কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি মোঃশাহজাহান খন্দকার
বিশ্বসেরা ২শতা়ংশ বিজ্ঞান গবেষকের তালিকায় এ বছরও তালিকাভুক্ত হয়েছেন বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ও গবেষক কুড়িগ্রামের গর্ব।মামুন কুড়িগ্রাম জেলার, নাগেশ্বরী উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নের কুটি-নাওডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি সেখানেই স্কুল ও কলেজ শেষ করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগে। কিন্তু গবেষণার প্রতি অত্যন্ত অনুরাগী মামুন পরের বছরই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগে ভর্তি হন।ওই তালিকায় এ বছর ১৪২ জন স্থান পেয়েছেন গত বছরের ন্যায় তিনি এবারও বাংলাদেশীদের মধ্যে ৭ম স্থানে থাকার গৌরব অর্জন করেছেন।
আমেরিকার স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষক জন পি.এ. ইয়োনিডিস গত ১০ অক্টোবর স্কোপাস ডাটাবেজে নথিভুক্ত প্রকাশনার উপর ভিত্তি করে বিশ্বের শীর্ষ ২ শতাংশ গবেষণা বিজ্ঞানীদের একটি তালিকা প্রকাশ করেন।
এতে বাংলাদেশ থেকে সেরা গবেষকের সংখ্যা মোট ১৪২ যার মধ্যে সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র যার বাংলাদেশেরই ১৬ জন। পাশাপাশি এই তালিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ জন শিক্ষকও রয়েছেন। তালিকায় স্থান পাওয়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ জন শিক্ষকের পাশাপাশি থাকার গৌরব অর্জন করতে পেরেছেন পাবলিক হেলথ এন্ড ইমফোরমেটিক্স বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ এ. মামুন।
এটিতে দু’টি ধাপে সেরা গবেষক নির্বাচন করা হয়। এর একটি হল পুরো পেশাগত জীবনের ওপর, অন্যটি শুধু এক বছরের গবেষণা কর্মের ওপর। বিজ্ঞানীদের প্রকাশনা সংখ্যা, এইচ-ইনডেক্স, সাইটেশন ও অন্যান্য সূচকগুলো বিশ্লেষণ করে তালিকাটি প্রস্তুত করা হয়। ওই প্রতিবেদনটির মাধ্যমে বিজ্ঞানীদের ২২টি বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্র এবং ১৭৬ টি উপ-ক্ষেত্রে শ্রেণীবদ্ধ করে মোট ২ লক্ষ জন গবেষক কে এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মামুন গত বছরেও বিশ্বসেরা গবেষকদের তালিকা ভুক্ত ছিলেন এবং এবার বাংলাদেশীদের মধ্যে ৭ম স্থানে রয়েছেন।
পরে তিনি নিজে গবেষণা ছাড়াও ২০১৭ সালে গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘চিন্তা রিসার্চ বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠা করেন। এই ব্যানারে দেশী-বিদেশী গবেষকদের সাথে কাজ করে যাচ্ছে মামুন। এছাড়াও তিনি নতুন গবেষকদের জন্য কিছু মেন্টরিং-ট্রেইনিং প্রোগ্রাম করে যাচ্ছেন। মামুন গবেষণা করছেন মানসিক স্বাস্থ্য, আত্মহত্যা, এবং পাবলিক হেলথের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে যা বাংলাদেশে অবহেলিত।
তরুণ এই গবেষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ এ মামুন শিক্ষার্থীদের জন্যও গবেষণা অনুদান দাবি করেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল আলম তালিকায় স্থান পাওয়া সেরা গবেষকদের অভিনন্দন জানিয়ে গবেষণার পরিবেশ নিশ্চিত করারও অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
উপাচার্য আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এরকম অর্জনে উপাচার্য হিসেবে আমি অনেক বেশি আনন্দিত ও গর্ববোধ করছি। শিক্ষা ও গবেষণায় আমরা যে এগিয়ে যাচ্ছি এটি তার প্রমাণ , আর এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে সকলের সম্মিলিত প্রয়াস জরুরী। তালিকায় স্থান পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকলের জন্য শুভকামনাও জানান তিনি।