মো: সবুজ হোসেন রাজা, সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে স্বামীর ছুরিকাঘাতে নির্মমভাবে নিহত হয়েছেন রোমানা খাতুন (২৫) নামে এক গৃহবধূ। বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) গভীর রাতে উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের ব্রজবালা পুরানপাড়া গ্রামে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
নিহত রোমানা উল্লাপাড়া উপজেলার সোনতলা গ্রামের মোতাহার হোসেনের মেয়ে। এক বছর আগে শাহজাদপুর উপজেলার ব্রজবালা পুরানপাড়া গ্রামের আফছার আলীর ছেলে আশরাফুল ইসলাম সোহাগ (২৮)-এর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বিয়ের পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলছিল। এ নিয়ে একাধিকবার দুই পরিবারের মধ্যে সমঝোতা বৈঠক হলেও বিরোধ মেটেনি।
বুধবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১টার দিকে ব্যক্তিগত বিষয়ে রোমানা ও সোহাগের মধ্যে ঝগড়া বাঁধে। একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে সোহাগ ধারালো ছুরি দিয়ে স্ত্রীর বুকে ও পিঠে আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় রোমানার। পরে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ঘরের মেঝে ও বিছানার রক্ত পরিষ্কার করে সোহাগ প্রচার করতে থাকে যে, তার স্ত্রী পাতলা পায়খানায় অসুস্থ হয়ে মারা গেছে।
খবর পেয়ে শাহজাদপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হারিছুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আছলাম আলী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
নিহত রোমানার দুলাভাই বায়েজিদ হোসেন জানান, বিয়ের আগে থেকেই সোহাগের সঙ্গে অন্য এক মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পারিবারিক চাপে সে রোমানাকে বিয়ে করলেও বিয়ের পর থেকেই তার ওপর নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। বিষয়টি পারিবারিকভাবে মীমাংসার চেষ্টা করা হলেও কোনো সমাধান হয়নি।
শাহজাদপুর থানার ওসি মোঃ আছলাম আলী বলেন, সংবাদ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। তখন বাড়ির অন্যান্য সদস্যরা পলাতক ছিল। তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে স্বামী আশরাফুল ইসলাম সোহাগকে আটক করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সোহাগ দাবি করে, তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে। তবে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদনের পর অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যার দায় স্বীকার করে এবং এর কারণ হিসেবে দাম্পত্য কলহের কথা উল্লেখ করে।
পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় শাহজাদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।