নিজস্ব প্রতিবেদক
শরীয়তপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে হাইকোর্টে তলব,
জামিনে থাকা ছিনতাই মামলার আসামিদের কারাগারে পাঠানো এবং রিমান্ড আবেদনের শুনানির তারিখ দেওয়া আদেশের ব্যাখ্যা জানতে এবার শরীয়তপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আল-ইমরানকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।
আগামী ২০ অক্টোবর সশরীরে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে তাকে। সেদিন শরীয়তপুরের নড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির ও একই ঘটনায় পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানকে আদালতে হাজির থাকতে বলা হয়েছে। এ ঘটনায় সামিয়ক বরখাস্ত করা হয়েছে এ দুই পুলিশ কর্মকতর্তাকে।
বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ রবিবার এ আদেশ দেন।জামিনে থাকা ছিনতাই মামলার আসামিদের আটক, নির্যাতনের পর গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তুলে রিমান্ডে নেওয়ার অভিযোগের ব্যাখ্যা জানতে গত ১৩ জুন হাইকো র্ট শরীয়তপুরের দুই পুলিশ কর্মকর্তা ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে তলব করেন।গত ২৪ জুলাই সে তলবে হাজির তারা। চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ব্যাখ্যায় সেদিন বলা হয়,জামিনের আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ তিনি দেননি।
দিয়েছিলেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আল-ইমরান।
আর শরীয়তপুরের নড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির ও একই ঘটনায় পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের ব্যাখ্যায় বলা হয়, আসামিরা যে জামিনে আছেন, সে তথ্য তাদের কাছে ছিল না। আর আসামিদের গ্রেপ্তারে তাদের ব্যক্তিগত কোনো স্বার্থ ছিল না। আর তাদের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের জন্য তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এ ব্যাখ্যা শোনার পর হাইকোর্ট শরীয়তপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়ে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আল-ইমরানের আদেশ তলব করেন। সে ধারাবাহিকতায় রবিবার (৬ আগস্ট) আদেশটি হাইকোর্টে উপস্থাপন করা হয়।
আদালতে শরীয়তপুরের মুখ্য মহানগর হাকিমের ব্যাখ্যা ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশটি উপস্থাপন করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী। পুলিশ কর্মকর্তা রাসেল মনির ও শেখ মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের নিঃশর্ত ক্ষমার আবেদন করেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক। আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান।
আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক দুই পুলিশ কর্মকর্তার পক্ষে নিঃশর্ত ক্ষমার আবেদন করলে আদালত বলেন, এখন আর নিঃশর্ত ক্ষমার সুযোগ নেই। হাইকোর্টকে এখতিয়ার ও ক্ষমতার মধ্যে থাকতে দিন। হাইকোর্টের মর্যাদা রক্ষা করুন। এরপর আদালত আদেশ দেন।
আইনজীবী মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন ‘গত ২৯ মে আসামি সাদ্দাম, বকুল, সাইদুল উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিনে নেন।জামিনের একদি ন পর তাদের গ্রেপ্তার করে ১ জুন আদালতে হাজির করা হয়।পরদিন অর্থাৎ ২ জুন পদ্মাসেতু দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) সুরুজ উদ্দিন আসামিদের শরীয়ত পুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আল-ইমরানের আদালতে হাজির করে তাদের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। ম্যাজিস্ট্রেট আল-ইমরান আসামিদের কারাগারে পাঠিয়ে রিমান্ড আবেদনটি ৪ জুন শুনানির জন্য রাখেন।
পরে ৪ জুন তিনি রিমান্ড আবেদন খারিজ করে আসামি দের জামিন দেন এ আদেশটি পর্যালোচনা হাইকোর্ট এ ম্যাজিস্ট্রেটকে তলব করেছেন।আগামী ২০ আগস্ট তাকে আসতে বলা হয়েছে।’হাইকোর্ট জামিন দেওয়ার পর কো নো এখতিয়ার বা ক্ষমতাবলে এই ম্যাজিস্ট্রেট আসামিদের কারাগারে পাঠানো ও রিমান্ড আবেদন শুনানির তারিখ নির্ধারণ করে আদেশ দিয়েছেন, সে ব্যাখ্যা জানতেই তাকে তলব করা হয়েছে বলে জানান এই আইনজীবী।