প্রথম বাংলা:রাজধানীর গুলিস্তানের গোলাপ শাহ মাজার এলা কায় হঠাৎ জয় বাংলা স্লোগানে মিছিল করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এরপর ঘটনাস্থলকে কয়েকজনকে আটকের কথা জানায় পুলিশ। সেখানে সাইদ শেখ নামে এক তরুণকেও আটক করা হয় বলে ভাষ্য পুলিশের। সবশেষ সন্ত্রাসবিরোধী আইনে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে পাঠানো হয়েছে কারাগারে। তবে এরপর থেকে আটক হওয়া সেই সাইদ শেখকে ঘিরে চলছে বিতর্ক। সাইদের আইনজীবী ও পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে সাইদ বাকপ্রতিবন্দ্বী।
অন্যদিকে পুলিশ বলছে, সেদিন মিছিলের সামনে থেকে ‘হাত নেড়ে’ স্লোগান দিয়েছে সাইদ। এর আগে বুধবার (২৪ অগাস্ট) গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল থেকে তাকে আটকের দাবি করে পুলিশ। পরে সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় সাইদসহ আটক তিনজনকে পাঠানো হয় কারাগারে। ২৫ আগস্ট তাদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন আদালত। অপর দুই আসামি হলেন, রাজু আহমেদ ও শেখ মো. শাকিল।
পল্টন থানার ওই মামলায় বলা হয়েছে, দেশের আইনশৃঙ্খলা বিনষ্ট করার পাশাপাশি বড় ধরনের ‘অঘটন’ ঘটাতে আসামিরা রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান দেন এবং সমাবেশ আয়োজনের চেষ্টাও করেন। সাইদের আইনজীবী প্রশ্ন তুলেছেন, বাকপ্রতিবন্ধী কীভাবে স্লোগান দেবেন? তার ক্ষেত্রে আইনের অপব্যবহার হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সাইদের আইনজীবী তাকে প্রতিবন্ধী দাবি করে জামিন চান। আদালত বৃহস্পতিবার শুনানির দিন নির্ধারণ করেন। এর মধ্যে বুধবার শুনানির আগের দিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মাকসুদুল হাসান সাইদকে প্রতিবন্ধী হিসেবে বিবেচনা না করে ‘তোতলা বা অস্পষ্টভাষী’ হিসেবে বিবেচনা করার আবেদন করেন।
আবেদনে তিনি বলেন, সাইদকে বাকপ্রতিবন্ধী হিসেবে ২৫ অগাস্ট আদালতে পাঠানো হয়। পরে তদন্ত করে জানা যায়, আসামি প্রকৃতপক্ষে বাক প্রতিবন্ধ নন। প্রতিবন্ধী হিসেবে কোনো দালিলিক সাক্ষ্যপ্রমাণও মেলেনি। আদালত এ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তার উপস্থিতিতে শুনানির দিন নির্ধারণ করেন বৃহস্পতিবার। বৃহস্পতিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মাকসুদুল হাসান আদালতে হাজির হন। কারাগার থেকে হাজির করা হয় সাইদকেও।
শুনানিতে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম জাকির হোসা ইন আদেশ দেন,সাইদ প্রতিবন্ধী কিনা,সে বিষয়ে জেল কোডের বিধান অনুযায়ী একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা পরীক্ষা করে ১ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে সিনিয়র জেল সুপারকে এ আদেশ দেওয়া হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মাকসুদুল হাসান বলেন, সাইদের স্পষ্ট কথা বলার ফুটেজ আছে।তবে মুখে জড়তা আছে জড়তা প্রতি বন্ধীর কাতারে পড়ে কিনা,আদালত সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত চেয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, নিষিদ্ধ দলের হয়ে মিছিলে সামনে থেকে হাত তুলে স্লোগান দিয়েছে সে। ঘটনাস্থল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে সে আমাদের অসহযোগিতা করেছে। নাম-ঠিকানা ঠিকমত বলছিল না,প্রতিবন্ধী বোঝাতে চেয়েছিল মামলা র তদন্ত চলছে। তদন্তে সব জানা যাবে। সাইদের আইনজীবী মোহাম্মদ লিটন মিয়া বলেন, পুলিশ বলছে, সাইদ আওয়ামী লীগের মিছিলে অংশগ্রহণ করেছে। সে তো বাকপ্রতিবন্ধী। আমরা যতটুকু জানি, ওকে পথ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তার আরেক আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রাখী বলেন, দেশে আইনের প্রয়োগটা আর নেই। একজন বাকপ্রতিবন্ধীকে রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সে মিছিল করেছে, স্লোগান দিয়েছে। বাক প্রতিবন্ধী স্লোগান দেবে কীভাবে। সাইদের ক্ষেত্রে আইনের অপব্যবহার হয়েছে।
সুত্র, mp news