March 18, 2025, 8:29 pm
শিরোনামঃ
ফিরে দেখো ২০০১- ২০০৬ সালে বিএনপি জামাতের শাসনামল ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দিদের ওপর অমানবিক নির্যাতন ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার ১৬ শ্রীকৃষ্ণের শিক্ষা আমার পথ দেখিয়েছে: তুলসী গ্যাবার্ড ৩৮ লক্ষাধিক ৭৭,১০০ ভারতীয় রুপির জাল নোট ও বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধারসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে ডিবি বাম ছাত্র নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা, ছাত্রদলের প্রতিবাদ বিমানবন্দরে গ্রেফতার লিবিয়ায় মানব পাচারকারী মাফিয়া প্রধান ফখরুদ্দিন ময়মনসিংহ বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুব্রত রায়ের বিরুদ্ধে ঘুষ, দূর্নীতি ও অনিয়মের  অভিযোগ হিজবুত তাহরীরের সক্রিয় সদস্য মোনায়েম হায়দারকে গ্রেফতার করেছে সিটিটিসি বসুন্ধরা শপিংমলের সামনে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের সাথে একত্রে বসে ইফতার করলেন ডিএমপি কমিশনার
নোটিশঃ
আপনার আশেপাশের ঘটে যাওয়া খবর এবং আপনার ব্যবসার বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য যোগাযোগ করুন মানবাধিকার খবরে।

সরকারের সব প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত, অভিযানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আজো চলছে দখলের এক মহাউৎসব

Reporter Name

জনগনেরকন্ঠস্বর”

রাতের আঁধারে বালু ভরাট করে দখলের ফাঁদে ফেলে গরিব কৃষকদের বাধ্য করেন নামমাত্র মূল্যে জমি বিক্রি করতে। ভূমিখেকো ইবরাহীম মিয়া সুজন ও তার সহকর্মীরা।

রাতারাতি হারিয়ে গেলো কেরানীগঞ্জের হাজার হাজার কৃষি জমিসহ সরকারি খালবিল, অবৈধভাবে জোরপূর্বক বালু ভরাট করে স্থানীয়দের জমি দখল করে নিচ্ছে একটি আবাসন কোম্পানি (আটি মডেল টাউন/সুজনের হাউজিং), যাদের কাছে চলে না কোনো সরকারি আইন ও নিষেধাজ্ঞা।

মাত্র বছর দেড়েক আগেও ঢাকা নগরীর গা ঘেঁষা কেরানীগঞ্জে র আঁটিবাজার থেকে বলসতাবামনসুর থেকে কাশিমালতা পর্যন্ত বিশাল এই অঞ্চলজুরে ছিল শত-শত ফসলি জমি, বিভিন্ন খামার, সরকারি খালবিল ও রাস্তাঘাট। তিন ফসলি এসব জমি থেকে উৎপাদিত টাটকা শাকসবজি, মাছ এবং ফলমূল চাহিদা মেটাত রাজধানীর মানুষের। তবে এখন সেসব ফলস ও কৃষিজমি গুলো ঢাকা পরেছে দখলদার বাহিনীর ইট বালু দিয়ে।

এসব জায়গা দখলে নিয়েছে আঁটি মডেল টাউন নামের একটি আবাসন প্রতিষ্ঠান। স্থানীয় মানুষের কাছে যা সুজনের হাউজিং নামে পরিচিত।সরকারের সব প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত, অভিযানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আজো চলছে দখলের এক মহাউৎসব। রাতের আঁধারে বালু ভরাট করে দখলের ফাঁদে ফেলে গরিব কৃষকদের বাধ্য করেন নামমাত্র মূল্যে জমি বিক্রি করতে।

স্থানীয়রা একজোট হয়ে প্রতিবাদ করার চেষ্টা করেও কোন লাভ হয়নি। কারণ পুলিশ থেকে সাংবাদিক, চেয়ারম্যান থেকে এমপি পর্যন্ত সব প্রভাবশালীরাই নাকি সুজনের পক্ষে। এ ছাড়া সুজন দেশের একজন প্রভাবশালী রাজনীতিকের নাতি পরিচয় দেন। ফলে সাধারণ মানুষ ভয়ে আর এগোতে চান না।’

সরেজমিনে নতুন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় প্রতিদিনই দখলকৃত জায়গার পরিমাণ বাড়ছে। মাইলের পর মাইল, যতদূর চোখ যায় শুধু বালু।নতুন নতুন এলাকা যুক্ত হচ্ছে এই ভরাটের তালিকায়। হাউজিং এলাকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সুজনের মোটরসাইকেল বাহিনী। জানা যায় ২০২১ সালের শেষের দিকে আঁটিবাজারের আশপাশের সব ফসলি জমিতে বালু ফেলা শুরু করেন সুজন, যার পরিধী বেড়ে এখন প্রায় হাজার একরেরও বেশী হয়েছে।

স্থানীয়রা বলেন সুজন যেই এলাকায় ছোবল মারেন আগে সেই এলাকার প্রভাবশালী ও ক্যাডার মাস্তানদের টাকা দিয়ে তার কন্ট্রোলে নিয়ে আসেন এবং সাধারণের মধ্যে যারা একটু প্রতিবাদি স্বরের হয়ে থাকেন তাদেরকেও প্রলোভন দিয়ে তার পক্ষে করে নেয়, যারা নিজেদের শক্ত অবস্থানে থাকার চেষ্টা করেন তারা বাকিদের রোষাণলে পড়ে চুপসে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায়ই থাকেনা। তারপর থেকেই শুরু হয় নিরীহ মানুষের উপর ভূমিখেকো ইবরাহীম মিয়া সুজনের ত্রাশের রাজত্ব।

