প্রথম বাংলা – মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ভেটেরিনারিয়ান, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, প্রফেসর ডঃ এমদাদুল হক চৌধুরীকে ১২জুলাই ২০২৩ তারিখে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে আগামী ৪ বছরের জন্য নিয়োগ প্রদান করেছেন।
প্রফেসর ডঃ এমদাদুল হক চৌধুরী, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববি দ্যালয়ের গ্রাজুয়েট এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫তম ভাইস-চ্যান্সেলর। তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি সায়েন্স অনুষদের প্যাথলজি বিভাগে শিক্ষক হিসাবে কর্মরত রয়েছেন। প্রফেসর ডঃ এমদাদুল হক চৌধুরী ফরিদপুর জেলার সদরপুর থানায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। শিক্ষা জীবনে কৃতিত্বের অধিকারী প্রফেসর ডঃ এমদাদুল হক চৌধুরী বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি সায়েন্স অনুষদ থেকে কৃতিত্বের সাথে ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন (সম্মিলিত মেধা তালিকায় প্রথম শ্রেণীতে ২য় স্থান) এবং সম্মিলিত মেধা তালিকায় প্রথম শ্রেণীতে ১ম স্থান অর্জন করে মাস্টার অব সায়েন্স ডিগ্রি লাভ করেন। পরবর্তীতে ১৯৯৯ সালে সুইজারল্যান্ড এর ইউনিভার্সিটি অব জুরিখ থেকে সম্মানের সাথে পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন এবং ২০০১-২০০২ সালে জাপান থেকে পোস্ট ডক্টরাল ফেলোশিপ সম্পন্ন করেন।
প্রফেসর ডঃ এমদাদুল হক চৌধুরী ১৯৯৫ সনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ^বিদ্যালয়,ময়মনসিংহ-এর প্যাথলজি বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। তিনি ২০০৮ সাল থেকে অদ্যবধি উক্ত বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। প্রফেসর ডঃ এমদাদুল হক চৌধুরী বহু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সেমিনার,সিম্পোজিয়াম,ওর্য়াকশপ ও কনফারেন্সে যোগদান করে গবেষণালব্ধ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন এবং বিভিন্ন টেকনিক্যাল সেশনে চেয়ারপার সনের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি গবেষণা ও শিক্ষা সংক্রান্ত কাজে পৃথিবীর বহু দেশ ভ্রমণ করেছেন।
এছাড়াও উচ্চমাত্রার সূচকের জাতীয় বা আন্তজার্তিক জার্নালে প্রকাশিত তাঁর রিসার্চ আর্টিকেল এর মোট সংখ্যা ৭০টিরও বেশীসহ মোট প্রকাশিত আর্টিকেল প্রায় ২০০টি। তার তত্ত্ববধানে ৭০জন এম.এস. শিক্ষার্থী এবং ২০জন পিএইচডি শিক্ষার্থী তাদের ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন। তাঁর মোট রিসার্চ গেট উদ্ধৃতি: ১৬৮০, এইচ-ইনডেক্স: ২৩, গুগুল সাইটেশন: ১৯৮০ (০১ মার্চ ২০২৩ পর্যন্ত)। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন দেশী-বিদেশী গবেষণা প্রকল্প সফল ভাবে পরিচালনা করেছেন।
বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের অধিকারী প্রফেসর ডঃ এমদাদুল হক চৌধুরী বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়,ময়মনসিংহ এর পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখার পরিচালক,প্যাথলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান,প্রভোস্ট ও প্রভোস্ট কাউন্সিলের আহ্ববায়ক,নিরাপত্তা পরিষদের চেয়ারম্যান,খাদ্য নিরাপত্তা ইন্টারডিসিপ্লিনারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়কারী হিসেবে সুনাম ও দক্ষতার সাথে কাজ করেছেন।
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঈশাখাঁ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।গবেষণায় অবদানের স্বীকৃতস্বরুপ প্রফেসর ডঃ এমদাদুল হক চৌধুরী বাংলাদেশ সোসাইটি ফর ভেটেরিনারি এডুকেশন এন্ড রিসার্চ কর্তৃক সেরা তরুণ উপস্থাপনা পুরস্কার ১৯৯৯, সেন্টার ফর এ্যাকশন রিসার্চ,ঢাকা বায়োটেক কেয়ার, বাংলাদেশ কর্তৃক সেরা পোস্টার পুরস্কার ২০১৩ পেয়েছেন।
তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি থেকে সেরা প্রকাশনা পুরস্কার ২০১৪ এবং ২০১৯ এবং ২০২২ সালে গবেষণার জন্য বাকৃবি’র সেরা গবেষকের অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। এফএও- ভিয়েনা,অস্ট্রিয়ার যৌথ বিভাগ দ্বারা ছাগলের ভাইরাল রোগের আণবিক নির্ণয়ে শতভাগ দক্ষতার স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি। একজন নিবেদিত প্রাণ শিক্ষাবিদ প্রফেসর ডঃ এমদাদুল হক চৌধুরী বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আওয়ামী শিক্ষক সংগ ঠন গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের সহ-সভাপতি,কোষা ধ্যক্ষ,সাধারণ সম্পাদক,সাংগাঠনিক সম্পাদক,কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আওয়ামীপন্থী গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এছাড়াও প্রফেসর ডঃ এমদাদুল হক চৌধুরী আওয়ামী শিক্ষক প্যানেল সমর্থিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক পরিষদের নির্বাচনে নির্বাচিত সদস্য (২০০৯ সাল) এবং সাধারণ সম্পাদক (২০১০ সাল) এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফেডারেশনের নির্বাচিত সহ-সভাপতি (২০১০-২০১১) এর দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি ২০০৯ সাল থেকে বঙ্গবন্ধু পরিষদ,বাকৃবি শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বরত রয়েছেন। ২০১৪ সাল থেকে রবীন্দ্র সঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ,ময়মনসিংহ শাখার সহ-সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
তিনি বঙ্গবন্ধু প্রতিকৃতির শস্যক্ষেত্রে মোজাইকের গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের জুরি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন যা ছিল দেশের জন্য অত্যন্ত গর্বের। তিনি বর্তমানে বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পেশাগত,সামাজিক সংগঠনের কার্যক্রমের সাথে জড়িত রয়েছেন। তার উদ্ভাবিত প্রযুক্তি গ্রামীণ বাংলাদেশে “ডোরস্টেপ ভেটেরিনারি সার্ভিস” মডেল।নিরাপদ পশু প্রোটিন উৎপাদনের জন্য প্রান্তিক কৃষকদের সেবায় নিয়োজিত যা সারাদেশে মোবাইল ভেটে রিনারি ক্লিনিক হিসাবে প্রাণিসম্পদ বিভাগ (ডিএলএস) দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। ছাই থেকে জৈব স্যানিটাইজার এবং গবাদি পশুর রোগ নির্ণয়ের নানা পদ্ধতিও তিনি তৈরি করেছেন। ব্যক্তিগত জীবনে প্রফেসর ডঃ এমদাদুল হক চৌধুরী বিবাহিত এবং তিন সন্তানের জনক।