প্রথম বাংলা – সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সুকৌশ লে সখ্যতা স্থাপন করে অর্থ আত্মসাৎ চক্রের ৪ সদ স্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে র (ডিএমপি) গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগ।গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে মোঃ সোহাগ আহমেদ,মোঃ রিপন ইসলাম,মোঃ সোহেল রানা ও মোঃ লিটন আলী,তাদের হেফাজত থেকে ২টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।বুধবার (১ মার্চ ২০২৩ খ্রি.) সকালে ডিএমপির ডিবি কম্পাউন্ডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম গোয়েন্দা-উত্তর) খোন্দকার নুরুন্নবী বিপিএম-সেবা,পিপিএম যুগ্ম পুলিশ কমিশনার বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসের ২৬ তারিখে হাজারীবাগ থানায় একটি মামলা রুজু হয়। মামলাটির তদন্তকালে তথ্য প্রযুত্তির সহায়তায় গত সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩খ্রি.) নাটোর জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের অপরাধের কৌশল সম্পর্কে গোয়ে ন্দা কর্মকর্তা বলেন,আসামীরা সঙ্গবদ্ধ ভাবে প্রতার ণা করে থাকে। তারা সাধারণত মধ্যপাচ্য প্রবাসীদের টার্গেট করে থাকে। প্রথমে প্রতারকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সুন্দরী নারীদের ছবি দিয়ে ভুয়া আইডি খুলে এবং প্রবাসীদের আইডিগু লোকে টার্গেট করে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায়। প্রবা সীরা রিকোয়েস্ট গ্রহণ করলে বা ম্যাসেজে রিপ্লাই দিলে প্রতারকরা ভুয়া ফেসবুক আইডি থেকে ভিক টিমদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে। এমনকি পুরুষ প্রতারকরা ম্যাসেজ্ঞ্জারে নারী কণ্ঠে কথা বলে অন্ত রঙ্গ আলাপচারিতা করে বিশ্বাস স্থাপন করে। একপ র্যায়ে প্রতারকরা ভিডিও কলের প্রলোভন দেখিয়ে ভিকটিমদের ইমো নাম্বার নেয়।
তিনি আরও বলেন,প্রতারকরা ভিকটিমের নম্বর দিয়ে তাদের ডিভাইসে একটি ইমো অ্যাকাউন্ট খোলার চেষ্টা করে এবং ভিকটিমের কাছে যাওয়া ওটিপি নাম্বার বিভিন্ন কৌশলে নিয়ে নেয়। ওটিপি প্রাপ্তির পর প্রতারকরা প্রবাসীর ইমো অ্যাকাউন্ট আয়ত্বে নিয়ে পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে ফেলে। পরবর্তীতে ইমো-ব্যাটা ব্যবহার করে প্রবাসীর ইমো অ্যাকাউন্টের নাম্বার পরিবর্তন করে। প্রতারকরা ইমো অ্যাকাউন্টের হিস্টরি থেকে পরিবার এবং আত্মীয় স্বজনের নাম্বর সংগ্রহ করে এবং জরুরি কাজের কথা বলে পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে টাকা আদায় শুরু করে। এভাবে প্রতারণার ফাঁদ পেতে তারা ভিকটিম ও তার পরিবারের কাছ থেকে লক্ষ-লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। এছাড়াও তারা বিভিন্ন ভুয়া ফেসবুক ও মেসেঞ্জার আইডি ব্যবহার করে নারীদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলে। পরে প্রতারকরা ভিকটিমকে প্রলুব্ধ করে ভিডিও কলে অন্তরঙ্গ মুহুর্তে র ছবি তুলে এবং ভিকটিমকে বিভিন্ন পর্ণ সাইটের ছবি/ভিডিও দেখিয়ে ব্র্যাকমেইল করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে।
যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাই ম গোয়েন্দা-উত্তর) এ ধরনের প্রতারণা এড়াতে কিছু সুপারিশ করেন।ইমো অ্যাপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক তা অবলম্বন করা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলাপচারিতা করতে সাবধানতা অবলম্বন করা।
যাচাই বাছাই না করে বিকাশ কিংবা অন্য কোন মাধ্যমে কাউকে টাকা-পয়সা না দেওয়া।ইমো বা অন্যান্য যোগাযোগ মাধ্যমে কোন আত্মীয়-স্বজনের আইডি থেকে টাকা চাওয়া হলে আগে তা যাচাই-বাছাই করে নেওয়া।মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসীদের ইমো ব্যবহার ও ইমো হ্যাক এর ব্যাপারে সচেতন হওয়া।
ই-ট্রানজেকশনের ক্ষেত্রে কাকে টাকা দিচ্ছেন তার সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারনা নেওয়া।ইমো বা ম্যাসেন্জারে অপরিচিত গ্রুপ কলে যুক্ত না হওয়া।কখনো অপরি চিত কারো সাথে ব্যক্তিগত ইমো নাম্বার অথবা ওটি পি শেয়ার না করা।অম্লীল ও যৌন উত্তেজক গ্রুপে নিজেকে যুক্ত না করা।