সিমান্ত মোল্লা শরীয়তপুর জেলা প্রতিনিধি,
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় ফকিরের ভুল চিকি ৎসায় আল ইসলাম নামে এক মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে । এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে জাজিরা থানায় অভিযোগ দায়ের করে ছেন শিশুর বাবা।শিশু আল ইসলাম জাজিরা উপজেলার দক্ষিণ খোশাল শিকদার কান্দি গ্রামের রাসেল মাঝীর ছেলে।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে,শিশু আল-ইসলাম কয়েক দিন যাবৎ ঠান্ডা জনিত সমস্যায় ভূগিতেছিল। হঠাৎ একটু বেশি অসুস্থ হলে গত ৪ ফেব্রুয়ারী শিশু আল ইসলামকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায় তার পরিবার। জাজিরা উপজেরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে রেফার্ড করে। শিশুটিকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হলে পরের দিন সেখান থেকে আবার ঢাকা শিশু হাসপাতালে রেফার্ড করে।
শিশুটিকে ঢাকা নিয়ে যাওয়ার সময় একই উপজেলার ফকির মাহমুদ আকন কান্দি গ্রামের ফকির রহিম খান জানতে পেরে শিশুর বাবা রাসেল মাঝিকে ফোন করে বলেন,ঢাকা নেয়ার দরকার নেই। এটা কবিরাজী (ফকি র) এর চিকিৎসা। তুমি আমার নিকট নিয়ে আসো, আমি তোমার ছেলেকে সুস্থ করে দিবো।ফকিরের কথায় বিশ্বাস করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল থেকে গত ৫ ফেব্রুয়ারী সকাল,
দুপুর ও বিকালে তার নিকট নিয়ে যান এবং রহিম খান শিশুটিকে ৩ বেলা কবিরাজী চিকিৎসা দেন। চিকিৎসা বাবদ ৩ ধাপে মোট ৭০ হাজার ৫০০ টাকা নেন। এর পর গত ৮ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে শিশুটি মারা যায়। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে জাজিরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন শিশুর বাবা রাসেল মাঝি।
দাদা জমির মাঝি বলেন, আমার নাতির ঠান্ডা ঠান্ডা লা গলে গত ৪ তারিখে জাজিরা হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখান থেকে চিকিৎসক তাকে শরীয়তপুর সদর হাস পাতালে পাঠিয়ে দেন। শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি। পরদিন চিকিৎসক তাকে ঢাকা শিশু হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। তখন আমরা নাতিকে নিয়ে ঢাকা যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেই।এমন সময় ফকি র রহিম খান ফোন করে বলেন, ঢাকা নেয়ার দরকার নেই। আমার কাছে নিয়ে আসো। এটা ডাক্তারের চিকিৎসা না, এটা ফকিরের চিকিৎসা।
আমিই ঢাকা,আমিই শিশু হাসপাতাল পরে ৫ তারিখে শরীয়তপুর হাসপাতাল থেকে আমার নাতিকে বাড়িতে নিয়ে আসি। তখন ফকির রহিম খান আমাদের বাড়িতে আসে। তখন আমরা ফকিরকে বলেন,ছোট বাচ্চা, ডা ক্তার তাকে ঢাকা নিয়ে যেতে বলেছেন। আমরা তাকে ঢাকা নিয়ে যেতে চাই। তখন ফকির রহিম খান বলেন, আমারে একটু বিশ্বাস করেন। আমি মরে যাবো,তারপ রও বাচ্চার কিছু হবেনা আমি ওর চিকিৎসা করতেছি।
হাসপাতালে নেয়া লাগবেনা তখন আমি আমার ছেলে কে বললাম,বাবা তুই কারো কথা শুনিসনা,তুই বাচ্চাটা কে ঢাকা নিয়ে যা। তখন আমার ছেলে ও বাচ্চার মা প্র স্তুতি নিচ্ছে যখনই বাচ্চা নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়া না তখন ফকির রহিম পথ আগলিয়ে বলেন,কোথায় রওয়ানা করছেন? ওরে ঢাকা নিয়ে কি করবেন? আমি চিকিৎসা করতেছি না? আমি দেখতেছিনা? আপনাদে র বাচ্চা মরবোনা। ফকিরের কথা শুনে আমরা সবাই তব্দ খেলাম। তখন কি করবো আমরা বুঝতে পারতে ছিলামনা। তখন আমার ছেলে ও ছেলের বউ ফকিরের পা জড়িয়ে ধরলো। তখন ফকির আশ্বাস দিয়ে বললো, আপনাদের বাচ্চার কিছু হবেনা, ভালো হয়ে যাবে।
আপনার আমার উপর বিশ্বাস করেন এভাবে ফকির আমার নাতিকে ঢাকা নিয়ে যেতে দিলোনা। ফকির দিনে তিনবেলা আমার নিয়ে চিকিৎসা দেন পরে গত ৮ তারিখে আমার নাতি মারা যায়।
ফকির রহিম খান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,শি শুটিকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ঢাকায় নি য়ে যেতে বলেন। তখন শিশুর বাবা রাসেল মাঝি আমা কে ফোনে বলেন, দাদা এখন আমি কি করবো। তখন আমি তাকে বলেছি চিকিৎসকের পরামর্শ নাও, চিকিৎ সক যা বলে তা করো। তখন রাসেল মাঝি বলেন দাদা আমার কাছে টাকা নাই। তখন আমি বলেছি, তাহলে আমার কাছে নিয়ে আসো। আমি তাকে কিছু চিকিৎসা দিছি। এখন আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়ে গেলে আমার কি করার আছে। চিকিৎসা বাবদ ৭০ হাজার ৫০০ টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে ফকির রহিম খান বলেন,আমি চার আনা পয়সাও তার কাছ থেকে নেইনি সে দুই বছর আগে আমাকে একটা কম্বল দিয়েছিল।