মোঃ তানভীর, সোনারগাঁও প্রতিনিধি ঃ-
গত ০৬ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৩০ তম জাতীয় সম্মেলন করা হয়েছে। সম্মেলনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিকভাবে নতুন নেতৃত্ব বাছাই করার কথা। কিন্তু আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে সংগঠনের সর্বোচ্চ অভিভাবক মনে করে ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের সম্মেলন হলেও তিনিই মূলত শীর্ষ নেতৃত্ব বাছাই করে থাকেন। এদিকে ইতোমধ্যে দলের হাইকমান্ডের কাছে তদবির করছেন ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতারা, চলছে জোর লবিং। যাতে তাদের নাম সভানেত্রীর কাছে উত্থাপন করেন হাইকমান্ডের নেতারা।
ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, এতদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন-কেন্দ্রিক রাজনৈতিক কার্যক্রম ছিল ছাত্রলীগ নেতাদের। এখন পদপ্রত্যাশীদের চলাফেরা দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ের দিকে বেশি দেখা যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে যাদের সাংগঠনিক সক্ষমতা ভালো, রয়েছে ক্লিন ইমেজ এবং যাদের পরিবারের সঙ্গে জামায়াত-বিএনপির কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই, তারাই আগামীর নেতৃত্বে আসবে। এছাড়াও যারা শিক্ষার্থীদের কাছে জনপ্রিয় এবং মানবিক কাজে করে আলোচনায় আসতে পেরেছেন, এমন ছাত্রনেতারাও এগিয়ে থাকবেন।
নতুন নেতৃত্বের গুণাবলি নিয়ে ভাবছেন কর্মীরাও। কর্মীদের প্রত্যাশা কর্মীবান্ধব ও সাংগঠনিকভাবে দক্ষ এবং অসাম্প্রদায়িক ইস্যুতে অনলাইন ও অফলাইনে পরীক্ষিত। একইসঙ্গে বয়সের দিক থেকে তরুণ নেতৃত্ব এলে শিক্ষার্থীরা সহজেই নেতার সঙ্গে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে পারবেন। আঞ্চলিকতা পরিহার করে যোগ্য ও ত্যাগীদের মূল্যায়নের প্রত্যাশা সাধারণ কর্মীদের।
বিগত কয়েক বছরে দেখা গেছে, নির্দিষ্ট কয়েকটি অঞ্চল থেকে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে বৃহত্তর ফরিদপুর, বরিশাল, চট্টগ্রাম, উত্তরবঙ্গ, খুলনা, ময়মনসিংহ এবং সিলেট বিভাগ। তবে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা জেলার পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ,নরসিংদী, গাজীপুর ও মুন্সিগঞ্জ থেকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের শীর্ষ পদে আসছে না বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদে। সর্বশেষ ২৫ তম সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হন নজরুল ইসলাম বাবু। তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জ জেলায়। সুতরাং দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান চান এ অঞ্চলের ছাত্রনেতারা।
ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদের অনেকেই এবার কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের শীর্ষ দুই পদে আলোচনায় আছেন। তাদের মধ্যে ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা নারায়ণগঞ্জ জেলা থেকে স্যার এ এফ রহমান হল ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক আব্দুর রহিম সরকার। নরসিংদী জেলা থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক শামীম পারভেজ, উপ- তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এহসান উল্লাহ পিয়াল, উপ- গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক সাইফুল্লাহ আব্বাসী অনন্ত এবং গাজীপুর জেলা থেকে ফজলুল হক মুসলিম হল ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ নাইম,ড. শহীদুল্লাহ্ হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফ আহমেদ মুনিম।
ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক আব্দুর রহিম সরকার বলেন, ঢাকার আশে-পাশের এলাকা নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ প্রভৃতি এলাকায় ছেলে-মেয়েরা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতিতে তেমন মূল্যায়িত হয় না। ছাত্রলীগের শীর্ষ পদগুলোতে এসব এলাকার ছেলে-মেয়েদের সব সময় বঞ্চিত রাখা হয়। এতে এসব এলাকায় নেতৃত্বের শূণ্যতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ ছাত্রলীগে এসব এলাকা হতে নেতৃত্বের প্রয়োজন বলে মনে করি। যোগ্য-মেধাবী হলে এসব এলাকা হতেও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের শীর্ষ পদে আসতে পারে। সুতরাং আমি মনে করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা বিষয়টি বিবেচনা করবেন।