January 20, 2025, 12:08 pm
নোটিশঃ
আপনার আশেপাশের ঘটে যাওয়া খবর এবং আপনার ব্যবসার বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য যোগাযোগ করুন মানবাধিকার খবরে।

বিগত সরকারের প্রকৌশলীদের ‘কব্জায়’ গণপূর্ত অধিদপ্তর

Reporter Name

স্টাফ রিপোর্টার -চলমান রয়েছে ‘রাষ্ট্র’ সংস্কার’বৈষম্যেবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ওই কার্যক্রমের শুরু হয়েছে। মন্ত্রণালয়, দপ্তর, অধিপ্তর ও পরিদপ্তরসহ রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান থেকে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর ও সমর্থিত কর্মকর্তাদের ঝেঁটিয়ে বিদায় করা হচ্ছে।

তবে,গণপূর্ত অধিদপ্তরের চিত্র ভিন্ন আওয়ামী লীগের দোসর ও সমর্থিত প্রকৌশলী এবং অন্য কর্মকর্তরা অধিদপ্তরটিরগুরুত্বপূর্ন দায়িত্বে এখনো আছেন বহাল তবিয়তে।বর্তমান প্রধান প্রকৌশ লীসহ অতিরিক্ত প্রধান,তত্বাবধায়ক ও নির্বাহী এবং অন্যপ্রকৌশ লীদের অনেকেই গণপূর্ত অধিদপ্তরে আওয়ামী লীগ সমর্থিত। এসব তথ্য ওই অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছেন। গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতার। বৈষম্যেবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সোহান শাহ নামের এক ব্যক্তি হত্যা মামলায় তাকে আসামি করা হয়েছে। রাজধানীর রামপুরা থানায় এজাহারভুক্ত শামীম আখতার ৫৪ নং আসামি।

সূত্র জানান, বৈষম্যেবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে আওয়ামী লীগকে গোপনে বড়ো অঙ্কের অর্থ সহায়তা দিয়েছেন শামীম আখতার। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের নির্দেশে তিনি দলটিকে অর্থ সহায়তা দেন।

রামপুরা থানায় ওই মামলায় উল্লেখযোগ্য অন্য আসামি হলেন, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব এবং আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি শহিদ উল্লাহ খন্দকার (৫১নং) এবং গণ পূর্ত অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোসলেহ উদ্দীন আহাম্মদ (৫৩ নং)। জানা গেছে, এ অধিদপ্তর একজন প্রধান প্রকৌশলীর নেতৃত্বে পরিচালিত হয়। দেশজুরে তাকে সর্বোচ্চ ১৩ হাজার ৮শত ৩৪ জন (কর্মকতা-কর্মচারি) সহায়তা করেন। এরমধ্যে ১৬ জন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (১৪ জন সিভিল আর ২ (ই/এম)। ৪৬ জন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী।

১৬১ জন নির্বাহী প্রকৌশলী ২৮৭ জন উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ৪২০ জন সহকারী প্রকৌশলী। ১২৪৭ জন উপ-সহকারী প্রকৌশলী।

বাকীরা অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারি বলে জানা যায় মাঠপর্যায়ে র অফিসগুলো সিভিল ওয়ার্কিং ইউনিট এবং ইলেক্ট্রো মেকানি ক্যাল (ই/এম)ওয়ার্কিং ইউনিটে বিভক্ত। মাঠপর্যায়ে এগারটি জোনাল(বিভাগীয়) হেড কোয়ার্টারে ১১জন জোনাল অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আছেন।যাদের অধীনে সিভিল এবং ইলেক্ট্রো মেকানিক্যাল কাজের জন্য তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, নির্বাহী প্রকৌশলী, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী, সহকারী প্রকৌশলী, উপ-সহকারী প্রকৌশলী আছেন। গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ের উপর ন্যস্ত আছে।

এছাড়া প্রধান প্রকৌশলী ওই অধিদপ্তরের প্রশাসনিক ও কারিগ রী প্রধান।গণপূর্ত অধিদপ্তর সূত্র জানায়,আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রকৌশলীদের সর্বত্র নিয়ন্ত্রণ এখনো আছে ওই অধিদপ্তরে। নি য়ন্ত্রণকারী প্রকৌশলীদের অনেকেই চেষ্টা করেছিলেন বৈষম্যে বিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমিয়ে দিতে। ওই সিন্ডিকেট ক্ষমতাচ্যু ত আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী ও সচিবসহ মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্ব তন কর্মকর্তাদের নামে ‘কব্জায়’ রেখেছেন গণপূর্ত অধিদপ্তর।

