এমডি ইলিয়াছ
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় রমজান মাসেও পল্লী বিদ্যুতের লাগামহীন লোডশেডিংয়ে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। এতে করে ধর্মপ্রাণ মুসলিমসহ সর্ব সাধারণ মানুষকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। পবিত্র রমজান মাসে উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লোডশেডিং এ হতা শ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহকরা।প্রচন্ড তাপে যখন জনজী বন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে, একটু সত্বির আশায় নির্বাক হয়ে অপেক্ষা করতে বিদ্যুতে আশায়। কখন কাঙ্ক্ষিত পাকাটি ঘুরবে আর মিলবে একটু প্রশান্তির হাওয়া। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা ও বিদ্যুতে দেখা মিলে না।
জেলার সব কয়টি উপজেলায় একই অবস্থায় হওয়ায় সাধারণ জনগনের মাঝে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ফেইসবুক খুললেই বিদ্যুৎ নিয়ে মানুষের আকুতির স্ট্যাটাস চোখে পড়ার মত।
এদিকে মুসলিম ধর্মের সব চেয়ে পবিত্র মাস মাহে রমজান গিয়ে রোজাদারদের আশা ছিল বিদ্যুতের লোডশেডিং থাকলেও হয়তো ৫ ওয়াক্ত নামাজের সময়, ইফতার ও সেহেরি এবং তারাবীর নামাজের সময় বিদ্যুৎ সেবার মান সহনীয় থাকবে। কিন্ত সেই আশা নিরাশ করেছে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। দিন নেই রাত নেই কেবল আসা-যাওয়ার মধ্যেই থাকে বিদ্যুৎ।
জেলাসহ গ্রাম গঞ্জে লাগামহীন লোডশেডিংয়ের মাত্রা বেড়ে গেছে। গ্রামের কোথাও শিডিউল মানা হচ্ছে না। সাধারণ মানুষ বিদ্যুৎ ভোগান্তিতে পড়ে নাগাল জনজীবন। কোথাও কোথাও দেখা যাচ্ছে বিদ্যুৎ ভোগান্তির কারনে বিদ্যুৎ অফিস ভাংচুর সহ নানান অভিযোগ দিতে। এক্ষেত্রে অভিযোগ ও নানান ক্ষোভ গুলো পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি গুলোর দিকে।এ কারণে মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পমালিকরা বিপাকে পড়ছেন। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ না পাওয়ায় তারা কারখানা চালাতে পারছেন না। ফলে শিল্পোৎপাদনে ধ্বস নেমেছে। দিনের বেলায় বেশিরভাগ কারখানা বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের নিজস্ব জেনারেটর দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে গিয়ে উৎপাদন ব্যয় সামাল দিতে পারছে না। গ্রামে গ্রামে ডিজেল সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে সেচসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যাঘাত ঘটছে।
জেলার সব কয়টি অঞ্চলের সাধারণ মানুষ পল্লী বিদ্যুতে হেল্প লাইন নিয়ে উঠেছে অভিযোগ। শতবার ফোন দিলে কাঙ্ক্ষিত গ্রাহক সেবা পাচ্ছে না কেউ।
রমজানের শুরু থেকে প্রাকৃতিক পরিবেশ অনুকূলে থাকায় তেমন একটা বিদ্যুতের উপর তেমন একটা প্রভাব পড়েনি।
রমজানের শেষদিকে এসে উপজেলাতে চলছে ভয়াবহ লোডশেডিং লক্ষনীয়। প্রচন্ড তাপদাহ গরমের দিনে সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতার ও তারাবির নামাজের সময় সহ রাতে-দিনে বিদ্যুৎ ঠিক মতো না থাকায় চরম কষ্ট পোহাতে হচ্ছে সকলকে।
বেগমগঞ্জ নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম জাকির হোসেনকে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বারবার মুটো ফোন দিলে কল রিসিভ না হওয়া বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয় নাই।
এজিএম কম মাহবুবুর রহমান বলেন আমরা জাতীয় গ্রিড থেকে চাহিদা মোতাবেক বিদ্যুৎ পাই না। এটা জাতীয় গ্রিডের উৎপাদন ভিত্তিক সমস্যা বেগমগঞ্জ প্রতিনিধি কে জানান, প্রতিদিন ১৩২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদা থাকলেও সেখানে ৩০-৪০% বিদ্যুৎ কম পাচ্ছি। দিন রাত মিলিয়ে কত লোডশেডিং হয়, তা চাইলে তিনি বলেন প্রতিদিন ১০-১২ ঘন্টা লোডশেডিং হচ্ছে। রামপাল ও ঘোড়াশাল কেন্দ্রে সমস্যা হওয়ায় ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা আশা করছি ঈদুল ফিতরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়বে, এবং জন ভোগান্তি কমবে।
অভিযোগ কেন্দ্রে ফোন না বিষয়ে তিনি বলেন, ২৪ ঘন্টাই ফোন আসে। ফোন না ধরার বিষয়ে অভিযোগের সত্যতা কিছুটা স্বীকার করেন তিনি।
এদিকে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে কারখানায় উৎপাদন ব্যাহতসহ, ব্যাংক, ব্যবস্যা প্রতিষ্ঠান, বিপনি-বিতান, কম্পিউটার ও বাসা বাড়িতে ফ্রিজে সংরক্ষিত খাবার ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। বিদ্যুতের এমন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ট হয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী সহ বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সচেতন মহল বৃন্দরা।