প্রথম বাংলা – ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলা দেশ ও বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপি এম (বার),পিপিএম বলেছেন,বাংলাদেশ পুলিশের নারী সদস্যরা তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব অত্যন্ত নিষ্ঠা র সাথে চমৎকারভাবে পালন করে মানুষের আস্থা অর্জন করেছেন।আইজিপি (১৩ মার্চ ২০২৩ খ্রি.) দুপুরে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়াম, রাজারবাগ, ঢাকায় বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়ো জিত সম্মাননা স্মারক প্রদান,আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন।অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস আ্যসোসিয়েশনের সভাপতি ও স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এস বি) প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. মনিরুল ইসলাম বিপিএম (বার),পিপিএম। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা সেন্টা র ফর জেন্ডার আ্যন্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের পরিচা লক প্রফেসর ড. তানিয়া হক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস আ্যসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদু জ্জামান পিপিএম (বার)।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর (ডিএম পি) পুলিশের কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বিপিএম (বার),পিপিএম,সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ফাতেমা বেগম,সাবেক ডিআইজি মিলি বিশ্বাস,এসবি র ডিআইজি ও বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন নেটওয়ার্কে র (বিপিডব্লিউএন) সভাপতি আমেনা বেগম বিপিএম প্রমুখ।বাংলাদেশ পুলিশে নারীদের অংশগ্রহণের কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন,বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশে চারজন নারী ডিআইজি,২৪ জন নারী অতি রিক্ত ডিআইজি ও ৬৪ জন নারী পুলিশ সুপার রয়েছে ন বাংলাদেশ পুলিশে নারী পুলিশের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।আইজিপি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ পুলিশে নারী পুলিশের সংখ্যা দুই ভাগ থেকে বেড়ে বর্তমানে আট ভাগে উন্নীত হয়েছে। বাংলা দেশ পুলিশে নারী পুলিশ সদস্য সংযোজনের ফলে আমাদের সক্ষমতার মাত্রা অনেক বেড়েছে।
তিনি বলেন,পুলিশে নারীর পদচারণা একসময় এতটা মসৃণ ছিল নাতখন তাদেরকে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকা বেলা করতে হয়েছে।বাংলাদেশ পুলিশে নারীদের অবস্থান আজ সুদৃঢ় হয়েছে পূর্বসূরীদের দেখানো পথ ধরে। আজকে নারী পুলিশ সদস্যরা দক্ষতার সাথে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করছেন।নারীরা যত চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করবে তারা ততো এগিয়ে যাবে তিনি বলেন, করোনার সময় যখন মানবিকতার চরম বিপর্যয় ঘটেছে তখন বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন নেটওয়ার্ক ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে বিভিন্নভাবে নারী পুলিশ সদস্যদের সাহায্য সহযোগিতা করেছে,যা সত্যিই প্রশংসনীয়।
নারী ভিকটিমদের সুরক্ষার বিষয় উল্লেখ করে আইজি পি বলেন,নারী পুলিশ সদস্যরা নারী ভিকটিমদের সহা য়তা দিচ্ছেন।এতে নারীদের কাছে পুলিশের গ্রহণযো গ্যতা বেড়েছে। তিনি বলেন,ট্রিপল নাইন আজ একটি আস্থার প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে এখানেও রয়েছে নারী পুলিশ সদস্যদের অনবদ্য অবদান।নারীর অধিকা রের কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন,আমি যদি আমার অধিকার পেতে চাই তবে আমাকে সোচ্চার হতে হবে।যোগ্যতা প্রমাণের মধ্য দিয়ে নিজের অধিকা র আদায় করে নিতে হবে।ডিএমপি কমিশনার বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের নারী সদস্যরা দেশ ও দেশের বাইরে মেধা ও যোগ্যতার সাথে দায়িত্ব পালন করে তাদের সক্ষমতার প্রমাণ রাখছেন।তিনি বলেন,ভিকটি ম সাপোর্ট সেন্টার ও উইমেন সাপোর্ট সেন্টারে শুধুমা ত্র নারী পুলিশ সদস্যরা কাজ করছেন।নির্যাতিত নারী দেরকে মানসিক ও আইনগত সেবাসহ বিভিন্নভাবে সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছেন নারী পুলিশ সদস্যরা।বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমা নে নারীরা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন অদূর ভবিষ্যতে দেশে নির্দিষ্ট করে আলাদাভাবে নারী দিবস পালনের দরকার হবে না। প্রযুক্তিগত শিক্ষায়ও আমাদের দেশে র মেয়েরা অনেক এগিয়ে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. তানিয়া হক তার সুপারিশে বলেন,অনলাইনে নিরাপদ বিচরণের জন্য জাতীয় থেকে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত আইনের যথাযথ প্রচার, প্রসার এবং প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। এর সাথে নারীদেরকেও নিজের আইনি অধিকারের ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি আমাদের শিক্ষাব্যব স্থাকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যাতে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই সকল মানুষের সমান অধিকা রের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মানসিকতা নিয়ে বেরিয়ে আসতে পারে। নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের মাধ্যমে এক্ষেত্রে সমতা আনতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও স্পেশাল ব্রাঞ্চের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. মনি রুল ইসলাম বিপিএম (বার),পিপিএম (বার) বলেন ,ইন্টারনেটে সাইবার প্ল্যাটফর্মে নারীরা নিরাপদ নয়, ফলে তারা নানাভাবে হয়রানি, বুলিংয়ের শিকার হয়এম নকি আত্মহত্যার ঘটনা পর্যন্ত ঘটছে।বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে নারীদের সহয়তার জন্য সাইবার স্পেসে প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি সাইবার কেন্দ্রিক আমাদের অন্যা ন্য ইউনিটও রয়েছে। আমরা যদি সাইবার স্পেসে সেফটি আ্যন্ড সিকিউরিটি নিশ্চিত করতে পারি তাহলে নারীদের ক্ষেত্রে বড় বাধা কেটে যাবে পুলিশ হিসেবে আমাদের ওপর সে দায়িত্ব বর্তায়।
তিনি বলেন,প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করতে হলে নারী পুলিশ সদস্যের সংখ্যা বাড়াতে হবে, নারীর ক্ষমতায়ন করতে হবে,তাদেরকে নীতিনির্ধারণীতে আনতে হবে।পাশাপাশি সকল নারীদেরকে সমান সুযোগ করে দিতে হবে,এই কাজের দায়িত্ব যেমন পুরুষ সহকর্মী দের তেমনি নারীদেরও দায়িত্ব আছে নারীদেরও আগামী র অগ্রগতির জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।নিজেকে নারী হিসেবে না দেখে কর্মকর্তা হিসেবে ভাবতে হবে তবেই আমরা এগোতে পারবে।’ডিজিটাল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন জেন্ডার বৈষম্য করবে নিরসন’ প্রতিপাদ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ফাতেমা বেগম, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি রওশন আরা বেগম (মরণো ত্তর),সাবেক ডিআইজি মিলি বিশ্বাস,বাংলাদেশ পুলিশ এয়ার উইংয়ের প্রথম নারী পাইলট ফাতেমা তুজ জোহরা এবং বিপিডব্লিউএন-কে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।