প্রথম বাংলা – সড়ক ও মহাসড়কে সবজিসহ অন্যান্য পণ্যবাহী ট্রাক হতে অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলনের সময় হাতেনাতে ৫০ জন চাঁদাবাজকে ময়মনসিংহের বিভিন্ন স্থান হতে গ্রেফতার করেছে র্যাব -১৪, ময়মনসিংহ চাঁদাবাজির ৬০,৮৬১ হাজার টাকা ও বিভিন্ন আলামত উদ্ধার।*
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন,র্যাব এলিটফোর্সহিসেবে আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই বিভিন্ন ধরণেরঅপরা ধ নির্মূলের লক্ষ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে আসছে। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূল ও মাদক বিরোধী অভিযানের পাশাপাশি খুন,চাঁদাবাজি,চুরি,ডা কাতি ও ছিনতাই চক্রের সাথে জড়িত বিভিন্ন সংঘবদ্ধ ও সক্রিয় সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে র্যাবের জোরালো তৎপরতা অব্যাহত আছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ময়মনসিংহসহ সারাদেশে নিত্যপ্রয়ো জনীয় পণ্যের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে দেশের সকল শ্রেণীর নাগরিকগণ বাজার করতে গিয়ে দূর্ভোগের স্বীকার হচ্ছেন। ময়মনসিংহের বিভিন্ন এলাকায় খুচরা সবজি বাজারে অধিক দামে সব জি বিক্রয়ের ব্যাপারে জনমনে অসন্তোষ পরিলক্ষিত হয়। যেখানে পাইকারী বাজার এবং খুচরা বাজারে সবজির মূল্যে তারতম্য দেখা যায়।
পণ্য উৎপাদনের স্থান হতে পাইকারী বাজারে পরিবহ নের সময় দেশের বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে ধাপে ধাপে চাঁদা দেয়ার কারণেপাইকারীবাজারে এসে বেড়ে যাচ্ছে সবজির দাম। যার মাশুল গুনতেহয় সাধারণ ক্রেতাদের। কিছু কিছু স্থানে র্যাব ও ভোক্তাঅ ধিকারের সমন্বয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে সাময়িক সময়ের জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজা র স্বাভাবিক থাকলেও পরবর্তীতে আবার পূর্বের মত উচ্চ মূল্যে বিক্রয় হচ্ছে।
সাধারণ মানুষের এই দুর্ভোগের বিষয়টি সাম্প্রতিক সম য়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অনলাইন ভিত্তিক নিউজের মাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে সাম্প্রতিক সময়ে পণ্যবাহী পরিবহনে চাঁদাবাজিরবিষয় টি ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ব্যাপকভাবেপ্রচারিত হওয়ায় দেশব্যাপী আলোচিত হচ্ছে। উক্ত জনদূর্ভোগ দূর করার লক্ষ্যে র্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরের নির্দেশ না অনুযায়ী ময়মনসিংহসহ সারাদেশে র্যাবের বিভিন্ন ইউনিটের গোয়েন্দা দল তাদের নিজ নিজ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় পাইকারী বাজারসহ বিভিন্ন স্থানের চাঁদাবাজি র তথ্য উদ্ঘাটনের জন্য কাজ শুরু করে।
এরই প্রেক্ষিতে জানা যায়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলেরউৎ পাদনকারীদের নিকট হতে পন্য সামগ্রী সংগ্রহ পূর্বক ট্রাক/পণ্যবাহী যানবাহনে পাইকারী ও খুচরা বাজারে পৌছানোর সময় পথিমধ্যে নামে বে-নামে ভূয়া রশিদ অথবা কখনো কৌশলে বিভিন্ন ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে বিপুল পরিমান অর্থ চাঁদাবাজি করা হয়।
৩।এরই ধারাবাহিকতায় অধিনায়ক র্যাব-১৪,ময়মনসিং হ মহোদয়ের নির্দেশক্রমে র্যাব-১৪,সদরব্যাটালিয়নের অপারেশনস্ অফিসার উপ-পরিচালক মোঃ আনোয়ার হোসেন ও এএসপি জাহিদ হাসান এর নেতৃত্বে সকাল ০৮.০০ঘটিকা থেকে ১১.০০ ঘটিকা পর্যন্ত ময়মনসিংহ এর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সংঘবদ্ধ পণ্যবাহী গাড়িতে চাঁদাবাজ চক্রের সক্রিয় সদস্য সর্ব মোট ৫০ জন কে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার করা হয় চাঁদা আদায়ের নগদ ৬০,৮৬১ .টাকা, ৪৩ টি মোবাইল এবং বিপুল পরিমান চাঁদা আদায়ের রশিদ।
