বিনা’র ডিজি আবুল কালাম আজাদ তিরষ্কার না করে পুরষ্কৃত করা হয়েছে। সর্বত্র নিন্দার ঝড় ঃ অপসারণ দাবী
স্টাফ রিপোর্টার: বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনকে প্রকাশ্যে বিরোধীতাকারী আওয়ামী মদদপুষ্ট ও সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) এর মহাপরিচালক ড. মোঃ আবুল কালাম আজাদ এখনও বহাল তবিয়তে। তার অপকর্মের জন্য তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করে বরং পুরষ্কৃত করা হয়েছে। আবুল কালাম আজাদকে বাংলাদেশ কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের সদস্য করা হয়েছে। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে নিন্দার ঝড় বইছে।
অনেকে তাকে বিনা থেকে প্রত্যাহার করে তদন্ত সাপেক্ষে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানাচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে বিনা’য় কর্মরত বিএনপি পন্থী বেশ কয়েকজন বিজ্ঞানী আবুল কালাম আজাদকে মদদ দিচ্ছেন। এতে তারা ব্যক্তিগতভাবে সুবিধা ভোগ করলেও সরকারের আদর্শ ও উদ্দেশ্য চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।সূত্র মতে ড. মোঃ আবুল কালাম আজাদ বিএনপি পন্থী বিজ্ঞানীকে নিজের পক্ষে নিয়ে কৌশলে পতিত স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট সরকারের পইে কাজ করছেন। অভিযোগের ভাষায় আওয়ামী সরকারের স্বৈরাচারী কর্মকান্ড ও কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতার উপরে চালানো গণহত্যার অন্যতম সহযোগী ছিলেন বিনা’র বর্তমান মহাপরিচালক ড. মোঃ আবুল কালাম আজাদ।
বিনা’কে তিনি একটি দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করে দুর্নীতিবাজদের আখড়ায় পরিণত করেছেন। সাবেক কৃষি মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা কৃষিবিদ বাহা উদ্দিন নাসিম ও সদ্য পদত্যাগকারী সাবেক কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার এর মদদপুষ্ট ও বিশ^স্থ সহচর হওয়ার কারণে ড. মোঃ আবুল কালাম আজাদ বিনা’য় নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করে নিতে সক্ষম হয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে সাবেক ৩ জন ছাত্রলীগ নেতাকে বিনা’তে বিজ্ঞানী হিসাবে তিনি নিয়োগ দিয়ে তিনি মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন।
নিয়োগকৃত ছাত্রলীগ নেতাদেরকে গোপালগঞ্জ,খাগড়াছড়ি ও প্র ধান কার্যালয়ে যোগদান করিয়েছেন। আউট সোর্সিংয়ের মাধ্য মে নিয়োগের ক্ষেত্রেও তিনি দুনীতি করেছেন।তার পরিবারের সদস্যকে ল্যাব এসিসটেন্ট পদে নিয়োগ দিয়েছেন।ল্যাব এসি সটেন্ট পদে নিয়োগকৃত ব্যক্তিটি বর্তমানে গোপালগঞ্জে বিনা উপকেন্দ্রে কর্মরত রয়েছেন। বিগত ৪ বছরে বিনা’র সকল নিয়োগ এবং পদোন্নতিতে ড. মোঃ আবুল কালাম আজাদ সরাসরি হস্তপে করে তার পছন্দের লোকদেরকে সাবেক কৃষি মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক ও ড. আব্দুস শহীদের মাধ্যমে সকল সুবিধা প্রাপ্তির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
কোটা সংস্কার ও স্বৈরাচার সরকার পতনের ছাত্র-জনতার আন্দোলন যখন তুঙ্গে ঠিক ওই সময়ে গত ০৪/০৮/২০২৪ ইং তারিখে স্বৈরাচারী হাসিনার পে রাজধানীর ফার্মগেটে “হাসিনায় আস্থা” প্লেকার্ড নিয়ে তথাকথিত শান্তি সমাবেশে সদলবলে ড. মোঃ আবুল কালাম আজাদ অংশগ্রহণ করেন। এমনকি ওই দিন হাসিনার পে ব্যানার নিয়ে সম্মুখ সারিতে ফার্মগেটে তথাকথিত শান্তি মিছিলে তিনি অংশগ্রহণ করেন।
