মহাখালী টু কিশোরগঞ্জ ভায়া কাপাসিয়া রোডে গণপরিবহনে ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য চরমে পৌঁছেছে। কোনো নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না।এই রোডে চলাচল করে জলসিড়ি,অনন্যা,অনন্যা ক্লাসিক,সম্রাট, ভাওয়াল,রাজদূত পরিবহন।
বিগত ২০০৪ সাল হতে অতিরিক্ত ভাড়া এ নিয়ে আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইলেও,সাধারন জনগন পরিত্রানের কোন উপায় খুঁজে পাচ্ছে না। ভিবিন্ন ডামাডোলে আগের মতোই আবার সব চাপা পড়ে যাচ্ছে। পরিবহন মালিকদের নৈরাজ্য আর অনাচার নিত্যসঙ্গী হয়েছে বাস যাত্রীদের। বাস মালিকদের কাছে জিম্মি যাত্রীরা। এ নিয়ে বিআরটিএ-এর কোনো পদক্ষেপ নেই। বরং বিআরটিএ এর নির্ধারিত অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে তারা।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ভাড়া নিয়ে প্রতিনিয়তই স্বেচ্ছাচারিতা চলছে। প্রতিটি বাসে ভাড়ার তালিকা টাঙানোর নিয়ম থাকলেও কোনো বাসে এখন আর তালিকা নেই। চলন্ত বাসের দরজা বন্ধ থাকার নিয়মও কেউ মানে না। যাত্রী পেলে মাঝপথেও বাস দাঁড়াতে দ্বিধা করে না।
আবার যেখানে সেখানে যাত্রী নামানো হয় বিরতিহীন সার্ভিসের নামে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হলেও কার্যত সব বাসই বিরতি দিয়েই চলে। সিটিংয়ের নামে ‘চিটিং’ প্রবনতার কাছেও জিম্মি যাত্রীরা। সব মিলে গণপরিবহনে নৈরাজ্য চরম আকার ধারণ করেছে।
বিআরটিএ এর নিয়ম অনুযায়ী লং রোডে গণপরিবহনে ভাড়া কিলোপ্রতি ২.২০ টাকা হওয়ার কথা। কিন্তু এই নিয়ম কেউ মানে না এই রোডে চলাচলকারী কোন পরিবহন। ভুক্তভোগি যাত্রীদের সাথে কথা বলে সরজমিনে যাচাই করে জানা যায়,
ঢাকা মহাখালী টু কিশোরগঞ্জ সদরের মোট দূরত্ব ৯৮ কিলোমিটার যা বিআরটি নির্ধারিত ভাড়া কিলো প্রতি ২.২০ টাকা হিসাবে ২১৬ টাকা অথচ সাইদুর রহমান মোড়ল নামের এক যাত্রী অভিযোগ করেন কাউন্টার হতে যাত্রীদের কাছ থেকে নিচ্ছে ৩৩০ টাকা।সরজমিনে গিয়ে এর সত্যতা খুজে পাওয়া যায়।এ নিয়ে সাধারন যাত্রীদের মধ্যে চরম অসন্তুষ্টি দেখা যাচ্ছে।এই রোডের ভাড়া অন্য যেকোন রোডের থেকে অনেক বেশি আদায় করা হয়।
গাজীপুর ভাওয়াল বদরে আলম সরকারী কলেজের অনার্স পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী জানায় তার বাড়ি কাপাসিয়া আমরাইদ।সেখান থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা ছাত্র ভাড়া নেওয়া হয় ৭০ টাকা।যা একজন ছাত্রের জন্য অত্যান্ত বেশি।তাই সে বাড়ি হতে নিয়মিত যাওয়া আসা না করে কলেজ সংলগ্ন মেচে থাকেন,বাড়িতে কম যান।সাধারন ছাত্রদের মধ্যেও এ নিয়ে চরম হতাশা কাজ করছে।
কিশোরগঞ্জ থেকে কাপাসিয়া নিয়মিত বাসে যাতায়াত করেন এমন একজন যাত্রী বলেন, কিলোমিটার হিসাবে কিশোরগঞ্জ থেকে কাপাসিয়া ভাড়া হয় ১৩০ টাকা। সেক্ষেত্রে ২০০ টাকা দিলেও কাউন্টারে মানে না। তাকে ৩৩০ টাকার টিকেট কাটতে হয়। ওই যাত্রীর প্রশ্ন তাহলে কিলোমিটার হিসাবে ভাড়া নির্ধারণ করে কি লাভ হলো? কোনো যাত্রীই তো কিলোমিটার হিসাবে ভাড়া দিতে পারছেন না।
মহাখালী হতে কাপাসিয়া, মনোহরদী,কটিয়াদি,চামরাঘাট,হোসেনপুর, কিশোরগঞ্জ সদর, বিভিন্ন এলাকার বাস স্টপেজগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, বিরতিহীন নামের বাসগুলোতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে অথচ সবই লোকাল সার্ভিস।বাস মালিক হেলপারদের কিছু বললে উল্টো যুক্তি দিয়ে বলে যানজটে পড়ে কতো সময় নষ্ট হচ্ছে সেটার জন্য তো এরকম চিৎকার করেন না।
এ নিয়েও প্রতিবাদ করে কোনো লাভ হয় না বলে ভুক্তভোগি যাত্রীদের দাবি। কয়েকজন ভুক্তভোগি যাত্রী বলেন, যুগ যুগ ধরে চলে আসা অনিয়মই এখন এই রোডে নিয়মে পরিণত হয়েছে। আমাদের কথা বলার মতো কোনো জায়গা নেই। মাঝে মাঝে পথিমধ্যে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে যাত্রীদের জিজ্ঞাসা করলেই প্রতিটি বাসই ধরা খেতো। কিন্তু আমাদের কথা কে শুনবে?