নূর মোহাম্মদঃ
লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে পঞ্চাশ হাজার টাকা চাঁদা না দেয়ায় দিনে দুপুরে গাছের সাথে ব্যবসায়ীকে বেঁধে রেখে মৎস্য খামারে বিষ দিয়ে ১০ মন মাছ মেরে ফেলা, টং ঘর পুড়িয়ে ফেলা, জাল কেটে নষ্ট করা, বিভিন্ন ফলের গাছ কেটে ফেলা ও মাছ লুটের অভিযোগে পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে রামগতি উপজেলার পূর্ব চরসীতা এলাকার মৃত নুরুল ইসলামের পুত্র মাহমুদুল হাসান বাদী হয়ে একই এলাকার মৃত মোজাম্মেল হকের পুত্র মো: মোক্তার আহাম্মদ (৫৫) কে ১নং আসামী ও আরও ১১ জনের নাম উল্লেখসহ ১৫/২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে ২০ সেপ্টেম্বর লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী অঞ্চল রামগতি আদালতে মামলা দায়ের করেন।
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে রামগতি থানার অফিসার ইনচার্জকে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দেয়ার জন্য আদেশ দেন। মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন, একই এলাকার সাহাব উদ্দিনের পুত্র ফয়সাল (২৫), নুরুল আমিনের পুত্র আরিফ হোসেন (২৭), মোশারফ হোসেনের পুত্র বাবুল (৪৫), মৃত মোবারক উল্যাহের পুত্র সাহাব উদ্দিন (৫০),
আনার উল্যাহর পুত্র নুরুল আমিন (৫৫), মৃত হোসেন আহাম্মদের পুত্র আবদুর রশিদ (৪৫), মৃত তোফায়েল আহম্মেদের পুত্র মো: আমিন (৫৫), মৃত বাদশা মিয়ার পুত্র আবুল বাশার (৪৮), মৃত আব্দুস সাত্তারের পুত্র রুবেল (৩৩) ও মোক্তার আহাম্মদের স্ত্রী সুলতানা আক্তার পান্না (৪২)।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, পৈত্রিক সম্পত্তিতে খামার করে মৎস্য চাষে লাভবান হওয়ায় আসামিরা ইর্ষান্বিত হয়ে দীর্ঘদিন যাবত মাহমুদুলের নিকট পঞ্চাশ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে আসছিলো। দাবীকৃত চাঁদা না দেয়ায় আসামীরা গত ১৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে লাঠিসোটা, বিষের বোতল,
কেরোসিনের বোতল, দিয়াশলাই ও দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে মাহমুদুলের মৎস্য খামারে আক্রমন করে মাহমুদুলকে গাছের সাথে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে। এ সময় আসামীরা বিষ ঢেলে মৎস্য খামারের রুই, পাঙ্গাস, কার্প, তেলাপিয়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির ১০ মণ মাছ মেরে ফেলে প্রায় এক লক্ষ টাকা ক্ষতি করে। এছাড়া কেরোসিন ঢেলে দিয়াশলাই দিয়ে আগুন লাগিয়ে খামারের টং ঘর পুড়িয়ে চল্লিশ হাজার টাকার ক্ষতি করে।
খামারে থাকা ২০ বস্তা মাছের খাদ্য জলাশয়ে ফেলে দিয়ে পঁয়ত্রিশ হাজার টাকা, মাছের ঘেরের ১০০০ ফুট জাল কেটে পনের হাজার টাকা, খামারের নারিকেল, সুপারি ও বিভিন্ন ফল ফলাদির প্রায় ৫০টি গাছ কেটে পঞ্চাশ হাজার টাকা ক্ষতি করে এবং খামারের মাছ লুট করে নিয়ে যায়।
চলে যাওয়ার সময় আসামিরা এ ঘটনা কারো কাছে বললে মাহমুদুল হাসানকে প্রাণে হত্যার হুমকি দিয়ে যায়। ২৫/৩০ সদস্যের একটি গ্রুপ একত্রিত হয়ে ভুক্তভোগী মাহমুদুলের মৎস্য খামারে আক্রমণ করে মাছ মেরে, লুট করে, গাছ কাটিয়া, মাছের খাদ্য নষ্ট করিয়া, মাছ ঘেরের নেট কাটিয়া, টং ঘর জ্বালাইয়া প্রায় দুই লাখ চল্লিশ হাজার টাকা ক্ষতিসাধন করে বলে মামলায় অভিযোগ আনা হয়।
অভিযোগের বিষয়ে মামলার ১নং আসামি মো: মোক্তার আহাম্মদের বক্তব্য নেবার জন্য তার মুঠোফোনে ফোন করলে তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
প্রকাশ্য দিবালোকে মাহমুদুল হাসানের মৎস্য খামারে ত্রাস সৃষ্টি করে লুটপাটের ঘটনায় স্থানীয়ভাবে অসন্তোস বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।