এ ছাড়াও ছাত্রলীগের ক্যাডার বিজ্ঞানীদের তিনি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মাজারে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। বিনা’র সাবেক পরিচালক (প্রশাসন ও সাপোর্ট সার্ভিস) ড. মোঃ আবুল কালাম আজাদ বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক হয়েও কতিপয় দুর্নীতিবাজদের নিয়ে অপশাসন ও দুর্নীতির মহোৎসব চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি কৌশলে বিএনপি পন্থী বিনা’য় কর্মরত মৃত্তিকা বিজ্ঞান শাখার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মাহাবুবুল আলম তরফদার টুটন, কৃষি প্রকৌশল বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. হাছানুজ্জামান, উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. রেজা মোঃ ইমন, কৃষি অর্থনীতি শাখার মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. হাবিবুর রহমান, উদ্যানতত্ত¡ বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. নুরুন নবী মজুমদার, মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের পিএসও ড. মাহাবুব খান মুন্নাকে হাত করে অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন।
উল্লেখিত বিজ্ঞানীগণ বিএনপি পন্থী হলেও সামান্য লোভের বশবর্তী হয়ে দুর্নীতিবাজ ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর ডিজি আবুল কালাম আজাদকে শেল্টার দিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে তাদের কর্মকান্ডও এখন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। নিজের সকল অতীত কর্মকান্ড মুছে ফেলার জন্য ও বর্তমান অন্তবর্তী কালীন সরকারের আস্থা অর্জন করার জন্য নিজেকে আওয়ামী বিরোধী বলে প্রচার করে যাচ্ছেন। জামাত-শিবির ও বিএনপি’র নেতা কর্মীদের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলার নানাভাবে চেষ্টা তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। স্বীয় পদে বহাল থাকার জন্য বিএনপি পন্থী বিজ্ঞানীদেরকে হাতে রাখার জন্য বিভিন্ন প্রকল্পের প্রধান হিসাবে নিয়োগ প্রাপ্তির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। চতুর ডিজি ড. মোঃ আবুল কালাম আজাদ বিনা গবেষণা শক্তিশালী করণ প্রকল্প থেকে ড. শহিদুল ইসলামকে সরিয়ে ড. মাহাবুবুল আলম তরফদার টুটনকে প্রকল্প পরিচালক পদে নিয়োগ দিয়েছেন।
সিসিটিএফ প্রকল্প থেকে ড. শাকিনা খানমকে সরিয়ে ড. হাছানু জ্জামানকে প্রকল্প পরিচালক করেছেন। ড. শাকিনার সাথে ডিজি ড. মোঃ আবুল কালাম আজাদের বিনা ধান-২৫ এর উদ্ভাবন ও গবেষণা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলে আসছে। তেল জাতীয় প্রকল্প থেকে ড. রফিকুল ইসলামকে সরিয়ে ড. রেজা মুহাম্মদ ইমনকে প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব দিয়েছেন। এ ছাড়া বিনা শক্তিশালী করণ প্রকল্পের ডিপিডি পদে ড. আশিকুর রহমানকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি ডিজি’র দায়িত্ব পাওয়া র পর বিনার গবেষণামূলক কাজকর্মকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য একটি নতুন প্রকল্পের প্রস্তাব বা অনুমোদন কোনটাই করতে পারেননি।
