সুলতানা রাজিয়া সান্ধ্য কবিঃ
সিনিয়র রিপোর্টার।
কুড়িগ্রামের সোনালী ব্যাংকে কিছুদিন ধরে নিজস্ব আইন গতিতে চলছে নিয়ম কানুন।চলছে পেশিশক্তিকে ভক্তি করা।সকাল থেকে গ্রাহকের প্রচন্ড ভীড়।নারী ও পুরুষরা পাশাপাশি সারি হয়ে দাড়িয়ে দাড়িয়ে অপেক্ষা করছে মহিলা সারিতে কমপক্ষে ৩০ জন। পুরুষ সারিতে ৪০ জনেরও বেশি।গত কয়েকদিনের ন্যায় আজও নারী সারিটি ভেঙ্গে দিয়ে পুরুষের পিছনে দাড় করা হল।
গত বৃহাস্পতিবার এ নিয়ে ব্যাংকে তুলকালাম।
পুরুষরা গলা বাজায় তাই তাদের চেক জমা নেয়া হচ্ছে আগে।আর নারীরা আঙুল চুষছে।তাদের তো আর গলার তেজ নেই পুরুষের গলার গর্জনে ভক্তি পায় আর নারীরা পুরুষের কাছ থেকে পায় অপমান।আজকের এক চিত্রেতা দৃশ্যমান।
ব্যাংকের ৫নং কাউন্টারের ভদ্রলোক কাউন্টারের ভিতর থেকে বের হয়ে নারীদেরকে পুরুষদের পিছনে ঠেলেদিয়ে দাঁড় করিয়ে দেয়া হচ্ছিল।
এবং বলা হয়, আপনারা যদি পুরুষদের পিছনে না দাড়ান তাহলে কোন টাকা পয়সা দেয়া হবেনা।
কাউন্টারের সামনের নারীদের সারিটি
পুরুষের পিছনের লাইনে দাড় করানো হয়।
এই সময় আমি আমার সঞ্চয় ব্যুরো ব্যাংকে জমানো টাকার মুনাফা চেক নিয়ে সোনালী ব্যাংকে আসি এমনি অনাকাঙ্খিত আচরণ দেখে তাকে বলি আপনারা যদি দেশের বাহিরে তাকান তাহলে দেখতে পাবেন ব্যাংক কিংবা ট্রেনের টিকেট নিতে পাশাপাশি দুটি সারিতে দাড়ান নারী ও পুরুষ।
একজন নারী ও একজন পুরুষ কে সম্মানের সহিত ধারাবাহিক ভাবে নারী ও পুরুষের মাঝে ট্রেনের টিকেট কিংবা ব্যাংকের চেকের টাকা প্রদান করতে দেখা যায়।দেশের অন্য ব্যাংক গুলোতে এমন নিয়ম চেখে পড়েনি।
আজ চোখে পড়ল কুড়িগ্রামের সোনালী ব্যাংকে মনগড়া আইন তৈরী করে পেশিশক্তি পুরুষদের
আগে চেক জমা নিচ্ছেন এবং টাকা দিচ্ছেন।
নারীদের ধমক দিয়ে পুরুষ সারির পিছনে দাড় করান।এমন একটি ঘটনা চোখে পড়ল কুড়িগ্রাম সোনালী ব্যাংকের ভিতরে।ব্যাংকের সকল কর্মচারীদের নিকট থেকে ৫নং কাউন্টারের ভদ্র লোকটির নাম জানতে চাইলে,কেউ ওই ভদ্র লোকটির নাম বলতে চান না।পরে আমি নামটি জানতে চাই ওই ভদ্রলোকটির মুখে। তিনি বলেন,
কেন আমি আমার নাম আপনাকে বলবো।পরে আমি জি,এম মোঃ লুৎফুল হোসেনের কাছে যাই।
বিষয়টি সম্পুর্ণ বলি।তিনি বলেন,
আমাদের কর্মচারীরা খেতে গিয়েছে ওরা ব্যাংকে ঢুকলে সব সমাধান হবে।বিষয়টি আমলে না নিয়ে ধামাচাপা দিয়ে দুরদুর করে আমাকে চলে যেতে বলেন।কিছুক্ষণ পর অনেক মহিলা বাসায় চলে যেতে থাকেন।৫নং কাউন্টারের ভদ্রলোক আমাকে বলেছেন, সবার শেষে আপনাকে টাকা দিব দেখি আপনি কি করতে পারেন।
কুড়িগ্রাম (সদর) সোনালী ব্যাংকের ভিতরের আইন, পেশিশক্তিকে ভক্তি। সবার পরে আমাকে টাকা দেয়া হয় তখন আছরের আযান চলছে। বাকি ছিল ৬জন মহিলা।৫নং কাউন্টারের ভদ্রলোকটিকে অনুরোধ করি ওই ৬জন মহিলাকে একটু হেল্প করেন, তারা সকাল ১১টা থেকে আপনার কাউন্টারের সামনে লাইনে দাড় ছিল।আপনি বকুনি দিয়ে পুরুষদের পিছনে নিয়ে গিয়ে ওদের দাড় করান।সব পুরুষ তো টাকা নিয়ে চলে গেলেন।এখন কেন বলছেন আর টাকা দেয়া হবেনা আগামী কাল আসেন।এতে প্রতীয়মান হয় যে এখানে পেশিশক্তিকে ভক্তি করা হচ্ছে।
কাউন্টারের সামনে ৩০ জন নারীদের লম্বা সারিটি পিছনে নিয়ে গেলেন আর বললেন, আপনারা পিছনে না দাড়ালে টাকা দিবনা।
পিছে পরা নারীদের জন্য সুপারিশ করেছি।
সে জন্য আমাকে অপমান সরুপ ওই ভদ্রলোক বলেন, আমার চেয়ারে বসে টাকা দেন আপনি।
আমার গলায় সাংবাদিক কার্ড থাকা সত্বেও আমাকে তিনি তার (আসন) চেয়ারে বসতে বলেন, দুঃখজনক!দুইাবার কতৃপক্ষের নিকট বিষয়টি নিয়ে গিয়েও কোন ফল হয়নি।শ্রীমতি গীতারাণী বলেন, আমি সকাল ১১ টায় এসেছি ব্যাংকে, এখন বিকাল ৪টা বাজে এরপরও টাকা পাচ্ছিনা।ব্যাংকে কান্নাকাটি করেন এমন একজন বৃদ্ধা মহিলা মোছাঃ হামিদা বেগম,চেক নম্বর (৩৭৫৭৬১৩)-স্বামী মৃত্যু মুক্তিযোদ্ধা আফজাল হোসেন।ইউনিয়ন পাঁচগাছি (কুড়িগ্রাম সদর)কদমতোলা পশ্চিম পাড়া।
তিনি স্বামীর মুক্তিযোদ্ধার ভাতা (২০ হাজার)টাকার মধ্যে ৮হাজার টাকা উত্তোলনের চেক নিয়ে এসে হাউ মাউ করে বেড়ান।তিনি বলেন, আমি বৃদ্ধ মানুষ একাই এসেছি আমাকে পিছনের সারিতে দাড় করে দিয়ে বেলা শেষ করছেন।বাড়ি যেতে যদি রাত হয় পথ ভুলে যে কোথায় যাবো তখন কেমন হবে। আমাকে তারাতারী টাকা দেন।