নিজস্ব প্রতিবেদক:
সাংবাদিক নেতা-শেখ তিতুমীর আকাশ:-রাজনৈতিক দর্শনের ভিত্তিতে ত্রিশের দশক থেকে এদেশে সংবাদপত্রের বিকাশ শুরু হয় এবং পরবর্তী দু’ দশকে এর বিকাশ ঘটে; অথচ পঞ্চাশ বা ষাটের দশকের সাথে আজকের সাংবাদিকতার বিরাটপার্থক্য লক্ষণীয়। সে সময় সাংবাদিকতায় আজকের মতো পেশাদারিত্ব না থাকলেও ছিলো নৈতিকতা ও দায়বদ্ধতা; শিক্ষিত তরুণরা সাংবাদিকতায় আসতেন যাদের মধ্যে ছিল শক্তিশালী রাজনৈতি ক দর্শন কিন্তু তার সাথে নৈতিকতার মানদণ্ডকেও তারা এড়িয়ে যেতেন না।অতীতে দেশে রাজনৈতিক মতাদর্শগত বিভেদ থে কে নতুন সংবাদপত্রের জন্ম হলেও বর্তমানে কেবল ব্যবসায়িক স্বার্থের কারণেই সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়।
এদেশে সাংবাদিকদের বেতন কাঠামো প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেনা শাসকদের হাত ধরেই আর তার মূলে ছিলো আসলে সাংবাদিক দের প্রতি তাঁদের ভালবাসার নয়, বরং তাদের কিনে নিয়ে মুখ বন্ধ করার প্রবণতা ১৯৬৪ সালে “প্রেস ট্রাস্ট” গঠনের মধ্য দিয়ে।
এদেশে সাংবাদিক কেনার যে প্রবণতা শুরু হয়েছিলো বর্তমানে কর্পোরেট বেনিয়াদের আগ্রাসন দ্বারা তার অন্তিম যাত্রাই যেন রচিত হচ্ছে। সময় যায়নি, স্বাধীন সাংবাদিকতার যে পরিবেশ প্রয়োজন, এই ক্ষুদ্র রাষ্ট্রটি তা কখনও নিশ্চিত করতে পারেনি; আর তাই ভূমিদস্যু, রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাটকারী,শ্রমিক নির্যাতন কারী শিল্পপতি সম্প্রদায় হয়েছে সংবাদপত্রের মালিক। বিরাট পুঁ জির মালিক যারা সংবাদপত্রে বিনিয়োগ করছেন তাদের মধ্যে সৎমানুষ,ভাল মানুষও আছেন, তারা দেশ এবং সমাজকে নিয়ে চিন্তা করেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে, গণমাধ্যমে বিভক্তি আর রাজনৈতিক বিভক্তি থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে স্বাধীন সাংবাদিকতা হবে না।
স্বাধীনতার পর চার দশক পেরিয়ে আজ তাই দেখতে পাই সাং বাদিকতা জগতে সৃষ্টি হয়েছে এক বিরাট নৈরাজ্যের, শূন্যতার; দেশের সংবাদমাধ্যমগুলো কর্পোরেট আগ্রাসনের শিকার হচ্ছে, কৃষ্ণপক্ষে ঘুরপাক খাচ্ছে। পুঁজিই এখন সাংবাদিকতার বড় প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে, আর সেই সাথে আছে
সাংবাদিকদের মধ্যে রাজনৈতিক বিভাজন।
রাজনৈতিক বিভাজন ও বৃহৎ পুঁজি ব্যবহারের ফলে সাংবাদিক তায় নীতি-নৈতিকতা মানা হচ্ছে না এ পেশাটি এখন সর্ব-সাধার ণের নিকট প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ছে। এখন অনেক মিথ্যা খবরই সত্য বলে প্রকাশ হয়, প্রকাশনার সাথে যুক্ত মালিকপক্ষ বা সংবাদ পত্রের মূল পরিচালকরা কিংবা তাদের দোসরাই এই কাজটি করছেন। সংবাদপত্রে অর্থ যেমন আসছে তেমনি বাড়ছে প্রতিযোগিতাও; কিন্তু একথাও মনে স্মরণ রাখতে হবে, অর্থ-বিত্তের জোরে নিয়ম-নীতি না মেনে এগিয়ে যাওয়া হয়তো যায় কিন্তু টিকে থাকা যায়না। পাঠকদের বিভ্রান্ত করে কোন সংবাদ মাধ্যম যে টিকতে পারে না