আঁটিবাজার এবং আশপাশের এলাকা ঘুরে অসংখ্যভুক্তভোগীর দেখা পাওয়া গেছে, যারা হারিয়েছেন বাপ-দাদার ভিটে ও কৃষি জমি। অনেকে প্রতিবাদ করলেও ভূমিদস্যুদের সঙ্গে টিকতে না পেরে এলাকাছাড়া হয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন প্রবাসী, ডাক্তার সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষও আঁটি মডেল টাউনের দখলের প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানাতে গিয়ে ভুক্তভূগীরা বলেন- রাতের আঁধারে জমির মালিকের অনুমতি ছাড়াই বালু দিয়ে ভরাট করে ফেলা হয় জমিগুলো। কমিশনের বিনিময়ে এসব ড্রেজার/পাইপ দিয়ে সহযোগিতা করেন ক্ষমতাশীল দলের কিছু স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, আর এসকল কাজে সহযোগীতা করে সুজন থেকে মাসোহারা পাওয়া এলাকারই কিছু দালালচক্র,

ফলে সাধারণ মানুষ পড়ে যান বিপাকে,তারা হয়ে পড়েন অসহায় অনেকে রোপন করা ফসল তোলারও সুযোগ পান না, ফসলের উপরেই বালু ফেলা হয়। পরে প্রতিবাদ করলে বালু ভরাট বাবদ শতাংশপ্রতি তিন লাখ থেকে ৫লাখ টাকা দাবি করেন। পাশাপাশি হাউজিংয়ের রাস্তা বাবদ ২৫ ভাগ জমি ছেড়ে দিতে বলা হয়। এ ছাড়া গ্যাস, বিদ্যুৎ এবং পানির লাইন বাবদ দাবি করা হয় বিপুল অঙ্কের টাকা। এবং চারপাশের জমি ভয়ভীতি দেখিয়ে বা নাম মাত্র মূল্যে দখল করে সকল সুযোগ সুবিধা বন্ধ করে দিয়ে এরপর বলা হয় আমরা আপনাকে উচ্ছেদ করব না। আপনি আপনার জায়গায় থাকেন, কিন্তু এখানে থাকতে হলে আমাদের এই নিয়ম মেনেই থাকতে হবে এভাবে অসহায় কৃষকদের জমি থেকে উচ্ছেদ করা হয়।

খোদ রাজধানীর পাশে হাউজিংয়ের নামে এমন অবৈধ কার্যক্র মে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন নগর পরিকল্পনাবিদরাও। তারা বলছেন,রিয়েল এস্টেট আইন,ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ), জলাধার সংরক্ষণ আইন, ইমারত নির্মাণ আইন ও পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে প্রশাসনের নাকের ডগায় এমন দখলের উৎসব চলছে।

সরকারি এতোগুলো সংস্থা থাকতে অনুমোদনহীন একটি আবাসন প্রতিষ্ঠান কীভাবে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে? সংস্থাগুলোর রহস্যজনক নীরবতায় প্লট কিনে নিঃস্ব হচ্ছে। সাধারণ মানুষ রাজউক সূত্রে জানা যায়,ঢাকা জেলার কেরানী গঞ্জ উপজেলাটি রাজউকের আওতাধীন। এই এলাকায় রাজউক অনুমোদিত কোনো আবাসন কোম্পানি নেই।

এ ছাড়া বেসরকারিভাবে কোনো আবাসিক প্রকল্প নিতে হলে রাজউক থেকে নকশাসহ অনুমোদন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।এ ছাড়া পরিবেশ অধিদপ্তর থেকেও নিতে হয় ছাপড়ত্র রাজউকের পক্ষ থেকে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকবার১৫টি কোম্পানিকে নির্দিষ্ট করে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বালু দিয়ে প্রকল্প এলাকা ভরাট ও প্লট বিক্রির বিজ্ঞাপন বন্ধ করতে হবে। ওই ১৫টি কোম্পানির মধ্যে আঁটি মডেল টাউন অন্যতম। তবে রাজউকের সেই সিদ্ধান্তকেও বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দিনের পর দিন বালু ভরাট করে চলছে। বিক্রি করা হচ্ছে প্লটও।

সরেজমিনে দেখা যায়, পুরো হাউজিংয়ে বিভিন্ন শ্রেণির প্লট তৈরি করা হয়েছে। কাঠাপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ত্রিশ লাখ থেকে সত্তর লাখ টাকা পর্যন্ত। আড়াই কাঠা, ৩ কাঠা, ৫ কাঠা এবং এরচেয়ে বেশি আয়তনের প্লটও রয়েছে এখানে। বেশ কয়েকটি প্লটে ক্রেতাদের নতুন নামফলক লাগানো। এসব প্লটের বিক্রর জন্য সোস্যাল মিডিয়াগুলোতে চালানো হয় আকর্ষনীয় বিজ্ঞাপন।



Our Like Page
Developed by: BD IT HOST