বাকেরগঞ্জ প্রতিনিধি-
বরিশালের বাকেরগঞ্জে ডাকাতি, হত্যা ও অস্ত্র মামলাসহ প্রায় দুই’ডজন মামলার আসামী ডাকাত বাবুল ফের বেপরোয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বখাটে পুত্রের পক্ষাবলম্বন করে একজনের উপর হামলা করে তাকে আহত এবং হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।রবিবার (২৩ অক্টোবর) উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় আহত মোঃ সেন্টু মৃধা বাদি হয়ে ডাকাত বাবুল আকন ও তার পুত্র শান্ত আকনসহ ১০-১১ জনের নামে বাকেরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের সেন্টু মৃধার সাথে গত ৪-৫ দিন আগে পশ্চিন শ্যামপুর গ্রামের নুরু মোল্লার পুত্র জুয়েল মোল্লার সাথে সামান্য কথাকাটাকাটি হয়। তার জের ধরে জুয়েল মোল্লা রবিবার সকাল সাড়ো ৯ টার সময় ডাকাত বাবুলের পুত্র শান্ত আকন সহ ৪-৫ জন ভাড়াটে মস্তান নিয়ে শ্যামপুর মোল্লা বাড়ির সামনে বসে তাকে এলোপাথারী পিটিয়ে জখম করে। সেন্টুর ডাকচিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করেন।
একই দিন বেলা ১২:৪০ এর সময় শান্ত তাহার পিতা বাবুল ডাকাতসহ ১০-১১ জন লোক ও অস্ত্র নিয়ে রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের শ্যামপুর গ্রামের বড় বাড়ির সামনের তিন রাস্তার উপর বসে সেন্টু ও তার পরিবারকে অকথ্যভাষায় গালাগাল করে এবং তাকে পিস্তল দিয়ে গুলি করে খুন করার হুমকি দেয়।এতে আহত সেন্টু ও তার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সুদৃষ্টি ও সহযোগীতা করেছেন।
গোপন সূত্রে আরো জানাজায়,বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন সময় আলোচিত চুরি,ডাকাতি,হত্যা ও অস্ত্র মামলারসহ প্রায় চব্বিশটির অধিক মামলার আসামী বাবুল আকন (ডাকাত বাবুল)।বাকেরগঞ্জের এই ডাকাত বাবুলের রয়েছে একটি আন্তঃজেলা ডাকাত বাহিনী। তার নেতৃত্বে মোটা অংকের লেনদেনের মাধ্যমে বিভিন্ন জেলা উপজেলায় হত্যা ডাকাতিসহ বড় ক্রামই কর্মকান্ড পরিচালনা করেন এই বাবুল বাহিনী।
বাকেরগঞ্জ উপজেলার আলোচিত বিভিন্ন সময় ঘটে যাওয়া অপরাধ মুলক কাজের মূল হোতা বাবুল আকন। উপজেলার পাদ্রিশীবপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম হারুন বাশারের ভাগিনা আলম হত্যার অন্যতম আসামী বাবুল আকন।
উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের এসপি বাজারে ডাকাতির প্রস্তুসকালে বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ততকালীন অফিসার ইনচার্জ সাইফুর রহমানের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনার সময় অফিসার ইনচার্জ সাইফুর রহমানকে হত্যার উদ্দেশ্য গুলি করেন ডাকাত বাবুল। দীর্ঘ এক ঘন্টা বন্দুক যুদ্ধের পর বাবুলের পায়ে গুলি করে তাকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করেন বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশ। বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশ তাকে ডাকাতি ও অস্ত্র মামলায় কোর্টে প্রেরণ করেন। দীর্ঘদিন জেল খেটে জামিনে বের হয়ে পূনরায় আবার সক্রিয় হয়ে ওঠে বাবুল বাহিনী।
কলসকাঠী বাজারে ডিবি পরিচয়ে সোনার দোকান ডাকাতির সময় বাজরে কর্তব্যরত টহল পুলিশের দ্বায়িত্বে থাকা এএসআই জসিম এর উপর হামলাকারী এই বাবুল।ওই মামলায় দীর্ঘসময় জেল হাজতে থাকার পরে নিজের অপকর্মকে আড়াল করতে তিনি কৌশল পরিবর্তন করেন।স্থানীয় ইউপি সদস্য নির্বাচনে অংশ গ্রহন করে সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি দেখিয়ে তিনি ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
মেম্বার নির্বাচিত হবার পরে তিনি অন্ধকার থেকে আলোর মুখ দেখতে শুরু করেন। দিনের আলোতে ইউপি সদস্য তিনি রাতের আঁধারে ডাকাত ও মাদক সেন্ডিকের প্রধান তিনি। তিনি নির্বাচিত হবার পরে ইউনিয়ন জুড়ে চালাচ্ছে দেদার মাদক সিন্ডিকেট রামরাজত্ব। তার মাদক রাজ্যে একাধিক ডাকাতি ও মামলার আসামী পাদ্রিশীবপুর ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের আলমগীর ও রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের পশ্চিম শ্যামপুর গ্রামের ইউনুস হাওলাদার এর পুত্র সফিকুল’রা প্রধান।
এই ডাকাত বাবুল বাহিনীর হাত থেকে বাঁচতে আহত সেন্টু ও তার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সুদৃষ্টি ও সহযোগীতা করেছেন।