নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
রাজশাহী দুর্গাপুর উপজেলার তেবিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র জুনায়েদ সিদ্দিক। সে প্রথম শ্রেণির ছাত্র। বাবা রিকশাচালক। প্রতিদিনই ছেঁড়া ব্যাগ ও ভাঙা ছাতা নিয়ে স্কুলে যেতে হয় জুনায়েদকে। অন্যদিকে, করোনা মহামারির জন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে উপবৃত্তির টাকা দেওয়া হয় জুনায়েদের সেই টাকাও যেন কে তুলে নিয়েছে। তাই মন খারাপ করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখেছে সে। সম্প্রতি এমনই একটি চিঠি ফেসবুকে বেশ ভাইরাল হয়েছে।
চিঠিতে জুনায়েদ লিখেছে— আমার উপবৃত্তির টাকা আমি এখনো পায়নি। বাবা বলেছিল উপবৃত্তির টাকা পেলে স্কুল ব্যাগ আর ছাতা কিনে দেবে। কিন্তু আর তা হলো না। স্যারদের মাধ্যমে জানতে পারলাম কেউ আমার টাকা তুলে নিয়েছে। প্রতিদিন আমাকে ছেঁড়া ব্যাগ আর ভাঙা ছাতা নিয়ে স্কুলে যেতে হয়। তাতে আমার কোনো দুঃখ নেই। এরপর যেন এমনটি না হয় এটাই দাবি।
জুনায়েদের চিঠির বিষয়ে তেবিলা সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাফির উদ্দিন বলেন, জুনায়েদের বাড়ি দুর্গাপুর উপজেলার রঘুনাথপুর এলাকায়। তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। সে টাকা না পেয়ে এমনটি করেছে। আসলে তার বাবা একজন রিকশাচালক। সে ছেলেকে নতুন ব্যাগ আর ছাতা কিনে দিতে পারছেন না। ছেলেকে বলেছিল এ টাকা পেলে একটি ব্যাগ ও ছাতা কিনে দেবে। কিন্তু সেটি হয়নি। কেউ তাদের টাকা তুলে নিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, প্রতিটি শিক্ষার্থীকে নতুন পোশাকের জন্য এক হাজার টাকা ও ৬ মাসের উপবৃত্তি ৯শ দেওয়া হয়। কিন্তু তাদের টাকা কেউ তুলে নিয়ে গেছে। প্রতিটি স্কুলেই এমন ঘটেছে। জুনায়েদের সঙ্গেও এমনটি ঘটেছে। তবে এটি নিয়ে আমাদরে কিছু করার নেই।
এ বিষয়ে দুর্গাপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোখলেসুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী বরাবার চিঠি লেখার ঘটনা আমার জানা নেই। আপনার কাছেই প্রথম শুনলাম। তবে সেই স্কুলেরই একজন টাকা না পেয়ে অভিযোগ করেছিল। বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার মিটিং হয়েছে। সেখানে এ বিষয়ে কথা বলা হয়েছে। তবে, হ্যাক হয়ে যাওয়া টাকা আর নতুন করে দেওয়া হবে না। যাদের অন্য সমস্যা হয়েছে তারা এ টাকা পাবে।
তবে, বিষয়টি নজরে এসেছে উপজেলা প্রশাসনের। দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সোহেল রানা বলেন, আমার ও জেলা প্রশাসকের নজরে এসেছে বিষয়টি। আমরা এ বিষয়ে শনিবার জুনায়েদকে ডাকবো এবং তার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।