প্রথম বাংলা – ময়মনসিংহ নগরীর নিরালা রেষ্ট হাউজে তরুনী হত্যা ও ধোবাউড়ায় কিশোরী ধর্ষণশেষে হত্যাকা ন্ডের পৃথক ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে ময়মনসিংহ পুলিশ। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে স্বীকারোক্তি প্রদান করেছে।গ্রেফতারকৃতরা হলো,রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও ইউসুফ এছাড়া অপরজন অপ্রাপ্ত বয়স হওয়ায় পুলিশ তার নাম ঠিকানা প্রকাশ করেনি। পুলিশ সুপার মাছুম আহামেদ ভুঞা মঙ্গলবার ২১ মার্চ এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার বলেন, ময়মনসিংহ নগরীর ছোট বাজার এলা কার নিরালা রেষ্ট হাউজ নামক একটি আবাসিক হোটেলে গত ইং ১৮ মার্চ অজ্ঞাতনামা এক তরুনীর লাশ উদ্ধার করে কোতোয়লী মডেল থানা পুলিশ।এ ঘটনায় পুলিশ জানতে পায়,গত ১৪ মার্চ মধ্যরাতে নিরালা রেষ্ট হাউজে তরুন তরুনী স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে চারদিনের জন্য রুম ভাড়া নেয়। ১৮ মার্চ দুপুরে রেষ্ট হাউজের রুম তালাবদ্ধ পেয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে অবহিত করে। হোটেল কর্তৃপক্ষ পুলি শের সহায়তায় ঐ রুমের তালা অপসারন করে বাথরুম থেকে তরুনীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে।পুলিশ জানান, হোটেলের সিসি ক্যামেরা পর্যালোচনায় দ্রুততম সময়ে তরুনীর সঙ্গীয় অভিযুক্তকে সনাক্ত করে পুলিশ।কোতো য়ালী পুলিশ ১৯ মার্চ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া থেকে অভিযুক্ত রাকিবুল ইসলাম রাকিবকে গ্রেফতার করে তার বাড়ি গজারিয়ার চরচাষি গ্রামে।গ্রেফতাকৃত রাকিবের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার আরো বলেন,জিজ্ঞাসাবাদে রাকিব জানায়,গত ১৪ মার্চ সন্ধ্যায় মিরপুর শেওড়াাপাড়া এলাকা থেকে ঐ তরুনীকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য ৫হাজার টাকায় ভাড়া করে ময়মনসিংহে নিয়ে আসে।যথারীতি নিরালা রেষ্ট হাউজে রাত্রীযাপন করে তরুনীকে বিদায়ের সময় টাকা কম দেওয়াতে দুজনের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়।এক পর্যায়ে ঐ তরুনী উক্ত ছেলেকে চর-থাপ্পড় দেয় ছেলেটি বিকাশে ক্যাশ আউট এর কথা বলে বাইরে গিয়ে নগরীর স্বদেশী বাজার এলাকার একটি দোকান থেকে ১ শত টাকা মূল্যে ১টি চাকু কিনে আবারো হোটেলে যায় এবং তরুনীকে বাথরুমে নিয়ে চাকু দিয়ে গলায়,দুই হাতের কব্জিতে রক্তাক্ত জখম করে হত্যা করে রুমে তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যায়।রাকিবকে আদালতে পাঠানো হলে সে তরুনীকে গলা কেটে হত্যা করেছে মর্মে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে।
সে আরো জানায় লেখাপড়ার পাশাপাশি সমাজ সেবা কার্যালয়ে আউট সোর্সিং এর কাজ করতো নিহত তরুণীর পরিচয় এখনো সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি পুলিশ তার পরিচ য় সনাক্তের চেষ্টা করছে।অপরদিকে ধোবাউড়া উপজেলা র কলসিন্দুর গ্রামে এগারো বছর বয়সের শিশু নুসরাত জাহান মীমকে গণধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে দুই ধর্ষক ও হত্যাকারীকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ।গ্রেফতারকৃ তদের মধ্যে একজন ইউসুফ এবং অপরজন অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় পুলিশ তার নাম প্রকাশ করেনি।পুলিশ সুপার জানান,ধোবাউড়ার কলসিন্ধুর গ্রামের খোকন মিয়ার মেয়ে নুসরাত জাহান মীম (১১) গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি খোজাখুজি করাকালে রাত সাড়ে আটটার দিকে পার্শ্ববর্তী নিতাই নদীতে নুসরাত জাহা ন মীমের লাশ ভাসমান অবস্থায় পায়।পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে। লাশের গোপনাঙ্গসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহৃ পায় এ ঘটনায় নিহতের পিতা খোকন মিয়া ধোবাউড়া থানায় মামলা নং-১১,তারিখ-২০/০৩/২০২৩ ইং,ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশো ধনী/২০০৩) এর ৯(৩)/৩০ তৎসহ পেনাল কোড ২০১ দায়ের করে।নিহত নুসরাত জাহান মীম সোহাগীপাড়া নুরানী মাদ্রসার ৩ শ্রেণীর ছাত্রী ছিল।
এ জঘন্যতম,ঘৃণ্য ও নৃশংস হত্যাকান্ডের রহস্য দ্রুততম সময়ে উদ্ধার এবং ধর্ষক ও খুনীচক্রকে গ্রেফতারে পুলিশ সুপারের নির্দেশে ডিবি পুলিশ মাঠে নামে।ডিবি পুলিশের টানা অভিযানে ধর্ষক মোঃ ইউসুফ আলী (২০) ও আইনের সহিত সংঘাতে জড়িত একজন শিশুকে ধোবাউড়া থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।পুলিশ সুপার আরো বলেন, গ্রেফতারকৃ তরা কলসিন্ধুরসহ আশেপাশের এলাকার স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্রীদের ইভটিজিং করে থাকে বলে জনশ্রু তি রয়েছে। ইউসুফ জিজ্ঞাসাবাদে জানায়,যৌন কামবাসনা চরিতার্থ করার জন্য ইউসুফ (২০) ও আটককৃত শিশু পরি কল্পিতভাবে ১৮মার্চ সন্ধ্যায় নুসরাত জাহান মীমের বাড়ির পার্শ্ববর্তী স্থানে অন্ধকারে উৎপেতে থাকে। মীম বাড়ি থেকে বের হলে ইউসুফ এবং ঐ শিশুটি তাকে মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক পার্শ্ববর্তী কলা বাগানে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।ধর্ষণশেষে নুসরাত জাহান মীমকে শ্বাসরোধে হত্যা করে নেতাই নদীতে লাশ ভাসিয়ে পালিয়ে যায় গ্রেফতারকৃতরা আদালতে স্বীকারোক্তি প্রদান করেছে।