২০২১ সালের ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনেনৌকা প্রতীক নিয়ে তিনি পরাজিত হন।অভিযুক্ত আবুল কাশেম জেহাদী জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহ সভাপ তি এবং বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের দুইবারের চেয়ারম্যা ন ছিলেন।তার নেতৃত্বে একটি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে। যার সদস্য সংখ্যা ৩০০ বলে জানিয়েছে র্যাব।এদিকে হত্যার ঘটনায় র্যাব অভিযুক্ত মোট পাঁচআসামিকে গ্রেফতার করেছে। সোমবার (১ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানায় নোয়াখালী র্যাব-১১।রোববার (৩০ এপ্রিল) রাতে র্যাব ঢাকার বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বশিকপুরের রশিদপুর গ্রামের সুজা য়েত উল্যার ছেলে মশিউর রহমান নিশান (৪৫),রামগঞ্জ পৌরসভার পূর্ব কাজিরখিল গ্রামের এটিএম সালেহের ছেলে দেওয়ান ফয়সাল (৩৮),বশিকপুরের পশ্চিম শের পুর গ্রামের হুমায়ূন দেওয়ানের ছেলে রুবেল দেওয়ান (৩০) ও একই এলাকার মৃত আবদুল লতিফের ছেলে মো. নাজমুল হোসেন (৩৮)। তারা র্যাবের হেফাজতে রয়েছে। এর আগে দত্তপাড়া বাজার কমিটির সভাপতি ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মনির হোসেন রুবেলকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাকে রিমান্ডে নেয় পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত মশিউর রহমান নিশান বশিকপুর ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনি হত্যা চেষ্টাসহ একাধিক মামলার আসামি এবং বাহিনী প্রধান আবুল কাশেম জেহাদী র দেহরক্ষী। হত্যা মামলার দ্বিতীয় আসামি নিশান। আরেক আসামি ফয়সাল দেওয়ান এজাহারভুক্ত ৩য় আসামি। তিনি রামগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং ওই উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বাচ্চু দেও য়ানের ছোট ভাই। অন্য গ্রেপ্তারকৃত রুবেল দেওয়ানের বিরুদ্ধে চন্দ্রগঞ্জ থানায় মারামারি ও হত্যাচেষ্টাসহ তিনটি মামলা রয়েছে। এরা সবাই সন্ত্রাসী আবুল কাশেম জেহাদী বাহিনীর সক্রিয় সদস্য। আর নাজমুলকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়।
নোয়াখালী র্যাব-১১ এর কোম্পানি কমান্ডার লে. কমান্ডার মাহমুদুল হাসান জানান,গত ২৫ এপ্রিল রাতে লক্ষ্মীপুরের বশিকপুর ইউনিয়নের পোদ্দার বাজারে যুবলীগ নেতা আব দুল্লাহ আল নোমান এবং ছাত্রলীগ নেতা রাকিব ইমামকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান বাদী হয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ হত্যাকাণ্ডে দেশব্যা পী চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার জন্য র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। ঘটনার পরপরই র্যাব-১১ এর একটি গোয়েন্দা দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এছাড়াও বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য র্যাবের গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়।
র্যাবের এ কর্মকর্তা জানান,হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থলের নিক টবর্তী একটি সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ৮ জনের একটি দলকে প্রাথমিকভাবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়। পরে গোয়েন্দা কার্যক্রম ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় রোববার রাতে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১১ এর একটি অভিযানিক দল রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে জোড়া খুনের মামলায় লক্ষ্মীপুর জেলার বশিকপুর ইউনিয়নের মশিউর রহমান নিশান,দেওয়ান ফয়সাল,রুবেল দেওয়ান ও মো. নাজমুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে।
র্যাব কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান জানান,প্রাথমিক অনুসন্ধানে র্যাব জানতে পারে- মূলত রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ই হত্যাকাণ্ডটি সংঘঠিত হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি আবুল কাশেম জিহাদী ২০২১ সালে বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমানের কাছে বিপুল ভোটে পরাজিত হন।ভিকটিম আব দুল্লাহ আল নোমান লক্ষ্মীপুর জেলা যুবলীগের সাবেক সাধা রণ সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমানের ছোট ভাই। মূলত নোমানের সাংগঠনিক দক্ষতার কারণেই তার ভাই মাহফুজুর রহমান চেয়ারম্যান হিসেবে জয়ী হন। নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর থেকে আবুল কাশেম জিহাদী বর্তমান চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান ও তার ছোট ভাইয়ের ওপর প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে ওঠেন। এরই পরি প্রেক্ষিতে আবুল কাশেম জিহাদীর মদদে কতিপয় সন্ত্রাসী পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আবদুল্লাহ আল নোমানকে হত্যা করে।
র্যাবের অনুসন্ধানে আরও উঠে আসে,আবুল কাশেম জিহাদী ১৯৯৬ সালে জেহাদী বাহিনী গড়ে তোলেন। তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্য সংখ্যা প্রায় ৩০০ জন। এ বাহিনীর মাধ্যমে প্রভাব ও আধিপত্য বিস্তার করে এলাকায় চাঁদাবা জী,টেন্ডারবাজী,খুনসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। জেহাদী ২০১৩ সালে দত্তপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান নুর হোসেন শামীম হত্যা মামলা,২০০০ সালে লক্ষ্মীপুরের আইনজীবী নুরুল ইসলাম,দত্তপাড়া এলা কার আবু তাহের,বশিকপুর নন্দীগ্রামের মোরশেদ আলম, করপাড়ার মনির হোসেন,উত্তর জয়পুরের সেলিম ভূঁইয়া ও কামাল হোসেন হত্যা মামলাসহ সাম্প্রতিক চাঞ্চল্যকর বশি কপুর ইউনিয়নের জোড়া খুনের মামলার প্রধান আসামি। তাকে গ্রেপ্তারে র্যাবের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলে জানান লে. কমান্ডার মাহমুদুল হাসান।
উল্লেখ্য, জোড়া খুনের ঘটনায় চন্দ্রগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত হত্যা মামলায় প্রধান আসামি আবুল কাশেম জেহাদী ছাড়া ও ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আর ১৪-১৫ জন কে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ এ ঘটনায় মোট পাঁচজন কে গ্রেপ্তার করে। ঘটনার পরপরই গ্রেপ্তার হয়েছে। জেহা দী বাহিনীর সদস্য আজিজুল ইসলাম বাবলু,মো. সবুজ ও ইসমাইল হোসেন পাটওয়ারী। সর্বশেষ শনিবার এবং রোববার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে ফারুক হোসেন ও আরমান নামে দুইজন।আর র্যাবের হাতে এ পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে পাঁচজন আসামি। এদের মধ্যে পুলিশে