রাজশাহী ব্যুরোচীফঃ
রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের জাল সনদে চাকরিরত শিক্ষকদের তালিকা প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা বিভাগ (ডিআইএ)। ডিআইএ ২০১৩ সাল থেকে ২৫ মে পর্যন্ত সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন ও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে।
মোট ১ হাজার ১৫৬ জন শিক্ষ কের শিক্ষাগত এবং যোগ্যতার জাল সনদ বলে তথ্য পেয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলার পাঁচ জন জাল সনদে সরকারী বেতন নিচ্ছেন ও বহাল তবিয়তে শিক্ষকতা করছেন বলে জানা যায়।
ডিআইএর তথ্য মতে প্রকাশ বাঘার মোঃ কামরুজ্জামান সহকারী শিক্ষক (শরীর চর্চ), আড়ানী মনমোহন উচ্চ বিদ্যালয়। তিনি বাঘা উপজেলা যুব লীগের সভাপতি পদেও রয়েছেন। (১৬৯) মোসা: জেসমিন আক্তারী,
সরকারি শিক্ষক (সমাজ বিজ্ঞান) চকরাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়, (১৯০) মোঃ জাফর ইকবাল, সহকারী শিক্ষক (শরীর চর্চ) বাঘা উচ্চ বিদ্যালয়, (উপ-পরিচালক আইসিটি রাজশাহী বিভাগ আঞ্চলিক ও বাঘা উপজেলা ক্রিয়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক পদেও রয়েছেন তিনি, (১৯১) অনুপ কুমার সরকার,
সহকারী শিক্ষক (হিন্দুধর্ম) বাঘা উচ্চ বিদ্যালয়, (১৯২) মোঃ আশরাফুল ইসলাম, সহকারী শিক্ষক (সমাজ) বাঘা উচ্চ বিদ্যালয়। সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বাঘা উপজেলার পদেও রয়েছেন তিনি।
পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) অনুসন্ধানে এসব জাল সনদধারীর তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের বেতনের টাকা ফেরত নিতে এরই মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করেছে ডিআইএ।
জাল সনদ দেখিয়ে চাকরি অথবা এমপিওভুক্ত হওয়া শিক্ষকদের কাছ থেকে মোট কত টাকা ফেরত নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে, তা জানা যায়নি। তবে কয়েকটি বিভাগের তথ্য পাওয়া যায়। যেমন খুলনা ও বরিশাল বিভাগে জাল সনদে শিক্ষক হয়ে বেতন নেওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রায় ১৫ কোটি টাকা ফেরত নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা ডিআইএ শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন এবং আর্থিক স্বচ্ছতা আনতে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শন ও নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় সুপারিশ করে। ডিআইএর পরিচালক অধ্যাপক অলিউল্লাহ মো. আজমতগীর বলেন, ডিআইএর পক্ষ থেকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
ডিআইএর প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে জাল সনদধারী শিক্ষক আছেন ৪৪৩ জন, তাদের মধ্যে স্কুল-কলেজে কর্মরত ৩২৩ জন। মাদরাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানে আছেন ১২০ জন।
ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগে জাল সনদে শিক্ষকতা করছেন ৩৬৬ জন, তাদের মধ্যে স্কুল ও কলেজে কর্মরত ২৫৬ জন, যাদের কাছ থেকে ১১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ফেরতের সুপারিশ করা হয়েছে।
এ দুই বিভাগের মাদরাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন ১১০ জন, যারা ৪ কোটি ৩৫ লাখেরও বেশি টাকা জাল সনদে এমপিও বাবদ আত্মসাৎ করেছেন।