নিজাম উদ্দিন স্টাফ রিপোর্টার :
একজন রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ,ক্রীড়া সংগঠক, ব্যবসায়ী ও জনপ্রতিনিধি। নব্বই দশকে অসম্ভব জনপ্রিয় একজন জনপ্রতিনিধি। তিনি আর কেউ নন তিনি হলেন—আলহাজ্ব মিজানুর রহিম। যাঁর বাবা ছিলেন ১৯৫৪ ইং সনে নির্বাচিত সংসদ সদস্য।এবং তার ভাই মহিবুর রহিম বাবুল ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিপ্লবী সাধারণ সম্পাদক ও জননেত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত বিশেষ সহকারী।
আলহাজ্ব মিজানুর রহিমের কাছে তার রাজনৈতিক বিষয় জানতে ছাই তিনি তার বিস্তারিত বলেন আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ আমার আদর্শ, আমার বিশ্বাস, আমার ভালোবাসার প্রতি আমার প্রতিশ্রুতি ও প্রতিজ্ঞার মূল্য। আর আমার সেই আদর্শ, বিশ্বাস আর ভালোবাসার নাম ‘হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।’
ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই মহান নেতার প্রতি আমার ভাললাগার শুরুটা একেবারে ছোটবেলা থেকেই। আমার বাবা মরহুম জিল্লুর রহিম সাহেব তার সারা জীবন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। যাক মূলত আব্বার কাছেই ছোটবেলা থেকেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নানা গল্প, কথা শুনে বড় হয়েছি আমি।ছোটবেলায় আব্বার মুখে গল্প শুনে নিজের কল্পনায় তাকে অনেকবার এঁকেছি নানাভাবে। বলতে পারেন তখন থেকেই আসলে এক ধরনের গোপন ভালোবাসা, ভালোলাগা নিয়ে বড় হয়েছি তাঁর আদর্শকে সাথী করে।
আজ যারা নিজেদের বঙ্গবন্ধুর অনুসারী বলে দাবি করেন তাদের ক’জন বঙ্গবন্ধুর এই সহজ-সরল জীবন-যাপন ধারণ করেন? আজকের অবস্থাটা এমন যে প্রায় সব নেতা সাহেবদেরই ঢাকায় বাড়ি না থাকলেও নিদেনপক্ষে দামী ফ্ল্যাট আছে। আবার অনেকের বিদেশেও বাড়িঘর আছে। প্রত্যেকেই গাড়ি-বাড়িসমেত বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন।
এ যেন বঙ্গবন্ধুর জীবনদর্শন এবং রাজনীতির পুরো উল্টোপথ। আর আমার বাবা রেখে যাওয়া সম্পদ ব্যতীত কিছুই নেই, বরং দল ও আদর্শ বাস্তবায়নে বাবার রেখে যাওয়া বহু সম্পদ ব্যয় করেছি। বঙ্গবন্ধু ছাড়াও যে সমস্ত নেতা বাংলাদেশের ইতিহাসের সাথে আজীবন জড়িয়ে থাকবেন তাদের মধ্যে মজ লুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী অন্যতম। তার জীবনযাপনও ছিল খুবই অনাড়ম্বর। জীবনের বেশিরভাগ সময় তিনি
কাটিয়েছিলেন ঢাকা থেকে প্রায় একশ কিলোমিটার দূরে টাঙ্গাইলের সন্তোষে এক অতি সাদামাটা কুঁড়ে ঘরে। আমাদের জাতীয় চার নেতার কথা যদি বলি তাদেরও রাজনীতির বিনিময়ে বিশাল কোন সম্পদ অর্জনের কথা শোনা যায় না। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বলতে হয়- বঙ্গবন্ধুর সরল জীবনযাপনের রাজনীতি কিংবা ভাসানীর কুঁড়েঘরের রাজনীতি এখন বিলা সবহুল অট্টালিকার রাজনীতিতে রূপান্তরিত হয়ে ছে।আলহাজ্ব মিজানুর রহিম সাহেব আরো বলেন
এরিক ফেডেরিকের লেখা একটি বইয়ে ‘কারিশমা টিক লিডারশিপ’ নামক একটা অধ্যায় ছিল।সেই অধ্যায়ে সারা বিশ্বের যে অল্প কজন মহান নেতাদের বিষয়ে আলোচনা ছিল তার মধ্যে একটি অংশ ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে। সেই লেখাটি পড়ে আমি নিজেকে নতুন করে আবি ষ্কার করি এবং একইসাথে আমার রাজনৈতিক আদর্শ কি হবে বা হওয়া উচিত সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছে যাই।
