প্রথম বাংলা – সাবেক সেনা কর্মকর্তা হাসান সারওয়ার্দী কে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেপ্তারের পর তাকে রাজধানীর মিন্টু রোডে অবস্থিত ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়েছে।মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে তাকে সাভারথেকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।
ডিবি সূত্রে জানা যায়, হাসান সারওয়ার্দীকে মঙ্গলবার বিকেলে সাভার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এখন তাকে ডিবি কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বাইডেনে র কথিত উপদেষ্টার পরিচয় দেওয়া মিয়া আরেফির বিষয়ে তার কাছে জানতে চাওয়া হবে।এর আগে বিকেলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান ডিএমপি ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, পল্টন থানায় দায়েরকৃত একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
রোববার রাতে মহিউদ্দিন শিকদার নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে রাজধানীর পল্টন থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার ২ নম্বর আসামি সারওয়ার্দী।
মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গের অভিযোগ এনেছেন বাদী।
এজাহারে বলা হয়েছে, শনিবার পূর্ব ঘোষিত মহাসমাবে শ উপলক্ষ্যে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সারা দেশ থেকে দলটির নেতাকর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেন।ওই দিন বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বিক্ষুব্ধ বিএন পি নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নি ক্ষেপ করে। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা কাকরাইল মোড় থেকে আরামবাগ মোড় পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়।
তারা প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবনসহ সরকারি স্থাপনা এবং সরকারি গাড়িসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ করে। এতে পুলিশের ৪১ সদস্য আহত ও এক সদস্য নিহত হন। এক পর্যায়ে বিকেল ৩টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা মহাসমাবেশ স্থগিত ঘোষণা করেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, বিএনপির ওই কর্মকাণ্ডের পর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে হাসান সারওয়ার্দী এবং বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের নেতৃত্বে ২০জন নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে কিছু সংবাদমাধ্যমের সামনে মিয়ান আরেফী নিজেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয় দেন। পুলিশ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্র ণালয় এবং আইন ও বিচার বিভাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা র বিষয়ে তার সরকারের কাছে সুপারিশ করেছেন বলে বক্তব্য দেন তিনি।
সেখানে মিয়ান আরেফী বক্তব্যে দাবি করেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার দিনে ১০ থেকে ১৫ বার যো গাযোগ হয় এবং মার্কিন সরকারের সবাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে। তিনি আরও দাবি করেন, তিনি মার্কি ন দূতাবাসের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরকেও বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছেন।
এজাহারে বাদী অভিযোগ করেন, হাসান সারওয়ার্দী এবং ইশরাক হোসেন তাকে মিথ্যা বক্তব্য দিতে সহযো গিতা করেন এবং তার বক্তব্য সমর্থন করে বিএনপি নে তাকর্মীদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতিতেউসকানি দেন।আরেফী তাদের সহায়তায় সরকারের প্রতি বিদ্বে ষ সৃষ্টি করে সারা দেশে নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেন।
এজাহারে বলা হয়, ওই সংবাদ সম্মেলনে একপর্যায়ে মিয়ান আরেফীর বক্তব্য শুনে এবং ভিডিও দেখে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি ঘটে। বিএনপি নেতাকর্মীদের মনোবল বাড়াতে আসামিরা মি থ্যার আশ্রয় নিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করতে রাষ্ট্রদ্রো হিতার অপরাধ করেছেন।
আমেরিকার পাসপোর্টধারী মিয়ান আরেফীর প্রকৃত নাম মিয়া জাহিদুল ইসলাম আরেফী তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায়। শনিবার বিএনপির কা র্যালয়ে মিথ্যা পরিচয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার পর রোববার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে তিনি দেশ ছাড়া র চেষ্টা করেন। তবে বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাকে আটক করে ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। তিনি বর্তমানে কারাগারে আছেন।