প্রথম বাংলা -এবার বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএস সি) সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী প্রশ্নপত্র ফাঁস সংক্রান্ত তার দুর্নীতির বিষয়ে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। স্বীকারোক্তিতে সব বলে দিয়েছেন তিনি। তার হাত ধরে অনেকেই হয়েছেন বিসিএস ক্যাডার। সব ক্যাডারেই রয়েছেন তার লোক। আবেদ আলীর হাত ধরে যারা বিসিএস ক্যাডার হয়েছেন, তাদের তালিকা প্রণয়নের কাজ থেকে শুরু করেছে একটি সংস্থা।
এদিকে পিএসসির প্রশ্নফাঁস শুরু হয় আগে থেকেই গত ২৪তম ব্যাচে এর ব্যাপকতা বাড়ে।পরে ২৫তম ব্যাচে প্রশ্নফাঁস বিষয়টি ধরা পড়ে ওই সময় পিএসসির মেম্বার ছিলেন মাহফুজুর রহমান আর তার ড্রাইভার ছিলেন সৈয়দ আবেদ আলী। নেতৃত্বে একটি গ্রুপ থাকতো তারা কাস্টমার যোগাড় করে দেওয়ার দায়িত্বে ছিল। গুলশানের একটি ভবনে এবং নীলফামারির কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ‘ভিন্ন জগৎ’ নামক একটি রিসোর্ট ছিল মাহফুজুর রহমানের।
যারা টাকা দিত, তাদের এই দুই স্থানে রেখে পরীক্ষার একদিন আগে প্রশ্নপত্র দেওয়া হতো। সেখানে পড়ালেখার ব্যবস্থা করা হতো। পরের দিন পরীক্ষায় তারাই সর্বোচ্চ মার্ক পেত’এভাবে মাহফুজুর রহমান হাজার হাজার কোটি টাকা কামিয়েছেন। ওই সময় দলীয় নেতাদের তালিকাও আসত। সেই তালিকা অনুযায়ী তিনি টাকা নিতেন এবং নেতাদের ভাগ দিতেন। স্বাস্থ্যের আলোচিত বিতর্কিত মিঠু ঠিকাদারও প্রশ্নফাঁস এই চক্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
তার উত্থার মূলত এভাবেই সৈয়দ আবেদ আলীর হাত ধরে যারা বিসিএস ক্যাডার হয়েছেন,তাদের তালিকা প্রণয়নের কাজ গত কাল থেকে শুরু করেছে একটি সংস্থা। সৈয়দ আবেদ আলী শত শত কোটি টাকার সম্পদের মালিক’ঢাকায় তার একটি ছয়তলা বাড়ি, তিনটি ফ্ল্যাট ও একটি গাড়ি রয়েছে। গ্রামের বাড়িতে রয়েছে ডুপ্লেক্স ভবন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আবেদ আলী এসব তথ্য জানিয়েছেন তবে আবেদ আলীর আরও সম্পদ রয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশ রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী পদে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত অভিযোগে গত সোমবার রাজধানীর শেওড়াপাড়ার ওয়াসা রোডের নিজ ফ্ল্যাট থেকে সৈয়দ আবেদ আলী ও তার বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান ওরফে সিয়ামকে গ্রেফতার করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
অপরাধ বিশেষজ্ঞদের মতে,ড্রাইভার আবেদ আলী যদি শত শত কোটি টাকার মালিক হন,তাহলে তিনি পিএসসির সদস্য মাহফু জুর রহমানসহ যেসব কর্মকর্তার গাড়ি চালিয়েছেন, তারা কত হাজার কোটি টাকার মালিক,তা আর বোঝার অপেক্ষা রাখে না। মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে ওই সময় মামলা হয়। পরে তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান কিন্তু ততোক্ষণে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক বনে যান।
এদিকে মাহফুজুর রহমান ছিলেন হাওয়া ভবন কানেকটেড পিএ সসিতে আলাদা একটি রুম ছিলেন।এখানে বসে তিনি রাজনৈ তিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন দলীয় সংসদ সদস্য মনোন য়ন প্রত্যাশী ছিলেন। এ কারণে তাকে ভয় পেতেন পিএসসির চেয়ারম্যানসহ অনেকেঅর্থাৎ তিনি ব্যাপক প্রভাবশালী ছিলেন।
এদিকে আবেদ আলীর সঙ্গে প্রশ্নফাঁসে জড়িত আরও একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীকে ১০ কোটি টাকার চেকসহ মঙ্গলবার গ্রেফতার করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে তিনি জড়িত। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। তার মাধ্যমে বের হবে কোন কোন কর্মকর্তা জড়িত এবং এই টাকার ভাগ কারা পেত।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে শীর্ষ প্রশাসনের টনক নড়েছে সকলপ্রশাস নে ফাঁস হওয়া প্রশ্নের মাধ্যমে বিসিএস ক্যাডার হয়েছেন। মাহ ফুজুর রহমানের সময় বিএনপি-জামায়াত-শিবিরসহ চার দলীয় জোটের দলীয় নেতাকর্মীরা বেশি ঢুকেছে বিসিএস ক্যাডারে। তবে দলের পরিচয় দিলেও টাকা দেওয়া লাগছে প্রত্যককে শত শত কোটি টাকা একটি ব্যাচ থেকে কামিয়েছে তারা আবেদ আলী স্বীকারোক্তিতে সব বলে দিয়েছে।
এখন সরকারি প্রায় সব পর্যায়ে দুর্নীতি,অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা বিরাজ করার নেপথ্যে রয়েছে ফাঁস হওয়া প্রশ্নের মাধ্যমে বিসি এস ক্যাডার হওয়া। তারা চাকরিতে প্রবেশ করেছে দুর্নীতির মা ধ্যমে শুরুটা যেহেতু দুর্নীতির মাধ্যমে,এ কারণে তারা যেখানে দায়িত্ব পালন করে, সব জায়গায় দুর্নীতি করতেই থাকে।
মন্ত্রণালয় থেকে উপজেলা পর্যন্ত দুর্নীতিবাজদের চেইন অব কমান্ড আছে। এই কারণে দুর্নীতি বৃদ্ধি পেয়েছে, জবাবদিহিতা নেই বললেই চলে। অধিকাংশ প্রশাসনে টাকা ছাড়া কাজ না হওয়ার অন্যতম কারণ এটি। এদিকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান মোহাম্মদ আলী mp news কে বলেন, এই ঘটনার অনেকের নাম আসছে। জড়িত প্রত্যেককে গ্রেফতার করা হবে।