January 20, 2025, 11:57 am
নোটিশঃ
আপনার আশেপাশের ঘটে যাওয়া খবর এবং আপনার ব্যবসার বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য যোগাযোগ করুন মানবাধিকার খবরে।

ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের টাকা ডাকাতির মূল হোতাসহ আরো ৩ জন গ্রেপ্তার, ৫৮ লক্ষ ৭ হাজার টাকা উদ্ধার

Reporter Name

প্রথম বাংলা – রাজধানীর তুরাগ থানা এলাকায় ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের টাকা ডাকাতির ঘটনায় মূল হোতাসহ আরো ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা-মিরপুর বিভাগের মিরপুর জোনাল টিম। এ সময় তাদের কাছ থেকে আরো ৫৮ লক্ষ ৭ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।গ্রেপ্তারকৃতরা হলো মো. হৃদয়, মো. মিলন মিয়া ও আকাশ (মাষ্টারমাইন্ড)।মঙ্গলবার (১৪ মার্চ ২০২৩ খ্রি.) রাজধানীর করাইল বস্তির বৌ-বাজার ও নেত্রকোনা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।মঙ্গলবার (১৪ মার্চ ২০২৩ খ্রি.) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম-বার, পিপিএম-বার।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) জানান,ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের টাকা ডাকাতির ঘটনায় আগে গ্রেপ্তার করা ৮ জনকে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে বিজ্ঞ আদাল তে প্রেরণ করলে আদালত প্রত্যেককে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। টাকা ডাকাতির পেছনে বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন গ্রুপ ভিন্ন ভিন্ন দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল।কেউ ছিল পরিকল্পনাকারী,কেউ মোবাইল ফোন ও সিম সংগ্রহকারী, কেউ শুধুমাত্র ঘটনার সময় কাজ করে।জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তিনি জানান,মূল পরিকল্পনা ও বাস্ত বায়নকারী হিসেবে কাজ করে ৪/৫ জন। এদের মধ্যে আকাশ ও সোহেল রানা নামে ২ জন ডাকাতির মূল ছকটি সাজায়। সোহেল রানা পূর্বে মানি প্ল্যান্ট লিংক লিমিটেডের ড্রাইভার ছিলো ড্রাইভার থাকার কারণে সে মানি প্ল্যান্ট লিংক লিমিটেডের খুটিনাটি বিষয়াদি সম্পর্কে অবগত ছিলো।তারা জানায় যে,এক প্রকার বাধাহীন ভাবেই তারা মানি প্ল্যান্টের মাইক্রোবাসটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। মূল হোতা আকাশ টাকা লুটের পর মাইক্রোবাসে উঠতে না পারলেও সেখান থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।

তিনি আরো জানান,আকাশ তার পূর্ব পরিচিত ইমন মিলনে র কাছে টাকা ডাকাতির বিষয়টি শেয়ার করে এবং তাকে এই কাজে যুক্ত হওয়ার প্রস্তাব দেয়। তাকে তারা জনবল সংগ্রহের দায়িত্ব দেয় ইমন মিলন তার পূর্বপরিচিত সানোয়া র হোসেনকে বিষয়টি জানায় এবং জনবল যোগান,সিম সংগ্রহ ও মোবাইল ফোন ক্রয়ের দায়িত্ব দেয় সানোয়ার ৮টি নতুন সিম এবং মোবাইল সেট সংগ্রহ করে। তার নিজ জেলা সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণা থেকে মোট ৯ জন সদস্য সংগ্রহ করে। তারা প্রত্যেকেই ঘটনার ২ দিন পূর্বে ঢাকায় একত্রিত হয় পরিকল্পনাকারীরা তাদেরকে ঢাকায় এনে নতুন কাপড় ও জুতা কিনে দেয়। আকাশ ও সোহেল রানা ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের টাকা লুটের বিষয়টি গোপন রাখে ইমন মিলন ও সানোয়ারের কাছে।তারা জানায় যে, তারা কিছু অবৈধ হুন্ডির টাকা লুট করবে এবং সেখানে প্রশাসনের লোক থাকবে ঘটনার দিন সবাই কুর্মিটোলায় একত্রিত হয়ে মাইক্রোবাসে উঠার পর বুঝতে পারে বড় কিছু ঘটতে যাচ্ছে।ডাকাতির পর মূল হোতা আকাশ মাইক্রোবাসে উঠতে না পারায় তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। তারা ধারণা করে যে,আকাশ ধরা পড়ে গেছে। ধরা পড়ার ভয়ে তারা তাদের কাছে থাকা অপারেশনাল মোবাইল ফোনগুলো ৩০০ ফুট রাস্তায় ফেলে দেয়।তারা ৩০০ ফুট রাস্তায় একটি নির্জন জায়গায় গিয়ে ব্যাগ এবং বস্তায় করে যার যার মতো টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।

তিনি আরো জানান,ডাকাতির ঘটনায় অংশগ্রহণকারীদের দেশের বিভিন্ন জেলা (যেমন- সুনামগঞ্জ,সিলেট,নেত্রকো না,গোপালগঞ্জ ও বরিশাল) থেকে সংগ্রহ করা হয়। ফলে ডাকাতির পর তারা টাকা ভাগবাটোয়ারা করে যার যার মতো বিভিন্ন এলাকায় পালিয়ে যায় এবং বেশ কিছু টাকা বিভিন্ন খাতে খরচ করে ফেলে। যার ফলে অভিযুক্তদের সনাক্ত, গ্রেপ্তার ও লুণ্ঠিত টাকা উদ্ধার করতে কিছুটা বিলম্ব হয়। লুণ্ঠিত টাকার একটি বড় অংশ ডাকাতি ঘটনার মূলহোতা আকাশ ও সোহেল রানা নিয়ে পালিয়ে যায়।

উল্লেখ্য,গত ৯ মার্চ ২০২৩ খ্রি. রাজধানীর তুরাগ থানা এলা কা থেকে ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের বুথে পৌঁছে দেওয়ার পথে মানি প্ল্যান্ট লিংক প্রাইভেট লিমিটেডের ভাষ্যমতে ১১ কটি ২৫ লক্ষ টাকা ডাকাতি হয়। এ ঘটনার পরপরই গোয়েন্দা বিভাগের তৎপরতায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ও সুনাম গঞ্জে ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত দের মধ্যে ৮ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার ও প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়।এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট ১১ জন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার ও ৭ কোটি ১ লক্ষ ৫৬ হাজার টাকা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ। এ ঘটনায় জড়িত অন্যান্য অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।



Our Like Page
Developed by: BD IT HOST