মোঃ শফিকুল ইসলাম স্টাফ রিপোর্টার:
কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তিতে আ বারও জালিয়াতির তথ্য পাওয়া গেছে। জেলা প্রশাসক (ডিসি),নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং জেলা শিক্ষা অফিসা রের (ডিইও) সই জাল করে সপ্তম শ্রেণিতে তিন শিক্ষা র্থী ভর্তি করা হয়েছে। এ নিয়ে পৃথক তদন্ত কমিটি করে ছে জেলা প্রশাসন ও স্কুল কর্তৃপক্ষ।
বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,২০২৪ সালে সপ্তম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির কো নও বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না হলেও সদ্য সাবেক প্রধান শিক্ষ ক জিয়াসমিন আরা হক ও একাধিক সহকারী শিক্ষক মিলে সপ্তম শ্রেণিতে তিন জন শিক্ষার্থী ভর্তি করেন।ও ই শিক্ষার্থীদের ভর্তিতে কোনও নীতিমালার তোয়াক্কা ক রেননি সাবেক ওই প্রধান শিক্ষক। জেলা প্রশাসক,জে লা প্রশাসনের শিক্ষা ও কল্যাণ শাখার নির্বাহী ম্যাজি স্ট্রেট এবং ডিইওর সই জাল করে ভর্তির সুপারিশপত্র তৈরি করে ওই তিন শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা হয়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ভর্তি করা তিন শিক্ষার্থী কুড়ি গ্রাম জেলা সদরের বাসিন্দা। ভর্তি রেজিস্ট্রারে ভর্তির তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩। ষষ্ঠ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের আগেই তাদের সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়েছে। দুই শিক্ষার্থীর পূর্ব বর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে জেলা শহরের বর্ডার গার্ড পাবলিক স্কুল এবং এমএ সাত্তার উচ্চ বিদ্যালয় উল্লেখ করা হয়েছে।অপর শিক্ষার্থীর পূর্ববর্তী প্রতিষ্ঠান লালম নিরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় দেখানো হয়েছে। তবে তার অভিভাবককে ব্যবসায়ী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিদ্যালয় সূত্র জানায়, কার্যকালীন সময়ে সাবেকপ্রধান শিক্ষক একাধিক সহাকারী শিক্ষকসহ ভর্তি বাণিজ্য ক রেছেন। তারা শিক্ষার্থীদের ভর্তির জন্য জেলার সর্বোচ্চ সরকারি অফিসারদের সই জাল করে ভুয়াসুপারিশপত্র বানিয়ে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন। এ নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যে জালিয়াতির সত্যতা পেয়েছে।দুই সহকারী শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশদেওয়া হয়েছে।
স্কুলটির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানায়,সাবেকপ্রধান শিক্ষক একাধিক সহকারী শিক্ষকসহ স্কুলে একটিসিন্ডি কেট তৈরি করেছিলেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদ ফতরের (মাউশি) নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে তারা বিধি বহির্ভূতভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি করতেন। চলতি বছর ষষ্ঠ ও নবম শ্রেণিতে জালিয়াতির মাধ্যমে সাত জন শিক্ষার্থী ভর্তি করেন।সাবেক প্রধান শিক্ষক জিয়াসমিন আরা হক বিষয়টি প্রকাশ হলে তাকে শোকজ করেমাউ শি ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চান প্রধান শিক্ষক।
কিন্তু এ নিয়ে কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি মাউশি এই সুযোগে প্রধান শিক্ষক অবসরে যাওয়ার আগে জা লিয়াতির মাধ্যমে আরও শিক্ষার্থী ভর্তি করেন।তার এই ভর্তি সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য হিসেবে স্কুলটির ইং রেজি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক খন্দকার মোয়াজ্জেম হোসেনের নাম পাওয়া গেছে। ভর্তি জালিয়াতি নিয়ে তাকে স্কুল কর্তৃপক্ষ শোকজও করেছে।
এ বিষয়ে সহকারী শিক্ষক খন্দকার মোয়াজ্জেম হোসে ন বলেন,‘ভর্তিতে আমার কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই। এ বিষয়ে আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবেন
জেলা শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়,স্কুল কর্তৃপক্ষের তদন্ত কমিটি বুধবার (২৪ জানুয়ারি) ডিইওর কাছে গিয়েসুপা রিশপত্রের সত্যতা যাচাই করেছেন। যাচাইয়ে স্মারক নম্বর ও সইয়ের সত্যতা পাওয়া যায়নি পরে ডিইও লি খিতভাবে জানিয়েছেন যে সুপারিশপত্র ভুয়া।
ডিইও শামসুল আলম বলেন, ‘তদন্ত কমিটিকে আমি লিখিতভাবে জানিয়েছি যে,ওই পত্র এবং স্বাক্ষরকোনো টিই আমার নয়।’জেলা প্রশাসনের শিক্ষা ও কল্যাণ শা খার একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়,বিষয়টি জেলা প্রশা সনের নজরে এসেছে। এ ধরনের কোনও পত্র জেলাপ্র শাসনের শিক্ষা শাখা থেকে দেওয়া হয়নি। জেলা প্রশা সক এবং সংশ্লিষ্ট শাখার দায়িত্বে থাকা নির্বাহী ম্যাজি স্ট্রেটের সই জাল করে ভুয়া সুপারিশপত্র তৈরি করা হয়েছে।
তবে বিষয়টি নিয়ে কৌশলী উত্তর দিয়েছেন অভিযুক্ত সাবেক প্রধান শিক্ষক জিয়াসমিন আরা হক।তিনি বলে ন, এরকম তো শুনি নাই। এটি একটু দেখতে হবে,শুন তে হবে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে।’ যদিও পরে তিনি ফোন করে এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ না করার অনুরোধ করেন।
স্কুলটির প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) গোলাম মোস্তফা বলেন,তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন এ নিয়ে আর বেশি কিছু বলতে পারছি না।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন,বিষয় টি বর্তমান প্রধান শিক্ষক আমাকে লিখিতভাবেজানিয়ে ছেন।অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে এক টি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।