এ ফাঁকে একটা কথা প্রাসঙ্গিক কারণে বলে রাখি, তা হলো ১৯৭৫-এর সেই বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের বিষয়টি আমার মনে গভীরভাবে রেখাপাত করেছিল,আর তা হলো বঙ্গবন্ধুর বেঁচে যাওয়া দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা পুরো পরিবার হারানোর যে অসহনীয় যন্ত্রণা-কষ্টতে প্রতিনিয়ত থাকতেন সে বিষয়।আমার মনে প্রশ্ন জাগতো এতো কষ্ট নিয়ে মানুষ বাঁচে কিভাবে? সেই অসম্ভব কষ্ট নিয়ে বেঁচে থাকা মানুষটাই যখন শোককে শক্তিতে
পরিণত করে ১৯৮১ সালে সব হুমকি, ষড়যন্ত্র মাথা য় নিয়ে দেশে ফিরে তাঁর পিতার মতো জাতির মুক্তি র প্রতীক হয়ে উঠছিলেন- তা দেখতে দেখতে আমার শ্রদ্ধা, ভালোবাসার একটা বিশাল অংশ তিনি দখল করে নিয়েছিলেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে র আদর্শ বা রাজনীতি কোনটা থেকেই আমি দূরে ছিলাম না কখনোই। দলের সকল কার্যক্রমেই আমি নিয়মিতভাবে অংশ নিয়েছি নিয়মিতভাবে সবসময়।
যেমন উদাহরণ হিসেবে বলি ১৯৯১-৯৬ তৎকালীন দুর্নীতিগ্রস্ত, ফ্যাসিস্ট বিএনপি সরকার বিরোধী আন্দোলনে আমি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছি। ২০০১ সালে বিএনপি জামায়াতের দুশাসনের সময় নেতাকর্মীদেও পাশে ছিলাম। ওয়ান ইলেভেনের সময় নেত্রী এবং দলের পক্ষে কাজ করেছি। আসলে আমি একটা বিষয় সবসময় মেনে চলার চেষ্টা করি।
তা হলো যখন যে দায়িত্ব আমার উপর অর্পিত হয়ে ছে, হবে বা হয় তা তখন পরিপূর্ণভাবে, মনোযোগের সাথে তা পূর্ণ করার চেষ্টা করি। এখন সেটার জন্য যে আমাকে হাঁকডাক দিয়ে সবাইকে জানিয়ে করতে হবে- এটা আমি মনে করি না। আমার উপর যিনি বা যে দায়িত্ব দেন তাঁদের বিশ্বাসের মর্যাদা রাখাটা আমার কর্তব্য,আমার দায়িত্ব। এখন সেটা নীরবে হোক আর সরবে,আমি তা পালন করে এসেছি সবসময়,যার দৃষ্টান্তই হলো বিগত সময়ে আমার জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন,ইনশাল্লাহ আগামী দিনগুলোতেও
ধারাবাহিকভাবে করব।আলহাজ্ব মিজানুর রহিম সাহেব আরো বলেন: দেশকে সোজা পথে চালাতে হলে রাজনীতির উল্টো পথ পরিহার করতে হবে। নইলে আমাদের প্রিয় দেশটা ভালো চলবে না। তাই রাজনীতির উল্টোপথ সোজা হোক সেটিই কাম্য।
১৯৯৭ সালে জন রায়ে মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি জামাত জোট সরকারের তান্ডবের কথাতো সবাই জানেন। তার পর দীর্ঘদিন সময় উনি রাজনৈতিক কাজে মননিবেস করেন। ২০০৪ সালে লক্ষ্মীপুর নচির আহম্মদ মিলনায়তনে একটি জমকালো সম্মেলন আয়োজনের মাধ্যমে তিনি লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন।
দীর্ঘ চার বৎসর বিএনপি জামাতের প্রতিকুল পরিস্থিতির মাধ্যমে দক্ষতার সাথে সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০০৮ সালে আবার দ্বিতীয় মেয়াদে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসে। কিন্তু নির্লিপ্ত মানুষটি ইচ্ছা করলে দলের প্রভাব খাটিয়ে নিজের জন্য অনেক কিছু করতে পারতেন। কারন তখনো তিনি ৬ বছর ক্ষমতার রজনিতী করেছেন, তিনি টেন্ডর বানিজ্য নমিনিশন বানিজ্য কোনটাই করেন নাই।