নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার ৬ নং মাটিকাটা ইউনিয় নের চেয়ারম্যান। বিচারকার্য শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে চেয়ারম্যানকে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছে পুলিশ এমন অভিযোগ তুলে বিভিন্ন দপ্তরের লিখিত অভিযোগ করেছেন ঐ ভুক্তভোগী চেয়ারম্যান। চেয়ারম্যানের নাম, মোঃ সোহেলে রানা।
তথ্যসূত্রে জানাযায়, গত ৪ আগষ্ট সন্ধ্যা ৭ টা দিকে সোহে ল চেয়ারম্যান বিচারকার্য শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে উপ জেলার গোগ্রাম ইউনিয়নের কুমরপুর বাজারে পাঁ রাখতেই সাধারণ পোশাকে কয়েকজন তার গাড়ির গতি রোধ করে এবং গাড়ি তল্লাশির কথা জানান। তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা গোদাগাড়ী প্রেমতলী পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ ও সাব-ইন্সপেক্টর পরিচয় দেন।
এরপর চেয়ারম্যান গাড়ী থেকে নেমে দেখতে পান সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) বিনয় কুমার ও তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর আব্দুল বারি। এরপর শুরু হয় নাটকীয় তল্লাশি। গাড়ীতে কোন কিছু না পাওয়ায় চেয়ারম্যানকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। তবে চেয়ারম্যানের সাথে পুলিশের এমন আচরন দেখে সেখানে সাধরণ জনগণ জড়ো হতে থাকে। পরিবেশ বুঝতে পেরে পুলিশ চেয়ারম্যানকে দ্রুত চলে যেতে অনুরোধ করেন।
এরপর পুলিশের এমন আচরন ও মাদক দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টার অভিযোগ তুলে গত ৬ আগষ্ট পুলিশ সুপার, ডিআইজি ও জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী চেয়ারম্যান সোহেল রানা।
ভুক্তভোগী ঐ চেয়ারম্যান গণমাধ্যমকে বলেছেন, প্রকাশ্যে পুলিশ মাদক দিয়ে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছে। সেস ময় জনগণ উপস্থিত না হলে পুলিশ তাকে মাদক মামলা দিয়ে হয়রানি করত বলে তার দাবী।তিনি আক্ষেপ করে বলেন, এখন আমরা ইউপি সদস্যদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত। যেখানে একজন চেয়ারম্যানকে পুলিশি হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে, সেখানে সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা কতটুকু?বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রত্যাক্ষদর্শী বলছেন, সোহেল চেয়ারম্যানের ঘটনা সত্য। তার গাড়ী তল্লাশি করা হয়েছে। তবে গাড়ীতে কিছু পাইনি পুলিশ,গত জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময় এই আইসি (ইনচার্জ) যোগদান করেছে। যোগদান করতে না করতেই এই পুলিশ অফিসার যা শুরু করেছে, তাতে আমরা চরম আতঙ্কে আছি। এই অফিসার এর আগেও এখানে ছিলেন, শুনেছি তখনও অনেকের সাথে খারাপ আচরন করেছেন। তিনি টাকা ছাড়া মামলা নিতেন না এখন আমাদের ভাগ্যে কি আছে জানি না!!
উল্লেখ্য, গত ২০২০ সালে জুলাই মাসে অর্থাৎ করোনা মহামারির মুহুর্তে এই ইন্সপেক্টর আব্দুল বারি এখানে দ্বায়ি ত্বরত ছিলেন। তখনও তার বিরুদ্ধে না অনিয়ম দুর্নীতি, সা ধরণ মানুষকে পুলিশ কেন্দ্রে ডেকে এনে মারধর, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও টাকা ছাড়া মামলা না নেওয়ার সংবাদ প্রকাশ করে দেশের প্রথমসারির পত্রিকা যুগান্তর, বাংলাদেশ প্রতিদিনসহ অসংখ্য পত্রিকা।তবে সাব-ইন্সপে ক্টর বিনয় কুমারের বিরুদ্ধে রয়েছে টাকার বিনিময়ে চার্জ শীটভুক্ত মামলার আসামীকে ধরে ছেড়ে দেওয়ার অভিযো গ।
গত জুন মাসের শেষে অর্থাৎ কুরবানি ঈদের আগে হরিশংকরপুর এলাকার মৃত কায়ুমের ছেলে ও চর বয়ারি স্কুলের দপ্তরি ইসমাইল হোসেনকে আটক করে ছেড়ে দেয় এই এসআই বিনয় কুমার। ইসমাইল সরকারি গাছ চুরি ও ৫০০ গ্রাম হিরোইন মামলাসহ একাধিক মামলার আসামী।
বিষটি নিয়ে প্রেমতলী তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান আমি কোর্টে আছি পারলে কোর্টে আসেন। এরপর কোর্টে সাক্ষৎ করলে তিনি বলেন, আমাদের কাছে তথ্য ছিল যে মাদকের একটি বড় চালান ওই গাড়িতে পাচার হচ্ছে।
সেই তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে ই চেয়ারম্যানের গাড়ি তল্লাশী করা হয়েছে। এসময় তার গাড়িতে কোনো কিছু না পাওয়ায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়ে ছে। এর আগেও আপনার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম দুর্নীতি, সাধরণ মানুষকে পুলিশ কেন্দ্রে ডেকে এনে মারধর, অক থ্য ভাষায় গালিগালাজ ও টাকা ছাড়া মামলা না নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এমন প্রশ্ন করলে, তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং মিথ্য বানোয়াট বলেন।
বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী’র সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলেন, অভিযোগ দিয়েছে সত্য। তবে সেদিন মাদকের একটি চালান যাওয়ার তথ্য ছিল। সোহেল চেয়ারম্যান যে অভিযোগ দিয়েছে, সে বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।