আবুল হাশেম, রাজশাহী প্রতিনিধিঃ
নীল আকাশের নিচে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠজুড়ে হলুদ সরিষা ফুল। সকালের সূর্যের কিরণ প্রতিফ লিত হবার সঙ্গে সঙ্গেই সরিষা ফুলের সমারোহে হেসে ওঠে চারদিক।মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌ মাছিরা ,পড়ন্ত বিকেলের মিষ্টি রোদে সরিষা ফুলগুলো বাতাসে দোল খেতে থাকে।ফুলগুলোর তাদের কলি ভেদ করে সুভাস ছড়িয়ে দিচ্ছে চারদিকে। এ যেন প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের লীলা ভূমি।
সরেজমিন সরিষা জমিতে গিয়ে দেখা যায়, ফুলের সৌন্দর্য যেন পুরো মাঠ’কে এক অন্য রূপ দিয়েছে।প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিলিয়ে আছে চারিদিক। স্থানীয় অনেকেই বিকেল হলে প্রাকিতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে সরিষা মাঠ জুড়ে ভিড় করছেন স্থানীয় বিভিন্ন বয়সের নারী, পুরুষ, শিশুসহ বিনোদন প্রেমিরা। সরিষা মাঠ ঘুরে ঘুরে দেখছেন। কেউবা আবার মোবাইলফোনে সেলফি তুলছেন।
একাধিক কৃষকের সঙ্গে বলে জানা যায়, এক সময় জেলায় ব্যাপক পরিমাণে সরিষার আবাদ হতো। সয়াবিনের ওপর নির্ভরতা বাড়ায় বর্তমানে অনেকটাই কমে গেছে সরিষার আবাদ। তবুও ধান চাষের পাশাপাশি ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সরিষার চাষ হয়ে থাকে। জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে চকরাজাপুর ইউনিয়ন জুড়ে উৎপাদিত হচ্ছে সরিষা। আগের তুলনায় জেলায় জেলায় বাড়ছে সরিষা উৎপাদন। হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ। কৃষক রহমান আলী সাথে কথা বললে তিনি বলেন, সরিষা চাষ করতে প্রতি কানি জমিতে ৩ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। লাভ হবে প্রতি কানিতে ৫ হাজার টাকা। সরিষা চাষে যে সার আমরা ব্যবহার করি, পরবর্তীকালে ইরি ধান রোপনের সময় সার বেশি দেওয়া লাগে না। এতে আমাদের খরচ কিছুটা কমে যায়। এবার মেঘ-বৃষ্টি না হলে আমরা লাভবান হবো।
সরিষা হলো শীতকালীন আবাদ। মাঠ পরিদর্শন কালে এক কৃষকের সাথে কথা বললে তিনি জানান ফুল আসা শুরু হয়েছে মাত্র। কার্তিক মাসে বীজ বুনেছি, পৌষ-মাঘ মাসের দিকে সরিষা তুলবো। বাঘা উপজেলা জেলা কৃষি কর্মকর্তা মো শফিউল্লাহ জানান যে, সরিষা আবাদ আমাদের দেশের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ । তিনি আরও বলেন, সয়াবিনের ওপর নির্ভর হওয়ার কারণে সরিষার আবাদ এখন অনেকটা বিলুপ্তির পথে। আমরা তেল জাতীয় ফসল আমদানি করার জন্য সরিষা চাষকে গুরুত্ব দিচ্ছি। দুই ফসলি জমিকে তিন ফসলি করারও চেষ্টা করছি।