প্রথম বাংলা – বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস ও জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তা-কর্মচারীর আরও ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর গোয়েন্দা- লালবাগ বিভাগ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- ডিজিএম সিকিউরিটির এমটি অপারেটর মোঃ মাসুদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও অফিসের এমএলএসএস মোঃ জাহিদ হাসান, পরিচালক প্রশাসন অফিসের এমএলএস এস সমাজু ওরফে সোবাহান, ওয়ার্কশপ হেলপার মোঃ জাবেদ হোসেন এবং ফ্লাইট অপারেশনের এমএলএসএস মোঃ জাকির হোসেন।
এর আগে গোয়েন্দা পুলিশ এ ঘটনায় গত ২১ অক্টোবর ২০২২ খ্রি. আওলাদ হোসেন, মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, এনামুল হক, মোঃ হারুন-অর-রশিদ ও মাহফুজুল আলম নামের আরও ৫ জনকে গ্রেফতার করেছিলো।
আজ বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর ২০২২) সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।
তিনি বলেন, গত ২১ অক্টোবর ২০২২ খ্রি. বিকাল ০৩.০০ ঘটিকার সময় বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্স লিমিটেড এর ১২টি পদে নিয়োগ পরীক্ষা ছিল। এর আগের দিনেই মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সের কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারী প্রশ্নপত্র ফাঁস করে। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে কর্তৃপক্ষ নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করে। ফলে নিয়োগ প্রার্থীরা উত্তরাস্থ হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজ সংলগ্ন রাস্তা অবরোধ করে অনুমান ২ ঘন্টা যাবৎ বিক্ষোভ করে, যার কারণে রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয় এবং আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটে। পরবর্তীতে এ সংক্রান্তে বিমানবন্দর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা রুজু হয়, যার দায়িত্ব দেওয়া হয় ডিবি পুলিশকে।
ডিবি প্রধান বলেন, তদন্তের সূত্র ধরে ওই দিনেই গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সের ৫ কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তী সময়ে তাদের দেওয়া তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় ফরিদপুর, গাজীপুর ও বিমানভবন থেকে আরও ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, এ পর্যন্ত তাদের হেফাজত থেকে ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র বিক্রির ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, নিয়োগ প্রার্থীদের নিকট থেকে নেওয়া বিভিন্ন ব্যাংকের ৩২টি চেক, ১৭ টি নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প, ১৪টি স্মার্ট ফোন, মালিকানাবিহীন একটি মোটরসাইকেল, টাকার হিসাব রাখা ৩টি ডায়েরি, ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রের হার্ড ও সফটকপি এবং নিয়োগ প্রার্থীদের ৫৪ টি প্রবেশপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
গোয়েন্দা তথ্য, ডিজিটাল অ্যানালাইসিস, পুলিশ ও বিজ্ঞ আদালতের নিকট গ্রেফতারকৃতদের প্রদত্ত জবানবন্দি এবং সাক্ষ্য প্রমাণে দেখা যায় এ চক্রটি বেশ কয়েক বছর ধরে এ নিয়োগ বাণিজ্য ও প্রশ্নপত্র ফাঁস করার ঘটনায় জড়িত। এ নিয়োগের প্রশ্নপত্র জিএম অ্যাডমিনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ফটোকপি হচ্ছিল ডিরেক্টর অ্যাডমিনের রুমে। গ্রেফতারকৃত ৯ জন বিজ্ঞ আদালতে এই নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কীভাবে পেয়েছে এবং প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা কীভাবে সংগঠিত করেছে সে মর্মে স্বীকারোক্তি প্রদান করেছে মর্মে যোগ করেন তিনি।
ডিএমপি’র গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান বিপিএম-বার, পিপিএম এর নির্দেশনায়, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার হাসান আরাফাত বিপিএম, পিপিএম এর তত্বাবধানে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার সামছুল আরেফীন, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার সাইফুল আলম মুজাহিদ এবং সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ ফজলুর রহমান বিপিএম-বার, পিপিএম এর নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।
সুত্র, ডিএমপি নিউজ