এদিকে,গণপূর্ত অধিদপ্তরের শীর্ষ কয়েকজন কর্মকর্তাদের ফে টোসেশন একটা ছবি নিয়ে বিতর্ক তৈরী হয়েছে। সূত্রমতে, ওই কর্মকর্তারা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। তবে, ওই কর্মকর্তাদের একজনের দাবি, তারা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর আগে সেই ফটোসেশন করেছিলেন।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শহিদুলইসলাম ,নাছিম খান,শামছুদ্দোহা,আলমগীর খান তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তৈমুর আলম, ড. সাখাওয়াত ও ইলিয়াস হোসেনসহ অন্যদের ওই ফটোসেশন চিত্রে দেখা গেছে। তবে, স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে তারা ‘বিসিএস পাবলিক ওয়ার্কস ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়ে শন’-এর ব্যানারে ওই শ্রদ্ধা জানান বলে, জানিয়েছেন। জানতে চাইলে গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী বলেন, বিসিএস পাবলিক ওয়ার্কস ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশন একটা অরাজনৈতিক সংগঠন।

এ সংগঠনের পক্ষ থেকে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে ২৬ মার্চ শ্রদ্ধা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতির ফটোগ্রাফ তোলা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ব্যানারের ওপরের লেখাটা আমরা ডিজাইন করিনি। প্রত্যেক সরকারি অফিসের কক্ষে যেমন; মুজিব-হাসিনার ছবি রাখার সরকারি নির্দেশনা ছিল,তদ্রুপ প্রত্যেক জাতীয় র‌্যালিতে ব্যানারে এরকম ছবি ছাপানো বাধ্যতামূলক ছিল। তাই এরদ্বারা প্রমাণ হয়না সবাই আওয়ামী লীগের একনিষ্ট কর্মী।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর থেকে শুরু হয়েছে রাষ্ট্রের কাঠামো সংস্কার এরমধ্যে এ সরকারের তিন মাস পূর্ণ হয়েছে। রাষ্ট্রীয় ও স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যস্থাপনা ঝেড়ে ফেলতে শীর্ষ ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনা হচ্ছে। তবে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের রিবোধীতাকারি এবং ওইসব কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত দপ্তর-অধিদপ্তর ও পরিদপ্তরে র প্রধানসহ অন্য কর্মকর্তাদের বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হচ্ছে। আবার অনেকে নিজ দায়িত্বে পদত্যাগ করছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্টে পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের। প্রধানমন্ত্রী থেকে পদত্যাগকরে দেশ ছাড়েন দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা। জাতীয় সংসদ বিলু প্তির পর গঠন করা হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা”অন্যদিকে,গণ পূর্ত অধিদপ্তরে কর্মচারিদের বড় একটা সিন্ডিকেট (দুর্নীতির) গড়ে উঠেছে। সূত্রমতে, ওই সিন্ডিকেটের সদস্যরা লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন ঠিকাদারি লাইসেন্স, টেন্ডারসহ গণপূর্ত অধিদপ্তরের অন্যান্য কাজ অনিয়মভাবে করে দিচ্ছেন। আর, এ অর্থের ভাগ যাচ্ছে ওই অধিদপ্তরের দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলী দের পকেটে।

সূত্র জানায়, ওই অধিদপ্তরে ৫তলায় লাইব্রেরিতে বসে চক্রটির সদস্যরা দুর্নীতির এসব কাজ করে থাকেন। তারা পাটির সঙ্গে সর্বনিম্ন ১ লাখ থেকে সর্বচ্চ ৫ লাখ পর্যন্ত (দর কষাকষির মাধ্যমে) টাকা নিয়ে থাকেন।
গণপুর্ত অধিদপ্তরের শতাধিক প্রকৌশলী দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করে রয়েছে বহাল তবিয়তে। অনেকের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন।

তাদের মধ্যে হলেন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আলমগীর ,মোসলে উদ্দিন,তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তৈমুর আলম,আবুল হোসেন,রহিম রিপন,ইলিয়াস আহমেদ,ময়মনসিংহ সার্কেলের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল,নির্বাহী প্রকৌ শলী ( সিভিল) সাইফুর রহমান চুন্নু,শেখর মন্ডল,শাহ আলম ফারুক চৌধুরী,আমানউল্লাহ সরকার,মাহবুবুর রহমান,ই/ এম বিভাগের সমীরণ মিস্ত্রি, নুরুল হোসেন,পবিত্র কুমার সহ রয়েছে অর্ধশত উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী ও উপ সহকারী প্রকৌশলী।



Our Like Page
Developed by: BD IT HOST