মো: সবুজ হোসেন রাজা,সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে ‘ছোট নদী’ খ্যাত খোনকারের জোলার খাস জায়গায় বাঁশের মাচাল তৈরি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে একদল উশৃংখল যুবকের হামলায় আজমির হোসেন ওরফে বিপুল সরকার (৩৫) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। নিহত বিপুল সরকার শাহজাদপুর পৌরসভার রামবাড়ি এলাকার বাসিন্দা এবং মৃত মাজেদ সরকারের ছেলে। তার তিন সন্তান রয়েছে—দুই ছেলে ও এক মেয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) রাতে আহত অবস্থায় বিপুলকে প্রথমে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে দ্রুত জেলার পার্শ্ববর্তী এনায়েতপুরের খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত ১১টার পর তার মৃত্যু হয়।
খবর পেয়ে রাতেই শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আছলাম আলী সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রাথমিক তদন্ত করেন। তিনি জানান, মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।
নিহতের বড় ভাই নুরুজ্জামান অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় মোকছেদ আলী বগা মেম্বারের ছেলে শহিদুল ইসলাম এবং তার সহযোগী সাদ্দাম হোসেন, রুবেল, কাউসার, তরিকুল ও মফিজসহ ২৫-৩০ জন এলাকায় মাদক কারবার এবং ইয়াবা সেবনের সঙ্গে জড়িত। রাতে তাদের আড্ডাবাজি ও অপরাধমূলক কার্যকলাপ ঠেকাতে স্থানীয়রা মিলে পাহারা দেওয়ার উদ্যোগ নেয় এবং বাঁশ দিয়ে একটি মাচাল তৈরির চেষ্টা করে। এতে বাধা দিলে ওই উশৃংখল যুবকরা ক্ষিপ্ত হয়ে বিপুলের ওপর হামলা চালায়। তারা হাতুড়ি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে তাকে গুরুতর আহত করে।
শাহজাদপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আল মাহমুদ বলেন, এলাকায় কিছু উশৃংখল যুবক প্রকাশ্যে মাদক সেবন ও কেনাবেচা করে। তারা দিনদিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। একটি তাজা প্রাণের নির্মম হত্যাকাণ্ড তাদের বর্বরতারই প্রমাণ। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার ও অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
ওসি আছলাম আলী আরও বলেন, ঘটনাস্থল থেকে কিছু তথ্য সংগ্রহ করে দু’একজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত যুবকরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে। ফলে তাদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা হোক।