December 7, 2024, 8:59 pm
শিরোনামঃ
ছাত্রদলের সভায় দাওয়াত পায়নি শিবির-বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরিবহন শ্রমিকদের ব্যাপক সংঘর্ষ, বাস চলাচল বন্ধ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের প্রকাশ্যে বিরোধীতাকারী স্বৈরাচার সরকারের দোসর দেশীয় অস্ত্রসহ সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের চারসদস্যকে গ্রেফতার করেছে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ কারাগার থেকে পালানো ৭৭০ আসামি এখনও ধরা পড়েনি: কারা মহাপরিদর্শক জয়পুরহাটে টাকা দিয়েও সার পাচ্ছেন না কৃষক ত্রিপুরায় সহকারী হাইকমিশনে হামলা-ভাঙচুর, ছিঁড়ে ফেলা হলো বাংলাদেশি পতাকা গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রকৌশলীদের সমন্বয়ে গঠিত অনিয়ম ও দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেট বহাল তবিয়তে আন্দোলনে আহতদের দেখতে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে ডিএমপি কমিশনার সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা ছাপিয়ে দুর্বল ব্যাংকে দেয়া হয়েছে: গভর্নর
নোটিশঃ
আপনার আশেপাশের ঘটে যাওয়া খবর এবং আপনার ব্যবসার বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য যোগাযোগ করুন মানবাধিকার খবরে।

মুক্তাগাছায় ৩২৯ টন চাল আত্মসাতের ঘটনায় ২২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ

Reporter Name

প্রথম বাংলা – খাদ্য অধিদপ্তরের আলোচিত মুক্তাগাছা গুদামের ৩২৯ টন চাল ও ১ হাজার ৮৭৫টি খালি বস্তা আত্মসাতের ঘটনা নতুন মোড় নিতে শুরু করেছে। গঠিত সর্বশেষ তদন্ত কমিটি গত মঙ্গলবার দিনভর তদন্ত কার্যক্রম চালিয়েছে। সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ২২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

আত্মসাতের সঙ্গে সরাসরি জড়িত প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত কর্মক র্তা ফেরারী শাকিল আহমেদ তদন্ত কমিটির কাছে লিখিত ব ক্তব্য দিয়ে আবারো পালিয়ে গেছেন। অন্যদিকে দায় এড়া নোর তথ্য পাওয়া গেছে। আত্মসাতের দায় থেকে রক্ষার প্রাণান্ত চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন প্রাক্তন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রেবেকা সুলতানা রুবী।অধিদপ্তরের চলাচল সংর ক্ষণ ও সাইলো বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক (চলাচল) মোঃ মাইন উদ্দিন ৩ সদস্যের উচ্চপর্যায়ের প্রশাসনিক তদন্ত কমিটির আহবায়ক। গাইবান্ধার জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ মিজানুর রহমান ও শরীয়তপুরের জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ হারুন অর রশিদ কমিটির সদস্য। আগামী সপ্তাহের প্রথম দিকেই কমিটি প্রতিবেদন জমা দেবে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, খাদ্য অধিদপ্তরের ১৩.০১.০০০০.০৩১.২৭.০০৩.২৪.৩৩৬ নম্বর স্মারকে০৮ -০৫-২০২৪ তারিখে উচ্চপর্যায়ের ৩ সদস্যের প্রশাসনিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।আগের একাধিক তদন্ত কমিটি র প্রতিবেদন,বিশেষ হিসাব নিরীক্ষা,উত্থাপিত আত্মসাত, দুর্নীতি ও অনিয়ম,নথি পর্যালোচনা ও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ২২ জনকে তদন্ত কার্যক্রমে উপস্থিত হওয়ার জন্য নোটিশ প্রদান করা হয়েছিলো।

১৩.০১.০০০০.০৮১.২৭.০১৭.২২-৭৪(৬) নম্বর স্মারকে ১২-০৫-২০২৪ তারিখে তাদের নোটিশ দেওয়া হয়। এর পরই ঘটনা নতুন মোড় নেয়। সূত্র মতে, শাকিল মুক্তাগাছা খাদ্য গুদামে যোগদানের পর থেকে পালিয়ে যাওয়া পর্যন্ত দীর্ঘ ২ বছর ৭ মাস যারাই গুদাম ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্র কের কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন তাদের সবাইকে তদন্ত কমি টি ডেকেছিলো। নোটিশ পেয়ে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য প্রাক্ত ন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফেরারী শাকিল আহমেদসহ ২২ জন মুক্তাগাছা খাদ্য গুদামে উপস্থিত হয়েছিলেন তারা কমিটির নানান প্রশ্নের উত্তর দেন সকলের কাছ থেকে লিখিত বক্তব্য নেওয়া হয়।

মঙ্গলবার প্রশাসনিক তদন্ত কমিটির কাছে সাক্ষ্য দেন-মুক্তা গাছার প্রাক্তন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রেবেকা সুলতানা রু বী ও মোঃ সাইফুল ইসলাম,বর্তমান উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ এরশাদুর রহমান খান,মুক্তাগাছা খাদ্য গুদামের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম,ময়ম নসিংহের কারিগরী খাদ্য পরিদর্শক ফাতেমা তুজ জহুরা,

