June 16, 2024, 10:40 am
শিরোনামঃ
গবাদিপশুর ঔষধ তৈরিতে বাপ ছেলের ভেজাল কারখানা, গ্রেফতার তিন আজ বিশ্ব বাবা দিবস মিনায় শয়তানের উদ্দেশ্যে পাথর ছুঁড়বেন হাজিরা ফাঁকা হচ্ছে ঢাকা, শেষ মুহূর্তে বাড়ির পথে মানুষ ভূরুঙ্গামারীতে আদম ব্যাবসায়ীর জমজমাট ব্যাবসা,বাড়ী ভিটা হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষ উপজেলা উলিপুর (তিন) ইউপিতে ঈদুল আযহা উপলক্ষে ভিজিএফ‘র চাল বিতরণ: কেওয়াটখালীতে ট্রেনের উপর থেকে পরে এক যুবকের হাত কাটা পড়ে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশের আউট সোর্সিং সদস্যদের মাঝে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ এক হাটের পশু অন্য হাটে নেওয়ার চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা : আইজিপি আনার হত্যায় শাহীনের পক্ষে শিমুল, মিন্টুর পক্ষে ‘গ্যাস বাবু’
নোটিশঃ
আপনার আশেপাশের ঘটে যাওয়া খবর এবং আপনার ব্যবসার বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য যোগাযোগ করুন মানবাধিকার খবরে।

ত্রিশাল থানা পুলিশের সহযোগিতায় ত্রিশালে সংঘটিত ট্রিপল মার্ডারের ভিকটিমদের পরিচয় সনাক্ত, আসামী গ্রেফতার

Reporter Name

প্রথম বাংলা – ময়মনসিংহের ত্রিশালে চাঞ্চল্যকর ট্রিপুল মার্ডারের রহস্য উদঘাটন ও মূল আসামীকে ময়মনসিংহ ডিবি জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে।এ নিয়ে পুলিশ সুপারের সন্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিং আজ দুপুরে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গত ২১/০৫/২০২৪ খ্রিঃ তারিখ দুপুর অনুমান ১৪.০০ ঘটিকার সময় ত্রিশাল থানাধীন রামপুর ইউনিয়নের কাকচর নয়াপাড়া সাকিনস্থ প্রবাসী জনৈক কামরুল হাসান এর চাষের জমির আইলের পাশে মাংস বিহীন হাড় মাটির উপর পড়ে থাকা সংক্রান্ত সংবাদের ভিত্তিতে অফিসার ইনচার্জ এর নেতৃত্বে ত্রিশাল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে মোট ০৩ টি অর্ধগলিত, পোকায় খাওয়া লাশের মধ্যে ০২ টি শিশুর লাশ ধান ক্ষেতের উপর এবং ০১ টি লাশ আইলের পাশে মাটিতে পুতে রাখা অবস্থায় দেখতে পান। মাটিতে পুতে রাখা লাশ উত্তোলন করে একটি মহিলার অর্ধগলিত লাশ সনাক্ত হলেও পরিচয় সনাক্ত করা যায়নি।

থানা পুলিশের পাশাপাশি পুলিশে অন্যান্য বিশেষায়িত ইউনিট পিবিআই, সিআইডি, ডিবি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রযুক্তির সহায়তায় লাশের পরিচয় সনাক্তের চেষ্টা করেন কিন্তু লাশগুলো অর্ধগলিত হওয়ায় এবং শিশু বাচ্চা দুইটির লাশ মস্তক বিহীন হওয়ায় ফিঙ্গারপ্রিন্ট ম্যাচিং এর মাধ্যমে সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে ঘটনাস্থলেই লাশগুলোর সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুতসহ আনুষাক্সিগক অন্যান্য কার্যাদি সম্পন্ন করে ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ স্যাম্পল সংগ্রহের নিমিত্তে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে প্রেরনের জন্য লাশগুলো ত্রিশাল থানায় নিয়ে আসা হয়।

পরবর্তীতে ভিকটিমদের আত্মীয়-স্বজন থানায় এসে ভিকটিমদে র পড়নের কাপড়-চোপড় এবং অন্যন্যা বৈশিষ্ট দেখে পরিচয় সনাক্ত করেন। সনাক্তকৃত পরিচয় থেকে জানা যায় তিনটিলাশ যথাক্রমে ১) আমেনা খাতুন(২৫),স্বামী- আলী হোসেন,২) আবু বক্কর সিদ্দিকি (৪) ও ৩) আনাছ (২ বছর ৬ মাস),উভয় পিতা- আলী হোসেন,সাং-কাকচর নয়াপাড়া,ইউপি-রামপুর,থানাত্রিশাল ,জেলা-ময়মনসিংহ। সনাক্তকৃত লাশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক হল মা এবং সন্তান। ভিকটিমের পরিবারসূত্রে জানা যায়, ভিকটিমের পরিবার আমেনা খাতুন কিংবা তার স্বামী আলী হোসেন এর সাথে গত বৃহস্পতিবারের পর থেকে মোবাইলে যোগাযোগ করতে না পেরে আলী হোসেন এর নিজ বাড়ীতে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন যে,আলী হোসেন ঢাকার উদ্দেশ্যে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে গত শুক্রবার বাড়ি থেকে বের হয়ে যান তার পর থেকে আলী হোসেন পলাতক।