কোতোয়ালি থানাধীন শম্ভুগঞ্জ ব্রীজ এলাকা থেকে সর্ব মোট ১২ জন গ্রেফতার করা হয়েছেগ্রেফতার কৃত মোঃ সিদ্দিক এর নেতৃত্বে ময়মনসিংহ এলাকায় পণ্যবাহী গাড়িতে চাঁদা আদায় করে থাকে।গ্রেফতারকৃত মোঃ সিদ্দিক ও তার সহযোগী আসামিদের চাঁদাবাজি করার জন্য নিয়োগ করে।কোতোয়ালি থানাধীন শম্ভুগঞ্জ বাজার এলাকা থেকে সর্বমোট ০৭ জন গ্রেফতার করা হয়েছে । গ্রেফতার কৃত মোঃ মোস্তোফা এর নেতৃত্বে ময়মনসিংহ এলাকায় পণ্যবাহী গাড়িতে চাঁদা আদায় করে থাকে।
থানাধীন রহমতপুর বাইপাস ও আকুয়া বাইপাসএলাকা থেকে ১১ জন গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার কৃত মোঃ লাল মিয়া ও লুৎফর রহমান বসির এর নেতৃত্বে ময়মনসিংহের রহমতপুর বাইপাস ও আকুয়া বাইপাস এলাকায় পণ্যবাহী গাড়িতে চাঁদা আদায় করে থাকে।
সদর এলাকা থেকে ০৭ জন গ্রেফতার গ্রেফতার কৃত রাসেল এর নেতৃত্বে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা এলাকা এলাকায় পণ্যবাহী গাড়িতে চাঁদা আদায় করে থাকে।
তারাকান্দা উপজেলার কাশিগঞ্জ এলাকা থেকে ১৩জন আটক। গ্রেফতার কৃত কামাল হোসেন এর নেতৃত্বে ময় মনসিংহের কাশিগঞ্জ এলাকায় পণ্যবাহী গাড়ি থেকে চাঁদা আদায় করে থাকে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা উক্ত চাঁদাবাজি র সাথে তাদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যপ্রদা ন করে।তারা ময়মনসিংহের বিভিন্ন সড়ক ওমহাসড়কে পণ্যবাহী গাড়িতে চাঁদাবাজি করে।গ্রেফতারকৃতরাকয়ে কটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে প্রতি রাতে ময়মনসিংহের বিভি ন্ন এলাকায় রাস্তার উপর অবস্থান নেয়। দেশের বিভিন্ন স্থান হতে পণ্যবাহী যানবাহন ময়মনসিংহের প্রবেশের সময় তারা লেজার লাইট, লাঠি ও বিভিন্ন সংকেতের মাধ্যমে গাড়ি থামিয়ে ড্রাইভারদের নিকট অবৈধভাবে চাঁদা আদায় করে থাকে।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারা চাঁদা আদায়ের রশিদও প্রদান করে থাকে।ড্রাইভাররা তাদের চাঁদা দিতে অস্বীকার কর লে তাদের গাড়ি ভাংচুর, ড্রাইভার-হেলপারকে মারধর সহ প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে। তারা প্রতিটি ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহন হতে ১৫০-২৫০ টাকা চাঁদা আদা য় করে থাকে। পণ্যবাহী কোন গাড়ি দেখলেই তারা লে জার লাইটের আলো নিক্ষেপ করে তা থামিয়েকৌশলে বিভিন্ন অজুহাতে চাঁদা আদায় করে থাকে।বিশেষ করে মধ্য রাতে ময়মনসিংহের বিভিন্ন এলাকায় যখন পণ্যবা হী ট্রাক ঢাকা প্রবেশ করে উক্ত সময় সড়কে এমন চিত্র শুরু হয়। উক্ত চক্র ময়মনসিংহের বিভিন্ন স্থান হতে প্র তি রাতে পণ্যবাহী গাড়ির চালকদের নিকট হতে লক্ষা ধিক টাকা চাঁদা আদায় করে থাকে বলে জানা যায়।
যারা আসন্ন পবিত্র মাহে রমজানকে কেন্দ্র করে অবৈধ ভাবে পণ্য মজুদ করে কারসাজির মাধ্যমে নিত্যপণ্যে র বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করে জনদুর্ভোগ সৃ ষ্টি করবে,মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাক্রমে র্যাব – ১৪ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাসহ তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা করবে। র্যাব – ১৪ সম্মানিত নাগরিক সমাজকে আহবান জানাচ্ছে যে,যারা কারসা জির মাধ্যমে নিত্যপণ্যের অবৈধ মজুদ করবে তাদের সম্পর্কে তথ্য দিয়ে র্যাবকে সহায়তা করুন,এক্ষেত্রে তথ্য প্রদানকারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।মাত্র তিন ঘন্টার অভিযান পরিচালনা করে সর্বমোট ৬০,৮৬১ টাকা,মোবাইল ফোন ৪৩ টি ও বিপুল পরিমাণ চাঁদা আদয়ের রশিদ উদ্ধার সহ ৫০ জন শীর্ষ চাঁদাবাজ কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৪, ময়মনসিংহ।