প্রথম বাংলা – স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন, আপনারা জনগণের পুলিশ হবেন। বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন আজ আপনারা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করেছেন। পুলিশ যেমন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও মানবতার সেবা করে তেমনি দেশের মানুষকে আজ একটি স্পোর্টসের মাধ্যমে একত্রিত করে সেটিও পুলিশ দেখিয়ে দিল, পুলিশ সব কিছুই পারে।
শুক্রবার (৭ জুন) জয় বাংলা ম্যারাথন-২০২৪ এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে আজ ভোর ৫টায়‘ রাজধানীর হাতিরঝিলে জয় বাংলা ম্যারাথন-২০২৪’ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাথলেটিক্স ও সাইক্লিং ক্লাবের সভাপতিঅ্যা ডিশনাল আইজিপি (পিবিআই) বনজ কুমার মজুমদার, বিপিএম (বার),পিপিএম এর সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বি শেষ অতিথি ছিলেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশআইজিপি ) ও বাংলাদেশ পুলিশ ক্রীড়া পরিষদের সভাপতি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম এবং ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাথলেটিক্স ও সাইক্লিং ক্লাবের সভাপতি অ্যাডিশনাল আইজিপি (পিবিআই) বনজ কুমার মজুমদার, বিপিএম (বার), পিপিএম। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বুঝে গিয়েছিলাম পাকিস্তানের সাথে আর নয়। ‘৬৬ তে যখন ছয় দফা ঘোষণা করা হলো তখনই ছিল আমাদের টার্নিং পয়েন্ট। সারা দেশের মানুষ এটিকে স্বাধীনতার দলিল হিসেবে গ্রহণ করেছিল। এই ছয় দফাকে ঘিরে আজকের এই আয়োজনের জন্য আপনাদেরকে ধন্যবাদ জানাই।
তিনি আরো বলেন, জঙ্গি দমন, সন্ত্রাস দমন ও চরমপন্থীদের আত্মসমর্পণ করা ছাড়াও করোনা মহামারিসহ যে কোন দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আপনারা নজির দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
আইজিপি বলেন, জয় বাংলা ম্যারাথন-২০২৪ বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাথলেটিক্স ক্লাবের অত্যন্ত সাহসী একটি পদক্ষেপ। বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান জয় বাংলাকে ধারণ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ এবং ৭ জুনের ছয় দফাকে প্রতিপাদ্য করে জয় বাংলা ম্যারাথন নামকরণ অত্যন্ত অর্থবহ হয়েছে। ১৯৬৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পাকিস্তানের লাহোরে বিরোধী দলের কনভেনশনে আমাদের মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই ছয় দফা ঘোষণা করেছিলেন।
তিনি আরো বলেন,এই ছয় দফাকে বলা হয় বাংঙালি জাতির মুক্তির সনদ। এই মুক্তির সনদ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ১৯৬৬ সালের এই দিনে পুলিশের গুলিতে ঢাকা,নারায়ণগঞ্জসহ দেশে র বিভিন্ন স্থানে মনু মিয়াসহ ১১ জন জীবন দিয়েছিলেন। স্বাধীন তার প্রাক্কালে এই ছয় দফাকে বাঙালি জাতি গ্রহণ করেছিল,
তার প্রমাণ দিয়েছিল এই দিনে ছয় দফা দিবসে স্বাধীনতার জন্য মুক্তিপাগল মানুষ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে একত্রিত হয়েছিল,সেই বিষয়টি স্মরণ রেখে বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাথলেটিক ও সাইক্লিং ক্লাবের এই আয়োজন নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার এর মাধ্য মে আগামী প্রজন্ম ছয় দফা সম্পর্কে জানতে পারবে। আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দেশকে উন্নত, সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার জন্য একযোগে কাজ করার প্রত্যয় ঘোষণা করছি।
বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় হাতিরঝিলের মেরুল বাড্ডা পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে এম্ফিথিয়েটারে এসে শেষ হয় এই হাফ ম্যারাথন প্রতিযোগিতা। পরে হাতিরঝিলের এম্ফিথিয়েটারে ৪টি কাটাগরিতে ৩০ জন বিজয়ীর মাঝে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিবৃন্দ পুরস্কার তুলে দেন।
১৬-৫০ বছর বয়সী পুরুষ বিভাগে প্রথম হয়েছেন মোঃ আল-আমিন, দ্বিতীয় হয়েছেন মোঃ আসিফ বিশ্বাস ও তৃতীয় হয়েছেন মেহেদী হাসান। ১৬-৫০ বছর বয়সী নারী বিভাগে প্রথম হয়েছেন পাপিয়া খাতুন, দ্বিতীয় হয়েছেন নাবিয়া খাতুন ও তৃতীয় হয়েছেন প্রীতি বিশ্বাস।
৫১ থেকে তদুর্ধ্ব বয়সী নারীদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন চীনা নাগরিক ইরিলি খইকি, দ্বিতীয় হয়েছেন শাহ তামান্না সিদ্দিকি ও তৃতীয় হয়েছেন আয়শা মুন্নি। ৫১ থেকে তদুর্ধ্ব বয়সী পুরুষ বিভাগে প্রথম হয়েছেন জসিম উদ্দিন আহম্মেদ, দ্বিতীয় হয়েছেন মোঃ ওহাব খাঁন ও তৃতীয় হয়েছেন আমিনুর রহমান।
উল্লেখ্য গত ১৪ মে জয় বাংলা ম্যারাথন ২০২৪ এর কার্যক্রমের রেজিস্ট্রেশন উদ্বোধন হয়। এতে মানুষের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যায়। মোট ৩৫০০ লোক রেজিস্ট্রেশন করে। যাদের মধ্যে থেকে আজ ৩২০০ লোকের অংশগ্রহণে “জয় বাংলা ম্যারাথন-২০২৪”এর হাফ ম্যারাথন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।