খান মাহাদী :-খোঁজ নিয়ে দেখো,তোমার জন্য কেউই থেমে নেই। সবাই ছুটে চলেছে যার যার আপন গতিতে,
আপন মতিতে।আলোর বিপরীতে দাঁড়ালে কখনো কখনো নিজের ছায়াটাও বেঁকে যায়।
আর মানুষ তো স্বাভাবিক!
আজকে যাকে খুব যত্ন করে হৃদয়ের মনিকোঠায় জায়গা করে দিচ্ছো,একসময় দেখবে সে-ই ব্যক্তিটাই তোমার হৃদয় ভাঙার কারণ হয়ে দাঁড়াবে!
আসলে পৃথিবীতে কেউ কারো নয়,
একমাত্র তুমিই তোমার আপন।
এই যে তুমি রোজ অশ্রুজলে ভাসছো,
ভেবো না যে কেউ এসে,তোমার চোখের জল মুছে দিয়ে তোমার হাসি মুখের কারণ হবে।
এতো আদিখ্যেতার সময় নেই কারো।
যতই রাগ,অভিমান করো না কেন,
তুমি মুখের ভাষাই না বলা পর্যন্ত,
তোমার চোখের ভাষা বোঝে নেয়ার ক্ষমতা নেই কারো।
তোমাকে বুঝতে হবে,পৃথিবীতে সবাই মাইন্ড রিডার হয়ে জন্মায় না।
যে হৃদযন্ত্রনাই রোজ জ্বলে পুড়ে মরছো,
নিয়ম করে সারাক্ষণ যে ব্যথায় গুমড়ে মরছো,
ভেবো না কেউ তোমার ব্যথার ভাগীদার হতে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বসে থাকবে।সব সময় বুকপকেটে এতো দয়া নিয়ে ঘুরে না কেউ।
দিন শেষে তোমার ব্যথা তোমাকেই পোহাতে হবে।
অতি সরলতায় ঠকেছো কখনো?
কোনো প্রত্যাশা ছাড়াই যাকে নিস্বার্থভাবে ভালোবেসে যাচ্ছো,ভেবে নিও না যে,বিনিময়ে শুধু অকারণে কেউ তোমায় সারাজীবন আগলে রাখার বায়না ধরবে।
পৃথিবীতে তোমার মতো বোকা সবাই নয়।
খুব যত্নসহকারে স্বপ্ন বুনছো?
তবে মনে রেখো রুপ আর টাকা ছাড়া,
পৃথিবীতে সবচেয়ে মূল্যহীন প্রাণীদের মধ্যে হয়ে উঠবে তুমিও একজন।সুতরাং কখনো না কখনো স্বপ্নের মায়াজাল থেকে বেরিয়ে,বাস্তবতার কারাগারে বন্দি হতে হবে তোমাকেই।মনে করো না যে সেই কারাগারের লৌহকপাট ভেঙ্গে কেউ কোনদিন তোমায় মুক্ত করতে আসবে।
নিজের সর্বশক্তি প্রয়োগ করে বের হতে হবে কেবল তোমাকেই।শুধু স্বপ্নচারী হলেই হয় না,
মানুষ তোমার মূল্যায়ন করবে কেবল তোমার যোগ্যতায়।কোন মানুষ হিসেবে নয়।
হয়তো তুমি একা নও,তোমার চারপাশে হয়তো বন্ধুমহলের আনন্দসভা।
তাহলে এখানে রইলো তোমার প্রতি আমার সবচেয়ে বড় সমবেদনা!বিনা স্বার্থে কেউ সারা জীবন বন্ধু হয়ে পাশে থাকবে না রে পাগল।
অকারণে কেউ ভালোবাসতেও আসবেনা।
হাতে হাত রেখে,কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে,তোমার বিষাদের দিনে খুব করে তোমায় জড়িয়ে ধরে,একটু শান্তনা দেওয়ার জন্য এই ব্যস্ত শহরে এতো সময় নেই কারো।
কুঁড়েঘর হোক কিংবা প্রাসাদ,
তোমার জন্ম যেখানেই হোক না কেন,
তোমাকে বুঝতে হবে,পৃথিবীটাকে পুরোপুরি চিনতে হলে জীবনে ধাক্কা খাওয়াটা খুব বেশি দরকার।
পথ চলতে চলতে হোঁচট খাওয়ারও প্রয়োজন আছে।
জীবনে কাউকে অন্ধভাবে বিশ্বাস করে,
সেই বিশ্বাস আবার তীব্রভাবে ভেঙে যাওয়ার ও দরকার আছে।
ভুল করে ভুল মানুষকে ভালোবেসে,
সেই ভুলের মাশুল দেয়াটাও শিখা দরকার।
মনের মাধুরী মিশিয়ে কাউকে গড়ে তোলে,
প্রয়োজনে তাকে অাবার সেচ্ছায় বিসর্জন দেয়ারও দরকার হয়।
কিছু শিখতে চাইলে,পথের বাঁকে বাকেঁ করা ভুলগুলোই তোমার জীবনের শিক্ষক হয়ে দাঁড়াবে।
আসলে জিততে হলে ভাঙা-গড়ার প্রতিটা খেলায় তোমাকে অংশগ্রহণ করতে হবে।
অপেক্ষারা বারবার উপেক্ষিত হলেও,
কখনো কখনো তোমায় সময়ের প্রতীক্ষায় অপেক্ষা করতেই হবে।
তুমি কি ভাবছো বেঁচে থাকাটা খুব সহজ?
মোটেও নয়।
কেবল বাঁচতে গেলেই তুমি বুঝতে পারবে যে,
জীবনের পথটা আঁকাবাঁকা হওয়াটা আসলে খুব বেশি জরুরী!চিকিৎসাবিজ্ঞানে একটা ই.সি.জি তে ও সরলরেখার মানে হলো তুমি মৃত।
তাই চলার পথের ভুলগুলোকে কখনো কষ্ট হিসেবে নিও না।শিক্ষা হিসেবে নাও।
কারণ,এই ভুলই তোমাকে মনে করিয়ে দিবে যে,
কেবল মৃত্যুর অপেক্ষায় দিনশেষে,
তোমাকে তোমার জন্যই বাঁচতে হবে।
ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে গিয়েও,
তোমাকে কেবল তোমার জন্যই বেঁচে ওঠা শিখতে হবে।।