ডিজি পদে বহাল থাকার জন্য একের পর এক নানান কুট কৌশল অবলম্বন করছেন। দিবালোকের সত্য সাবেক কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ নেতাদের প্রভাব খাটিয়ে ড. মোঃ আবুল কালাম আজাদ নিজের যোগ্যতা না থাকা সত্তে¡ও তদবিরের জোরে ডিডি (প্রশাসন ও সাপোর্ট সার্ভিস) পদে কর্মরত থাকা অবস্থায় গ্রেড-২ কর্মকর্তা হিসেবে পদোন্নতি প্রাপ্ত হন। ড. মোঃ আবুল কালাম আজাদ সাবেক কৃষি মন্ত্রী ড. আব্দুস শহীদ এবং আওয়ামী লীগ নেতা কৃষিবিদ বাহা উদ্দিন নাসিম ও জাহাঙ্গীর কবির নানকের প্রভাব খাটিয়ে স্বৈরাচার সরকারের শাসনামলে বিনা’র পরিচালক (প্রশাসন ও সাপোর্ট সার্ভিস) এর মতা প্রয়োগ
করে বিগত ৪ বছর নানান অন্যায় অপকর্ম ও দুর্নীতি করছেন। এমনকি উল্লেখিতদের আশীর্বাদপুষ্ট এবং আস্থাভাজন হওয়ার কারণে বিনা’র ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ বাগিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছেন। এখন খোলস পাল্টে নুতন রূপ ধারণ করে মহাপরিচালকের পদে বীরদর্পে বহাল তবিয়তে আছেন এ বং কৌশলে সাবেক শেখ হাসিনা সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। ড. মোঃ আবুল কালাম আজাদ ক্ষমতার দাপটে বিগত সময়ে সুবিধাবঞ্চিত বিনা’র বিজ্ঞানী-কর্মকর্তা-কর্মচারীগ ণের অনেককে বিভিন্নভাবে অত্যাচার,হয়রানী,নিপীড়ন নির্যাতন করেছেন। তার বঞ্চনার শিকার অনেকে এখনো সুবিধাবঞ্চিত অবস্থায় কাজ করছেন। ড. মোঃ আবুল কালাম আজাদ এর বিরুদ্ধে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বিভিন্ন দপ্তরে এমনকি দুদকে ও মন্ত্রণালয়ে একাধিক অভিযোগ থাকলেও রহস্যজনক কারণে অদ্যাবধি কোন প্রকার তদন্ত হচ্ছে না।
এমনকি স্বৈরাচারের দোসর হওয়া সত্তে¡ও তাকে ডিজি পদ থেকে অপসারণ করা হচ্ছে না। এর ফলে বিনা’তে চলছে চরম হতাশা ও অস্থিরতা। জাতীয় কৃষি গবেষণামূলক এ প্রতিষ্ঠানটি এখন মুখ থুবড়ে পড়েছে। সকল গবেষণামূলক কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে এসেছে। বিজ্ঞানীদের মাঝে কর্মের প্রতি ক্রমান্ব য়ে অনিহা সৃষ্টি হচ্ছে।একাধিক পত্রিকায় ড. মোঃ আবুল কালাম আজাদ এর বিরুদ্ধে ফলাও করে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
প্রকাশিত সংবাদগুলোতে তার অন্যায় অপকর্ম ও দুঃশাসনের সার্বিক সত্যতার প্রমাণ পাওয়া যায়। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যত্থা নের মাধ্যমে দেশ নুতন করে স্বাধীন হলেও বিনা এখনো স্বৈরা চারের দোসর ড. মোঃ আবুল কালাম আজাদের হাত থেকে মুক্ত হয়নি। অবিলম্বে তাকে বিনা থেকে অপসারণ করে তদন্ত সাপেে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনেকে জোর দাবী জানিয়েছেন।
বিনা’র ডিজিকে তার অতীত কর্মকান্ডের কারণে পদত্যাগেবাধ্য না করলে বিনায় যেকোন অপ্রীতিকর ঘটনার আশংকা করা হচ্ছে।তার স্বৈরাচারী কর্মকান্ডের কারণে বিনা’র গবেষণামূলক কার্যক্রমসহ সকল কাজ দারুনভাবে ব্যাহত হচ্ছে। অনেকে বলেন বৈষম্য মুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসাবে বিনাকে রূপান্তরিত করতে হলে বর্তমান ডিজির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ ব্যাপারে বিনা’র মহাপরিচালক ড. মোঃ আবুল কালাম আজাদকে জিজ্ঞেস করলে তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বিনা’য় কর্মরত বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা, কর্মচারী কেউ তার বিরুদ্ধে ভয়ে মুখ খুলতে নারাজ। নিরপে তদন্ত করলে থলের বিড়াল বের হয়ে আসবে।