ভিকটিম আমেনা খাতুন এর মা মোছাঃ হাসিনা খাতুন (৬৫), স্বা মী-মোঃ আঃ খালেক,সাং-বাবুপুর,ইউপি-সাখুয়া,থানা-ত্রিশাল, জেলা-ময়মনসিংহ তার মেয়ের জামাই আলী হোসনে (৩৫), পিতা-মোঃ আব্দুল হামিদ,সাং-কাকচর নয়াপাড়া,ইউপি-রামপুর, থানা-ত্রিশাল,জেলা-ময়মনসিংহসহ অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে ত্রিশাল থানায় অভিযোগ দায়ের করিলে ত্রিশাল থানার মামলা নং-২৩,তারিখ-২২/০৫/২০২৪ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/৩০১/৩ ৪ পেনাল কোড-১৮৬০ রুজু করা হয়। মামলা দায়ের পরময়ম নসিংহ জেলার ডিবি পুলিশের একটি চৌকশ টিম উক্ত ঘটনার রহস্য উন্মোচন ও আসামী গ্রেফতারের জন্য মাঠে নামেন।

তথ্য প্রযুুক্তি ও নিজস্ব সোর্সের মাধ্যমে উক্ত হত্যাকান্ডের মূল হোতা ভিকটিমের স্বামী আলী হোসেনকে গত ২২/০৫/২০২৪ খ্রিঃ গাজীপুরের শ্রীপুর থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। ধৃত আসামী আলী হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে হত্যাকান্ডের লোমহর্ষক র্বণনা প্রদান করেন। হত্যাকান্ডের ঘটনার প্রেক্ষাপট হল ধৃত আসামী দিন মজুরের কাজ করত। তার কোন জমিজমা ছিল না অভাবের সংসারে স্ত্রী আমেনা খাতু ন এবং দুই ছেলে ছিল। বড় ছেলের নাম আবু বক্কর সিদ্দিক (৪ )ও ছোট ছেলে আনাছ( ২ বছর ৬ মাস)তিনি তার চাচারদেওয়া জমিতে অনেক দিন ধরে ঘর নির্মাণ করে বসবাস করিতেছে।

সংসারে সারা বছর অভাব অনটন লেগেই থাকত ঠিকমত তার সংসার চালাতে পারত না। তাই সে বিভিন্ন সময় তার স্ত্রী ভিকটি ম আমেনার নাম দিয়ে এনজিও থেকে টাকা তুলত। বেশকিছুদি ন পূর্বে সে এনজিও থেকে ১,৭০,০০০/-টাকা ঋণ নেয়। সেই টাকার কিস্তি পরিশোধ করতে না পারায় তাকে এবং তার স্ত্রীকে অপমান করা হত। প্রায়ই তার ছেলে ও বৌ না খেয়ে দিন কাটা ত ঋণের বোঝা, মানুষের অপমান, সংসারের অভাব অনটন থেকে মুক্তি পেতে ২/৩ মাস পূর্বেই আলী হোসেন সিদ্ধান্ত নেয় তার স্ত্রী ও সন্তানদ্বয়কে হত্যা করে নিজে আত্মহত্যা করবে।

পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক আসামী আলী হোসেন গত ১৭/০৫ /২০২৪ খ্রিঃ তারিখ শুক্রবার রাত অনুমান ০২.০০ ঘটিকায় তার স্ত্রী ও সন্তান ঘরে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় তার স্ত্রী আমেনা খাতুন কে ঘুম থেকে ডেকে তুলে। তার স্ত্রী আমেনা খাতুন বিছানা থেকে নেমে ঘরের মেঝেতে গিয়ে বসলে আলী হোসেন তার পিঠের পিঁছনে গিয়ে তার গায়ে থাকা ওড়না দিয়ে আমেনা খাতুন এর গলায় পেচিয়ে মাটিতে ফেলে দুই হাত দিয়ে টান দিয়ে শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে।

তারপর বিছানায় আসামী আলী হোসেন এর দুই ছেলে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় তার স্ত্রীর গলা থেকে ওড়না খুলে নিয়ে প্রথমে ছোট ছেলে আনাছ এর গলায় ওড়না পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে এবং পরপরই তার বড় ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিকি এর গলায় ওড়নার বাকী অংশ দিয়ে পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে আসামী আলী হোসেন এর স্ত্রীকে কাঁধে তুলে নিয়ে ঘরের পিঁছন দিয়ে জঙ্গলে নিয়ে রাখেন এবং এর পরপরই তার দুই ছেলেকেও কোলে করে ঐ জঙ্গলে নিয়ে আসে। তারপর জনৈক ইউসুফ ও কালামের জমির মাঝখানে সীমানা বরাবর মাটিতে গর্ত করে তার স্ত্রী ও তার ০২ সন্তানকে পুতে রাখে। ভোরের দিকে সেখান থেকে চলে এসে আসামী ঘরে ঘুমিয়ে পরে।

আসামী আলী হোসেন সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে আনুমানিক সকাল ১০.০০ ঘটিকায় বাড়ী হইতে হরিরামপুর এলাকায় চলে যায় এবং বিকালে বাড়ীতে ফিরে এসে মালামাল নিয়ে গফরগাঁ ও মশাখালী ষ্টেশনে গিয়ে ট্রেনে উঠে কমলাপুর রেল ষ্টেশনের উদ্দেশ্যে রওনা করে৷

ডিবির হাতে গ্রেফতারের আগে গ্রেফতার এড়ানোর জন্য বিভিন্ন জায়গায় গোপনে ছিল।উল্লেখ্য একই আসামীর বিরুদ্ধে ত্রিশাল থানায় ২০১২ সালে ধর্ষণ এবং শ্বসরোধ করে হত্যার ঘটনায় একটি মামলায় ০৫ বছর কারাভোগ করে ২০১৭ সালে আগস্ট মাসে জামিনে মুক্তি লাভ করেন মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Our Like Page