মুক্তাগাছা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের প্রাক্তনখাদ্য পরিদর্শক আবুল বাশার ও আব্দুল বারেক,প্রাক্তন উপখাদ্য পরিদর্শক নুরে আলম ও জোসনা বেগম,খাদ্য গুদামের প্রাক্তন সহকারী উপ খাদ্য পরিদর্শক তুহিন,মোঃ তাইজুল ইসলাম ও মোঃ ফয়সাল পাঠান,উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের প্রাক্তন নিরাপত্তা প্রহরী রাজু আহমেদ,মোঃ জুলহাস উদ্দিন ও মোঃ আনোয়ার হোসেন,খাদ্য গুদামের প্রাক্তন নিরাপত্তা প্রহরী মোঃ নুরুল হক,নাহিদা সুলতানা, লায়লা বিলকিছ,হাছিনা বেগম,মোঃ আমিনুল ইসলাম ও শফিকুল ইসলাম এবং খাদ্য গুদামের প্রাক্তন পরিচ্ছন্নতা কর্মী স্বপন চন্দ্র দাস। ময়মনসিংহের জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ আব্দুল কাদের উচ্চপর্যায়ের প্রশাসনিক তদন্ত কমিটির সঙ্গে ছিলেন।

জানা যায়, মুক্তাগাছা খাদ্য গুদামের চাল ও বস্তা আত্মসাত ধরা পড়ার পর থেকেই শুরু হয় নাটকীয়তা।গত বছরের২১ নভেম্বর মুক্তাগাছা থানায় মামলা রেকর্ডের আগে সাবেক ডিসি ফুড এর তৎপরতায় রহস্যজনক কারণে দুই বার এজা হার পাল্টানো হয়। আত্মসাত দেখানো হয় ০৯-০৩-২০২১ থেকে ১৭-১০-২০২৩ তারিখের মধ্যে যেকোনো সময়।

মজুদ অনুযায়ী ২ মাস আগে কেনা বোরো চাল আত্মসাত রা হয়। এর আগের ২ বছর ৫ মাস চালের মজুদ বিলি ও চলাচল কর্মসূচির মাধ্যমে শেষ করা হয়। গত বছরের জুনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের পিভিআর অনুযায়ী আত্মসাতেরসময় কাল ঘটনা ধরা পড়ার ২ মাস আগের। অথচ আত্মসাত দেখানো হয় ২ বছর ৭ মাসের যেকোনো সময়।

আত্মসাত করা চাল ও খালি বস্তার মূল্য ১ কোটি ৭১ লাখ৯ ২ হাজার ৩৮২ টাকা।দুদকের এখতিয়ারভূক্ত হওয়ায় ত্রুটি পূর্ণ মামলাটি স্থানান্তর হয়ে কার্যক্রম বন্ধ হয়। কমিশনের নির্দেশে ০৬-০৩-২০২৪ তারিখে উপ সহকারী পরিচালক আনিসুর রহমান বাদি হয়ে ময়মনসিংহের আদালতে মূল মামলাটি দায়ের করেন। দণ্ডবিধির ৪০৯,৪২০ ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় দায়ের করা মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

সূত্র জানায়,আত্মসাতের দায় এড়াতে শুরুতে কয়েকজনের বিরুদ্ধে কলকাঠি নাড়ার অভিযোগ উঠেছিলো। আত্মসাত ধরা পড়ার ৪ মাস পর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রেবেকাসুল তানা রুবীকে টাংগাইলের মির্জাপুরে বদলি করা হয়।ব্যবস্থা না নিয়ে তাকে গুরুত্বপূর্ণ উপজেলায় বদলি করায় প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছিলো। এতে দেশের অন্যান্য খাদ্য গুদামের ভার প্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকরা আত্মসাত, দুর্নীতি ও অনিয়মে জড়ানোর উৎসাহ পান।

অথচ এ ধরণের আত্মসাতের ঘটনায় উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্র কসহ সংশ্লিষ্টদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার শতভাগ নজির রয়েছে। এর আগেও ময়মনসিংহ বিভাগের ফুলপুর আঠারবাড়ী ও সিএসডি সহ কয়েকটি খাদ্য গুদামে চাল ও খালি বস্তা আত্মসাতের ঘটনা ঘটে। জড়িতরাআটক হয়ে কারাভোগ, চাকরিচ্যূত ও বিভাগীয় মামলায় পড়েন।

সূত্র মতে,এপ্রিল মাসের শেষ দিকে মুক্তাগাছার মতো একই ঘটনা ঘটে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার ডুগডুগি খা দ্য গুদামে। খালি বস্তাসহ ৩১৯ টনের বেশি চাল আত্মসাত করে পালিয়ে যান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ারা বেগম। আত্মসাত করা চাল ও বস্তার সরকারি মূল্য ১ কোটি ৭০ লাখ টাকার কাছাকাছি।



Our Like Page