প্রথম বাংলা – রাজশাহী শহরের ১০ বছরের কম বয়সি ৩০ জন স্কুল ছাত্রদের সাথে বিকৃত যৌন নিপীড়ন করেছে ৩৩ বছরের এক তরুণ শিক্ষক মোঃ আব্দুল ওয়াকেল। যৌন নিপীড়নের দৃশ্যগুলো ভিডিও ধারণ করে সে নিজের মুঠো ফোন,পেনড্রাইভ,কম্পিউটার এবং এক্সটার্নাল হার্ডডিস্কে সংরক্ষণ করে রাখে। সার্চ ইঞ্জিন এসব তথ্য পৌঁছে দেয় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক National Center for Missing & Exploited Children (NCMEC)নামক এক প্রতিষ্ঠানের কাছে। IOM,UNODC, NCMEC সহ বহু আন্তর্জাতিক সংস্থার পার্টনার হওয়ায় Child Abused সংক্রান্ত কনটেন্টটি সিআইডিতে প্রেরণ করা হয়। এ তথ্যের ভিত্তিতে সিআইডি’র নিজস্ব ক্রিমিনাল ইন্টেলিজেন্স টিম তদন্ত শুরু করে।
স্থানীয় ভুক্তভোগী অনেক ছাত্র ও তাদের গার্ডিয়ান নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্তকারী টিমের নিকট শিক্ষক মোঃ আব্দুল ওয়াকেলের Child Abused সম্পর্কে ভয়ঙ্কর তথ্য সরবরাহ করে। পরবর্তীতে গত ১৮/০৫/২০২৪ খ্রি. তারিখে সিআইডির একটি বিশেষ টিম তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে রাজশাহী মেট্রো’র মতিহার থানাধীন, ওয়ার্ড নং-২৯ শ্যামপুর ডাঁশমারী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অভিযুক্ত মোঃ আব্দুল ওয়াকেলকে গ্রেফতার করে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, মোঃ আব্দুল ওয়াকেল রাজশা হীর, কাটাখালীর আশরাফ মেমোরিয়াল মডেল স্কুলের একজন শিক্ষক। ছাত্রাবস্থায় সে তার এলাকায় Teach-IN নামক একটি কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করতো।কোচিংয়ে র শিক্ষকতা করার সময় থেকেই সে কোচিংয়ের কোমলম তি ছাত্রদের টার্গেট করে চকলেট এবং মোবাইলে গেমস খেলার প্রলোভন দেখিয়ে সখ্যতা গড়ে তুলতো। পরবর্তীতে তাদেরকে ফুসলিয়ে তার কোচিং সেন্টারে অথবা নিজ বাড়ি তে এবং কখনো কখনো আশেপাশের আম/লিচু বাগানে নিয়ে যেত। সরলমনা ছাত্রদের চকলেট এবং পাবজি গেম ডাউনলোড করা মোবাইল ফোন হাতে দিয়ে পাবজি গেম খেলতে বলতো।
বাচ্চারা তখন জনপ্রিয় পাবজি গেম খেলা নিয়ে প্রচন্ড ব্যস্ত থাকতো এই সুযোগে তাদের সাথে অপ্রাকৃতিক যৌনলাল সা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে সে শিশু বাচ্চাদের প্যান্ট খুলে ফেলতো এবং বিকৃত যৌনাচার করত। পূর্ব থেকে সেট করা মোবাইল ক্যামেরায় যৌনাচারের ভিডিও ধারণ করে তা সংরক্ষণ করে রাখতো যৌণ নিপীড়নের শিকার সকল শিশুরা তার ছাত্র ছিল।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করে যে,অনার্স পড়াকা লীন সময় থেকে ছেলে বাচ্চাদের সাথে বিকৃত যৌনাচার করতো। এ নেশার কারণে সে বালকদের নিয়ে কোচিং সেন্টার চালু করেছিল। কোচিং সেন্টারে পড়া বাচ্চাদেরকে নানা ভাবে প্রলুব্ধ করে বিভিন্ন গোপনীয় স্থানে নিয়ে যেত। এর পর তাদের পছন্দের মোবইল গেম খেলতে দিয়ে ব্যস্ত রেখে তাদের সাথে বিকৃত যৌনাচারে লিপ্ত হতো।তার ভষ্য মতে এ পর্যন্ত সে ৩০ জন স্কুল ছাত্রকে বলৎকার করেছে। গ্রেফতারকালে তার ব্যবহৃত মুঠোফোন, পেনড্রাইভ এবং কম্পিউটারের একাধিক হার্ডডিস্কে স্কুল পড়ুয়া কোমলমতি ছাত্রদের বিপুল পরিমান নগ্ন ছবি, ভিডিও এবং চাইল্ড পর্নোগ্রাফির কন্টেন্ট পাওয়া যায়।
সমগ্র বিশ্বে Child Abused প্রতিরোধ এবংঅপরাধীদের আইনের আওতায় আনার জন্য IOM, UNODC, NCM EC, Facebook, Google, Microsoft ও সিআইডি একসাথে কাজ করে যাচ্ছে।
গ্রেফতারকৃত অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তার বর্তমান কর্মস্থল আশরাফ মেমোরিয়াল মডেল স্কুল,কাটাখালী,রাজশাহীর প্রধান শিক্ষক বাদী হয়ে পল্টন মডেল থানা, ডিএমপিতে পেনাল কোড,১৮৬০ এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১২ মোতাবেক নিয়মিত মামলা দায়ের করেছেন।
গ্রেফতারকালে আসামীর কাছ থেকে উদ্ধারঃ
১। মোবাইল ফোন-১ টি সংযুক্ত সিমসহ
২। হার্ডডিস্ক-০২ টি
৩। পেনড্রাইভ-০২ টি