দিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নেন।
এছাড়া বদলী, নিয়োগ বানিজ্য তার অন্যতম নেশা বিআইড ব্লিউটিএর বার্ষিক বনভোজন, জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন উদযাপন, ২১শে ফেব্রুয়ারি, ৭ই মার্চ,২৬শে মার্চ, করোনাকালিন সময়ে মালামাল ক্রয় সহ জাতীয় প্রতিটি অনুষ্ঠানে প্রকৌশলী ছাইদুর রহমান আহবায়ক ও পান্না বিশ্বাস সদস্য সচিব করে বিআইডব্লি উটিএর ফান্ডের টাকা ভুয়া বিল ভাউচারে আত্মসাত করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন ড্রেজিং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নিকট হতে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজি করার অভিযোগ আছে ।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী,সরকারের জৈষ্ঠ্য নেতা, আমলা, তার এলাকার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন এমপিদের নাম ব্যবহার করে চতুর প্রকৌশলী মো: ছাইদুর রহমান গড়ে তুলেছেন একটি শক্তিশালী সিন্ডিকে ট। প্রকৌশলী মো: ছাইদুর রহমান বিআইডব্লি উটিএর চেয়ারম্যান, সদস্যগন এবং বিভাগীয় প্রধানদের তোয়াক্কা করেন না। তার মাফিয়া কর্মকান্ড হতে বিআইডব্লিউটিএর নিরীহ অসহায় কর্মকর্তা/কর্মচারীরা মুক্তিচায়।
এত অভিযোগের পরও মহা দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলী মো: ছাইদুর-সিরাজ গংদের কিছু হয় না। এতে প্রমানিত যে, দুর্নীতি দমন কমিশন সরকারের রাষ্ট্রযন্ত্র্র এই মহা দুর্নীতি বাজ ছাইদুরের অবৈধ টাকার কাছে আত্মসর্মপন করেছে। হীন চরিত্রের প্রকৌশলী মো: ছাইদুর রহমান তার বাবার মৃত নিয়েও ছলচাতুরি করেছেন। তার বাবা ২০২২ সালে করোনায় মৃত্যুবরন করেছে কিন্তু অসৎ উদ্দেশ্য তিনি তার বাবাকে ২০১৬-১৭ করবর্ষে মৃত দেখিয়ে আয়কর প্রদান করেছেন। তার প্রমান ২০১৬-২০১৭ করবর্ষের আয়কর প্রদানের বিবরণ। এ প্রতিবেদনে প্রকৌশলী মো: ছাইদুর রহমানের দুর্নীতির সামান্য কিছু খন্ডিত অংশ প্রকাশ করা হলো মাত্র। সঠিকভাবে তদন্ত করলে বিআইডব্লিউটিএর প্রকল্প হতে প্রকৌশলী ছাইদুর রহমান কর্তৃক সাগর চুরির রহস্য উদঘাটিত হবে। তিনি বর্তমানে ৫৫-৫৬ সিদ্ধেশ্বরী ,৪/এ আমিনাবাদ হাউজিং সোসাইটিতে বসবাস করছেন। তাকে গোয়েন্দা নজরদারীতে রাখা অত্যন্ত জরুরী বলে মনে করছেন সাধারন কর্মচারি ও কর্মকর্তারা। না হলে ধূর্ত প্রকৌশলী মো: ছাইদুর রহমান যেকোন মুহূর্তে দেশ ত্যাগ করে বিদেশে চলে যেতে পারেন।
এ বিষয়ে প্রকৌশলী মো: সাইদুর রহমানের বক্তব্য জানতে তার মোবাইল ফোনে কল করলে তিনি সরাসরি তার সাথে দেখা করতে বলেন।
সুত্র, Daily Sabuj Bangladesh