রাশেদুল ইসলাম রিয়াদ জাজিরা (শরীয়তপুর)
স্যার আছে ডাক্তার নাই,ডাক্তার আসিয়া পূর্ব রোগী মারা গেছে
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা নিতে গিয়ে প্রতিনিয়তই ডাক্তার না থাকা, কক্ষ তালাবন্ধ ছাড়া নানা রকম তিক্ত অভিজ্ঞতার শিকার সেবাপ্রত্যাশীরা।প্রশ্নের জবাবে দ্বায়ীত্ব রত কর্মকর্তাও দায়সারা উত্তর।জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কয়েকদিনের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে ডাক্তারদের কর্মস্থলে অনিয়মত ,নির্ধারিত সময়ের আগেই ডাক্তাদের হাসপাতাল ত্যাগ করার মত নানা অভিযোগের সত্যতা।
অনুসন্ধানের বিগত দিনগুলোর মতই শনিবার (২০ মার্চ) হাসপাতালে গিয়ে দেখা মিললো দুই সেবা প্রত্যাশীকে।যারা সকাল ১১ টা থেকে ফাইল হাতে ঘুরছে টেবিলের পর টেবিলে।কথা বলে জানা গেলো তাদের একজন পলাশ শেখ (২৮) অপরজন জিহাদ কাজী (২৪) উভয়ই জাজিরা উপজেলার কাজিরহাট এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা। এরা দুইজন বিআরটিএ নির্ধারিত ফর্মে মেডিকেল সার্টিফিকেটে বা সনদপত্র নিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যায়,যেটি ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে গেলে দরকার পরে।কোন কক্ষে ডাক্তার না থাকায় অভিযোগ নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মাহামুদুল হাসান এর কক্ষে সেখানেও নান তালবাহানার পর দেয়া হয় প্রত্যায়ন বা সনদ।
একই ভাবে হাসপাতালের চিকিৎসকের কক্ষের সামনে এক্সরে রিপোর্ট হাতে দাড়িয়ে থাকতে দেখা যায় সাবানা (৩৫) নামের এক মহিলাকে।তিনি দীর্ঘসময় ধরে ছোট বোনের রিপোর্ট দেখাতে দাড়িয়ে থাকলেও কোন ডাক্তার পায়নি।এবিষয়ে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরি কল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মাহামুদুল হাসান এটিকে প্রতিদিনের ঘটনা হিসবে অস্বিকার করেন এবং বলেন আমাদের দুপুর আড়া ইটা পর্যন্ত অফিস করার নিয়ম।তবে রোগী অনেক সময় না থাকলে ডাক্তাররা চলে যায়।
এদিকে জাজিরা হাসপাতালে গাইনি চিকিৎসক ডাঃ শায়লা নাজনীন ও এ্যনেস্থেসিয়া ডাঃ সালাউদ্দিনের অনুপস্থিতির কারনে এক বছর ধরে বন্ধ হয়ে গেছে মাতৃসেবা ও গাইনি চিকিৎসা এবং সিজারিয়ান সেবা কার্যক্রম।ডঃ বাধন দাস জানায়, ডঃ শায়লা নাজনীন কোন কোন সপ্তাহে একদিন আবার কোন কোন সপ্তাহে দুইদিন আসে।এর সত্যতা নিশ্চিত করেন জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিক ল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মাহামুদুল হাসান। তিনি জানান “ডঃ শায়লা নাজনীন এর অনুপস্থিতি নিয়ে আমি অনেকবার তাকে বলেছি,সে শোনেনি,এরপর তাকে লিখিত ভাবে তাকে নোটিশ পাঠান হয়েছে,তার বেতন ভাতা বন্ধ রেখেছি ,এখান সেখানে যদি সে এরপরও নিয়মিত না হয় সেখানে আমাদের কি করনীয় আছে”
জাজিরার মত একটি মফস্বল এলাকায় যেখানে আশপাশে ভালোমানের কোন প্রাইভেট ক্লিনিক পর্যন্ত নেই সেখানে সরকারি হাসপতালের ডাক্তারদের সেবা দানে এমন অনিচ্ছা থাকার কারণ জানতে চাইলে ডঃ মাহামুদুল হাসান জানান ” সারা বাংলাদেশেই ডাক্তাররা বিশেষজ্ঞ হয়ে গেলে আর উপজেলায় বসতে চায়না। ডাক্তারদের তখন অল্প বেতনে হয় না।তাদের পরিবারের ডিমান্ড আছে।তার ভালো একটা ফ্লাট দরকার হয়, ভালো একটা গাড়ি দরকার হয়।তার ইনকাম হয়না উপজেলায় বসলে।”এবিষয়ে ডঃ শায়লা নাজনিন শনিবার হাসপাতালে অনুপস্থিত থাকায় তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।